• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাড়ির ছাদে বাহারি ফুল


ইলিয়াস আরাফাত, রাজশাহী জানুয়ারি ২২, ২০১৭, ১১:০০ এএম
বাড়ির ছাদে বাহারি ফুল

শহুরে জীবনে সবুজের সজীব ছোঁয়ার মধ্যে বেঁচে থাকতে রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকার শামীম আরার বাড়ির ছাদে বাগান শুরু করেছিলেন ২০১১ সালের শেষের দিকে। মাত্র কয়েক বছরে শামীম আরাই হয়ে উঠেছেন ছাদে বাগান করার রোল মডেল। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পেয়েছেন দেশ সেরার পুরস্কার।

শীতের মৌসুমের শামীম আরা’র বাগানে ফুটেছে বাহারি ফুল। সেই সঙ্গে শীতের সবজি ও ফলে ভরে উঠেছে পুরো ছাদ।

ফলজ, বনজ, ভেজষ বা ঔষধি, শোভাবর্ধনকারী, দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় গাছ, বিরল জাতীয় গাছ, সবজি- কী নেই তার বাগানে। ভালোবাসার ছোঁয়ায় তিনি গড়ে তুলেছেন বাগানটি। আর গাছগুলো যেন নিজের সন্তানের মতো। কোন গাছের কী প্রয়োজন তা ভালোভাবেই তার জানা। সেভাবেই এসবের যত্ন নেন তিনি। বাগানে বিকাল থেকেই শুরু হয় নানান পাখির আনাগোনা। সবুজ ঘেরা প্রকৃতিতে পাখিদের মিষ্টি নানান শব্দ যেন মন ভরিয়ে দেয়।

তবে, শীত ও বসন্তের সময় তার বাগানটি সৌন্দর্য্যেরে সর্বোচ্চ সীমায় অবস্থান করে। নানান বাহারি ফুল আর ফলে ভরে উঠেছে ছাদ।

শামীম আরার স্বামী সেহাবউদ্দীন একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। শামীম আরার এসব কাজে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করে থাকেন তিনি। তাদের ছাদের বাগানে ফলজ গাছের মধ্যে সংগ্রহে আছে, জিনিয়া পাম, থাইল্যান্ডের জাম, লটকন, শসা জামরুল, এলাচি লেবু, কলা, আম, পেঁপে, গৌড়মতি আম, সফেদা, মরিচ, কাগজি লেবু, মিষ্টি জলপাই, বাতাবি লেবু, মিষ্টি চেরি ফল, নাশপাতি, আতা, বিভিন্ন ধরনের পেয়ারা, কমলা, পাকিস্তানি মালটা, কামরাঙ্গা, কতবেল, ড্রাগন, মিষ্টি তেঁতুল, থাইড্রপ আম, তেঁতুল, কালো পাতার ব্লাক বক্স আম, কলা, থাই জাম, দেশি জাম, করমচা, বিদেশি বেল, বেদানা, চেরি ফল, সফেদা, সাজনে গাছ, থাইল্যান্ডের বাতাবি লেবু, সুদানের আতা, আপেল, অভিসারিকা আম, সুইট লেমন, থাই কাঁঠাল, বাউকুল, অরুনা (আম)।

মসলা জাতীয় গাছের মধ্যে আছে অল স্পাইস, তেজপাতা, দারুচিনি, গোলাপজামন, ধনে পাতাসহ আরো অনেক কিছু।

শোভাবর্ধনকারী গাছগুলোর মধ্যে আছে, নীল অপরাজিতাসহ বিভিন্ন রঙের অপরাজিতা, ফায়ার বল, বিভিন্ন ধরনের জবা, অ্যাডেনিয়াম, এলামুন্ডা, ৩০ থেকে ৩৫ প্রজাতির গোলাপ, লাইলী-মজনু, বিভিন্ন ধরনের পাতাবাহার, সাইকাস, অ্যারোমেটিক জুঁই, টগর, কামিনী, মধুমালতি, মাধবিলতা, বিভিন্ন ধরনের অর্কিড, ক্যাকটাস, বেগুনিয়াসহ প্রায় ৭০ থেকে ৮০ প্রজাতির ফুল। বর্তমানে তাদের বাগানের গাছগুলোতে মালটা, ড্রাগন, করমচা, পেয়ারা, বেদেনাসহ বেশ কিছু ফল ধরে আছে। ফুটে আছে অনেক ফুল। শীতকালে এ পুরো ছাদই যেন ফুলময় হয়ে উঠে।

শামীম আরা জানান, শৈশব থেকেই গাছের প্রতি তার চরম আগ্রহ ছিল। সেই থেকে শখ। বিয়ের পর থেকেই বাড়ির ছাদে গাছ রোপণ করেন তিনি। নিজের প্রচেষ্টা আর স্বামীর অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় বাড়ির ছাদে বাগানের সূচনা।

শুরুর দিকে তারা বাগানে সবজিও চাষও করতেন। পুঁই শাক, বিভিন্ন ধরনের সবুজ ও লাল শাক, মিষ্টি কুমড়া, শিম, টমেটো, ফুলকপি ও বাঁধাকপি, বেগুনও চাষ করা হতো ছাদে। বাড়ির সবজির চাহিদা ছাদের সবজি বাগান থেকেই পূরণ হয়ে যেত। তবে, বর্তমান সময়ে ছাদে সবজি চাষ কমিয়ে দিয়েছেন তারা। অন্য গাছগুলোর অসুবিধা হওয়ার কারণে তারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, ইট-পাথরের নগরে সবুজের ছোঁয়া একেবারে নেই বললেই চলে। অনেক খুঁজ করেও বাড়ি কিংবা এলাকার আশেপাশে কোনো গাছ পাওয়া যায় না আজকাল। অথচ এই যান্ত্রিক শহরে সবুজ প্রকৃতি খুবই জরুরি। এ অনুভবটা তিনি মনে করতেন।

শামীম আরার স্বামী সেহাব উদ্দীন জানান, ছাদে বাগান করার ক্ষেত্রে মাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে পদ্মা নদীর পলি মাটি সংগ্রহ করে সেই মাটির সঙ্গে গোবরসার, মিশ্র সার যোগ করে এরপরে সেগুলোতে গাছ লাগানো হয়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!