• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাবাকে হারিয়ে শোকে পাথর শচীন বিশ্বকাপে ফিরলেন মায়ের কথায়


রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ মে ২৩, ২০১৯, ০৮:২১ পিএম
বাবাকে হারিয়ে শোকে পাথর শচীন বিশ্বকাপে ফিরলেন মায়ের কথায়

ছবি সংগৃহীত

ঢাকা: তিনি না থাকলে ভারতের শক্তি কমে অর্ধেক হয়ে যায়। নিজেদের সামর্থ্য নিয়ে সংশয় জাগে সতীর্থদের মনে। দলে তিনি না থাকলে গোটা ভারতবর্ষে হাহাকার পড়ে যায়! তিনি শচিন রমেশ টেন্ডুলকার। যার উপস্থিতি গোটা ভারতীয় দলকে চনমনে করে তোলে। টেন্ডুলকার গোটা দলেরই মধ্যেমণি। তাঁকে ঘিরেই আবর্তিত হতো যতো রণকৌশল। একসময় ভারতীয় দলটাই ছিল টেন্ডুলকার নির্ভর। দিনের পর দিন সানন্দে ১০০ কোটি মানুষের প্রত্যাশার ভার কাঁধে করে বয়ে বেরিয়েছেন লিটল মাষ্টার।

এমনি এক সময় চলে এল ১৯৯৯-এর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ। ইংলিশ কন্ডিশনে মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন নিয়ে গেলেন তরুণ এক ভারতীয় দলকে। যেখানে সিনিয়র বলতে আজহার নিজে, টেন্ডুলকার ও জাভাগাল শ্রীনাথ। সৌরভ-দ্রাবিড়-অজয় জাদেজা-আগারকারদের ক্রিকেট ক্যারিয়ার তখনও খুব বেশি দিন হয়নি।

আর ভারতের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের শুরুটাও হলো বাজে। উপরন্তু যার ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল দল সেই টেন্ডুলকার বিশ্বকাপ ময়দানেই পেলেন দুঃসংবাদ। বাবা রমেশ টেন্ডুলকার চিরকালের জন্য যে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। বাবার মৃত্যুতে মুষড়ে পড়া টেন্ডুলকার দেশে ফিরলেন। ওদিকে ভারতের অবস্থা তথৈবচ। তখন ছিল প্রথম রাউন্ডের বাধা পেরিয়ে সুপার সিক্সে ওঠার নিয়ম। ভারত বুঝি সেখানেই পৌঁছাতে পারে না! একদিকে টেন্ডুলকারের বাবার মৃত্যু অন্যদিকে ভারতীয় দলের হতশ্রী পারফরম্যান্স।

অনেকেই ধারণা করেছিলেন, সবচেয়ে কাছের মানুষ চলে যাওয়ায় টেন্ডুলকার বুঝি আর বিশ্বকাপে ফিরবেন না! আসলেও তাই টেন্ডুলকার বিশ্বকাপে ফিরতে চাননি। বাবাকে হারানোর পর মনের অবস্থা তো খেলার মতো অবস্থায় ছিল না! কিন্তু টেন্ডুলকার গোটা বিশ্বকে দেখালেন দেশপ্রেম। বাবার মৃত্যু শোকের মধ্যেই তিনি আবার ফিরে গেলেন ইংল্যান্ডে। এর পেছনে ছিলেন টেন্ডুলকারের মা! বলতে গেলে তিনিই অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে ছেলেকে পাঠিয়েছেন আবার বিশ্বকাপ খেলতে।

বাবার মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই টেন্ডুলকার বিষ্ট্রলে কেনিয়ার বিপক্ষে নেমে পড়লেন ব্যাট হাতে। শোককে শক্তিতে পরিণত করে ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’ যা করলেন তা কখনও ভোলার নয়। ১০১ বলে ১৬ চার আর তিন ছক্কায় খেললেন অপরাজিত ১৪০ রানের ইনিংস। সেঞ্চুরি পেলেন দ্রাবিড়ও (১০৪*)। ভারত স্কোরবোর্ডে ৩২৯/২ রান তুলে ম্যাচটি জিতে নেয় ৯৪ রানে।

অনেকেই হয়তো বলবেন টেন্ডুলকারের কাছে সেঞ্চুরি করা তো ডালভাত! সেখানে কেনিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি কী এমন মহাতœ্য? একবার ভাবুন, কদিন আগেই টেন্ডুলকার তার বাবাকে হারিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আসলে ব্যাটিং করা কেন, কোন কাজই তো ঠিকঠাক হওয়ার কথা নয়। টেন্ডুলকার পেরেছেন তার নাম টেন্ডুলকার বলে! আর তাকে সমর্থন যুগিয়েছে পরিবার। এমন পরিবার ও মা’কে স্যালুট করার কথা গোটা ভারতবর্ষের।

 সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!