• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের মৃত ফুটবলকে জাগিয়ে তুলছেন জামাল ভুঁইয়া


ক্রীড়া প্রতিবেদক অক্টোবর ১৪, ২০১৯, ১২:৪৩ পিএম
বাংলাদেশের মৃত ফুটবলকে জাগিয়ে তুলছেন জামাল ভুঁইয়া

ঢাকা: বাংলাদেশের ফুটবল হারাতে বসেছিল তার ঐতিহ্য। শুধু তাই নয়, একের পর এক হারে ফুটবল নিয়ে মানুষের মধ্যে হতাশ ছিল প্রচুর। যে ফুটবলে এক সময় প্রাণ ছিল সেই ফুটবল হয়ে গেল মৃতপ্রায়। এই ফুটবলকেই যেন জাগিয়ে তুলেছে ডেনমার্ক প্রবাসী এক বাঙালী। নাম তাঁর জামাল ভুঁইয়া। বাংলায় ঠিকভাবে কথা বলতে পারেন না। সবকিছু চালিযে যান ইংরেজিতে।

ফুটবলের টানে, দেশের টানে বাংলাদেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন জামাল। মৃতপ্রায় ফুটবলকে জাগিয়ে তুলে এদেশের মানুষকে তিনি নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। কাতারের বিপক্ষে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েছে তার দল। একই সঙ্গে জামালও তার সেরা নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছেন। কাতার বর্তমান এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন এবং ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক।

জামালের গল্পটা আমরা কজনই বা জানি। ডেনমার্কেই অবশ্য থেমে যেতে পারতো বাংলাদেশ অধিনায়কের জীবন। ২০০৭ সালের কোনও এক শুক্রবার স্কুল শেষে বন্ধুর সঙ্গে গিয়েছিলেন ফুটবল খেলতে। হঠাৎই দুই ব্যক্তির তর্কাতর্কির মাঝে শুরু হয় গোলাগুলি। চারটি গুলি বিদ্ধ করে জামালের শরীরও। সেখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো জামালের জীবন, সৃষ্টিকর্তা তা হতে দেননি। কারণ তাকে দিয়েই যে বাংলাদেশের ফুটবল বদলের চিত্রনাট্য লিখে রেখেছিলেন তিনি।

২০১১ সালে প্রথমবার আসেন বাংলাদেশে ট্রায়াল দিতে, হয়েছিলেন ব্যর্থ। অনেকেই ভেবেছিলেন সেখানেই শেষ জামালের বাংলাদেশ অধ্যায়। কিন্তু যেই লাল-সবুজ জার্সির জন্য এতো আকাঙ্খা, সেই স্বপ্ন কি শেষ হয়ে যাবে এতো দ্রুত? নিয়তি নিষ্ঠুর হয়নি। জামাল আবার ফিরে এসেছেন, পরীক্ষা দিয়েছেন, জাতীয় দলে নামও লিখিয়েছেন। এরপর পেয়েছেন প্রশংসা, কুড়িয়েছেন সাফল্যও।

২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করলেও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন জামাল ভূঁইয়া। এরপর দেখেছেন মুদ্রার উল্টো পিঠও। ফর্ম আর চোটের সঙ্গে লড়াইয়ের পর পার করেছেন কঠিন সময়।

২০১৬ সালে দলের দায়িত্ব নেন বেলজিয়ান টম সেইন্টফিট। তার দলে ছিলেন উপেক্ষিত। ওই বছর ভুটানের সঙ্গে ৩-১ গোলে হারের ট্র্যাজেডিতে ১৭ মাসের নির্বাসনে যায় বাংলাদেশের ফুটবল। সেই ম্যাচের প্রাথমিক দলেও ছিল না জামালের নাম। এরপর অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড উঠে জামালের হাতে। ফিনিক্স পাখির মতো জাগিয়ে তোলেন দেশের ফুটবল। ২০১৮ সালে এশিয়ান কাপে আগামী বিশ্বকাপের স্বাগতিক কাতারকে হারিয়ে নকআউট পর্বে পৌঁছায় বাংলাদেশ। ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে এই জামালের পাঁ থেকেই।

ভুটান ট্র্যাজেডির পর বাংলাদেশের খেলা আট ম্যাচের চারটিতে জিতেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এক ড্রয়ের সঙ্গে আছে তিন হার। যার একটি আবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কাতারের বিপক্ষে ০-২ গোলে হার। তারপরও এই ম্যাচটিকে দেখা হচ্ছে অন্যতম সেরা ম্যাচ হিসেবে।

কোচ জেমি ডে তো বলেই দিয়েছেন, তার অধীনে এটাই বাংলাদেশের সেরা ম্যাচ। বাংলাদেশের এই ফুটবল উত্থানের পেছনে ভূমিকা থাকতে পারে অনেকের, তবে মূল চালিকাশক্তিটা যে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া তাতে সন্দেহ নেই । সামনে জামালদের রয়েছে ভারত পরীক্ষা। যুবভারতীতে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দেবে বাংলাদেশ এমন আশা করেই অপেক্ষা করছেন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!