• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির পরিকল্পনা ভারতের


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুলাই ১০, ২০২০, ০৮:২৪ পিএম
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির পরিকল্পনা ভারতের

ঢাকা : বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য এবং ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে বহুমাত্রিক কৌশল গ্রহণ করছে ভারত। বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশ সুবিধা দিয়ে বেইজিং যখন ঢাকাকে কাছে টানার প্রচেষ্টা শুরু করেছে তখন ভারত বহুস্তরের এই কৌশল গ্রহণ করতে যাচ্ছে।

শুক্রবার (১০ জুলাই) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি বলছে, তারা জানতে পেরেছে- চীনের বাণিজ্য সুবিধার কারণে বাংলাদেশ দ্বৈত ঘাটতি (আমদানি-রফতানি) এবং ঋণের ফাঁদে পড়তে পারে। এ কারণে ভারত স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন রাজ্য এবং অন্যান্য অঞ্চলে বাংলাদেশি পণ্যের অবাধ প্রবেশে বেশ কিছু সংযোগকারী উদ্যোগ সক্রিয় করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক সংযোগ নিয়ে কাজ করেন, এমন বিশেষজ্ঞরা ইকোনমিক টাইমসকে বলছেন, সমুদ্রবন্দর, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন, রেল ও মহাসড়কে বড় ধরনের সংযোগকারী উদ্যোগ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা ভারতের পাশাপাশি ভুটান ও নেপালের বাজারের সঙ্গেও বাংলাদেশকে যুক্ত করতে সক্ষম হবে।

১৯৬৫ সালের আগে ভারত-বাংলাদেশের সঙ্গে রেলের পাশাপাশি অন্যান্য যেসব সংযোগ ছিল সেসব আবারও স্থাপন করার জন্য উভয় দেশই বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

এদিকে বিভিন্ন সূত্রের তথ্য মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরোধিতা সত্ত্বেও গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ব্যবহার করে আবারও পণ্য পরিবহন চালু করার যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা ভারতে বাংলাদেশি রফতানি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

ইকোনমিক টাইমস বলছে, গত বুধবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিশেষ সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে একটি চিঠি লিখেছেন।

বাণিজ্য ছাড় এবং ঋণের ক্ষেত্রে চীনের চেয়ে ভারতীয় শর্তাবলি বেশি সুবিধাজনক উল্লেখ করে ভারতীয় একটি সূত্র বলছে, চীনের সিদ্ধান্ত নেয়ার এক দশক আগেই বাংলাদেশের বেশ কিছু পণ্যের শুল্ক-মুক্ত প্রবেশের সুবিধা দিয়েছে ভারত; যা নয়াদিল্লির সঙ্গে ঢাকার বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে সহায়তা করেছে।

সূত্রগুলোর তথ্য মতে, ঢাকাকে বাণিজ্য ছাড় দেয়ার বিষয়টি বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রেখেছিল বেইজিং। এখন এই উদ্যোগটি ঢাকাকে ঋণের ফাঁদে ফেলতে পারে। সুবিধাজনক প্রত্যাবর্তনের জন্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারগুলোতে বাংলাদেশের প্রবেশ করা উচিত। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার বাংলাদেশ।

গত দশকে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশে ভারতের রফতানির পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার এবং একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ০৪ বিলিয়ন। অন্যদিকে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বিশালভাবে বেইজিংয়ের স্বার্থের পক্ষেই ছিল।

ভারতীয় এই দৈনিক বলেছে, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশে ১৩ হাজার ৩৬৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে চীন। কিন্তু বাংলাদেশ চীনে রফতানি করেছে ৫৬৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। বাংলাদেশের মোট আমদানির এক চতুর্থাংশ আসে চীন থেকে এবং গত দুই দশকে চীন-বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ১৬ গুণ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক্ষেত্রে ভারতের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী একটি পদ্ধতি রয়েছে। গত ৮ বছরে সড়ক, রেলওয়ে, পরিবহন ও বন্দর-সহ বিভিন্ন খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশকে ৮ বিলিয়ন ডলারের লাইনস অফ ক্রেডিটস (এলওসি) দিয়েছে ভারত। ভারতের নমনীয় এলওসির সবচেয়ে বড় গ্রহীতা বাংলাদেশ।

ইকোনমিক টাইমস বলছে, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ ড্রেজিং এবং ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন নির্মাণসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামোগত প্রকল্পে সহায়তা করে আসছে ভারত।

এছাড়াও ঢাকাকে ভারতের উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র উন্নয়ন প্রকল্পগুলো (এসডিপিএস) সক্রিয় ভিত্তি তৈরি করছে।

বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল, একাডেমিক ভবন, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও এতিমখানা নির্মাণসহ অন্তত ৫৫টি এসডিপিএসে তহবিল যোগান এবং অন্য ২৬টি এসডিপিএস বাস্তবায়ন করছে ভারত।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!