• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাতাসে কল নড়া শুরু হয়েছে : ফখরুল


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯, ১২:০৮ এএম
বাতাসে কল নড়া শুরু হয়েছে : ফখরুল

ঢাকা : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। আজকে আওয়ামী লীগের যে দুঃশাসন-দুর্নীতি-নির্যাতন-নিপীড়ন সেটি এখন অন্য কাউকে বলতে হচ্ছে না, নিজে নিজেই বাতাসে কল নড়া শুরু হয়েছে।

ফখরুল বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সারা দেশে আওয়ামী লীগের লোকেরা, যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতারা নিজেরা নিজেদের দুর্নীতির প্রমাণ করছেন। নিজেরাই প্রমাণ করেছে তারা বাংলাদেশের সম্পদ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সকাল ১১টা থেকে এক ঘণ্টার এই মানববন্ধন হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে ছাত্রলীগের নেতা যারা দাবি করে তারা মানসপুত্র, নেত্রীর সবচেয়ে প্রিয় সন্তান, তারাই ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে। পত্রিকায় এসেছে- ঢাকা শহরে ৬০টি ক্যাসিনো চালাচ্ছে যুবলীগ-আওয়ামী লীগের নেতারা। নিজেরা ধরা পড়ে গেছে এখন অন্য কারো দোষ ধরতে চায়।

তিনি বলেন, এখন প্রমাণিত হয়ে গেছে- এদেশ দুর্নীতিতে পূর্ণ হয়েছে। সরকার সেখানে মদত দিচ্ছে, আওয়ামী লীগ সেখানে মদত দিচ্ছে। আজকে প্রমাণিত হয়ে গেছে এই সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ। আজকে প্রমাণিত হয়ে গেছে গত ১২ বছরে এই দেশকে লুটপাট করে একটা শ্মশানে পরিণত করেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের কথোপকথের একটা ভিডিও বেরিয়ে গেল- যা ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। অর্থাৎ কী অবস্থায় দেশকে নিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ? বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরকে আমরা সবসময় সম্মান করি, মাথার উপরে রাখি- তিনি (জাবি ভিসি) ঘুষ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়লেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাদের ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এসেছে এবং আন্দোলন করছে যে, ভর্তি হচ্ছে বিনা পরীক্ষায় অর্থাৎ সেখানেও দুর্নীতি চলছে।

তিনি বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সবাই রাস্তায় নেমে গেছে তারাও সেখানে আন্দোলন করছে। গোপালগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা-শিক্ষার্থীরা আন্দোলন নেমে পড়েছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলর অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত। এদেশের মানুষ তাহলে যাবে কোথায়? ভাইস চ্যান্সেলররা যাদেরকে সবাই সম্মান করে তারা যদি এই পর্যায়ে যায়। তাদেরকে কারা নিয়োগ দিয়েছে? এই সরকার। বেছে বেছে সবচাইতে খারাপ ধরনের লোকগুলোকে নিয়ে তারা (সরকার) ভাইস চ্যান্সেলর পদে নিয়োগ দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার কোন দিক দিয়ে সফল? কথায় কথায় বলে আমরা উন্নয়ন করছি, সিঙ্গাপুর বানিয়ে দিলাম। বাংলাদেশে এখন সবচাইতে বেশি বেকার-প্রায় ৪ কোটি শিক্ষিত বেকার। বাংলাদেশে এখন সাধারণ মানুষ কৃষক যারা, তারা ধানের দাম পায় না। ৫‘শ টাকায় ধান বিক্রি হয় না, ধান পুড়িয়ে দেন। দুধ বিক্রি হয় না, দুধ ফেলে দেন। আজকে পাটের দাম পায় না। এক অসহায়-অনিশ্চিয়তা, নিদারুন একটা পরিবেশে এদেশের মানুষ বাস করছে। চতুর্দিকে একটা অশান্তি, চতুর্দিকে অনিশ্চয়তা, চতুর্দিকে অস্থিতিশীলতা, চতুর্দিকে ভয়-ত্রাস।

খালেদা জিয়া শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, উনাকে ১৭ মাস বন্দি করে রেখেছে। অসুস্থ যিনি এখন হাঁটতে পারেন না, এখন সাপোর্ট দিয়ে তাকে উঠতে হয়, চলতে হয়। তার সুচিকিৎসা হচ্ছে না হাসপাতালে যেখানে নিয়ে গেছে। বার বার আমরা বলেছি, তাকে সুচিকিৎসার জন্য মুক্তি করে দিতে হবে। তাকে তার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে দয়া ভিক্ষা করছি না। আমরা তার যেটা আইনগতভাবে ন্যায্য প্রাপ্য, সেই জামিন চাচ্ছি আদালতের কাছে। আদালতে বাধা দিচ্ছে সরকার যাতে দেশনেত্রী রেরুতে না পারে। এই অন্যায়, এই অবিচার এটা জনগণ বরদাশত করতে না। জনগণ আজকে জেগে উঠতে শুরু করেছে। আমাদের পরিষ্কার কথা- দেশনেত্রী কোনো দলের নেতা নন, তিনি এদেশের ১৬ কোটি গণতান্ত্রিক মানুষের নেতা। তিনিই গণতন্ত্র মুক্ত করেছেন। এখন তাকে মুক্ত করার জন্য প্রয়োজন হলে এই দেশের মানুষ আবার সম্মিলিতভাবে কারাগার থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসবে।

সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বলতে চাই- নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের দাবি-দাওয়ার কথাগুলো বলছি। অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। অবিলম্বে এই সংসদ বাতিল করুন এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান করুন। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে বাদ দিয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে এসে তাদেরকে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দিন। অন্যথায় এদেশের মানুষ কোনো দিন আপনাদের ক্ষমা করবে না এবং এদেশের মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পরিচালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, যুবদলের মোরতাজুল করীম বাদরু, নুরুল ইসলাম নয়ন, মামুন হাসান, এসএম জাহাঙ্গীর, রফিকুল ইসলাম মজনু, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গোলাম মাওলা শাহিন, রেজাউল করীম পল প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!