• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপিকে ছাড়াই নতুন মন্ত্রিসভা অক্টোবরে


বিশেষ প্রতিনিধি আগস্ট ২৮, ২০১৮, ০৬:৪৮ পিএম
বিএনপিকে ছাড়াই নতুন মন্ত্রিসভা অক্টোবরে

ঢাকা : দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচনকালিন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের দিকে এগুচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে মন্ত্রিসভার আকার ছোট হবে। সে লক্ষ্যে ইতিমধ্যে প্রস্তুতিও নিয়েছে ক্ষমতাসীনেরা।

নির্বাচনকালিন সরকারের রূপরেখাও চূড়ান্ত করে রেখেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। আওয়ামী লীগের এখন একটাই লক্ষ্য, সেটি হচ্ছে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। তাই বিএনপির সঙ্গে সংলাপ-সমঝোতা পথও খোলা নেই।

অক্টোবরে মন্ত্রিসভার আকার ছোট হচ্ছে, থাকছে না বিএনপি * খালেদা জিয়া কারাগারে থাকবেন কী থাকবেন না, তা আদালতের সিদ্ধান্ত * বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সুযোগ ও সময় নেই * নির্বাচনে সেনাবাহিনী থাকবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি অংশ না নিলেও নির্বাচন বন্ধ থাকবে না, নির্বাচনের ট্রেন চলতে থাকবে। ওই নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী থাকবে।

ওবায়দুল কাদের আরও জানান, আগামী অক্টোবরে মন্ত্রিসভার আকার ছোট করা হবে। নির্বাচনকালীন ওই মন্ত্রিসভায় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলের বাইরে কারও থাকার সুযোগ নেই। আগামী নির্বাচনে জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য কোনো এমপিকে মনোনয়ন দেয়া হবে না।

৩১ অক্টোবর থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হচ্ছে। অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের শুরুতে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও ডিসেম্বরের শেষদিকে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরুর আগে বর্তমান মন্ত্রিসভার আকার ছোট করার কথা জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, আর বিএনপি নির্বাচনে এলে জাতীয় পার্টি আমাদের জোটে থাকবে। সময়ে সময়ে রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ হতে পারে।

খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচেন যাবেন কি না- জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, চেয়ারপারসনকে ছাড়া নির্বাচনে যাব, সেরকম সিদ্ধান্ত আমরা এখনও নিইনি। নির্বাচনে আমরা তখনই যাব, যখন একটি পরিবেশ তৈরি হবে, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ)’ হবে। নির্বাচনে যাওয়ার পূর্বশর্তই হচ্ছে- চেয়ারপারসনের মুক্তি।

ফখরুল বলেন, ২০১৪’র জানুয়ারিতে প্রহসন ও তামাশার নির্বাচন করে তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গণবিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তারা আবারও একতরফা নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগ প্রতিটি স্থানীয় নির্বাচনে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বিরোধী দলকে দমনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে, এ সরকারের অধীনে কোনো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

বিএনপির সঙ্গে সংলাপ বা সমঝোতার সুযোগ নেই- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে ফখরুল বলেন, তিনি (ওবায়দুল কাদের) কী বললেন, না বললেন, তাতে সবসময় বাংলাদেশের রাজনীতি নির্ভর করে না। তিনি ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক, যারা এরই মধ্যে জনগণের ঘৃণার পাত্র হয়েছেন। তাদের শাসনামলে দেশের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। তাদের হাত থেকে জনগণ নিস্তার চায়, মুক্তি চায়।

নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে নেয়া হবে না- সরকারের মন্ত্রীদের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা তো নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকার চাচ্ছি। যারা নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে।

বিএনপি নির্বাচনের জন্য কতটা প্রস্তুত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সবসময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছি। বিএনপি একটি নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচন করার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকে। ২০০৮ সালে মাত্র ১২ দিনের নোটিশে আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।

ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকদের আবারও ‘ওয়ান ইলেভেনের’ আশঙ্কা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেন’ তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগ। তারা এটার ফল ভোগ করছে। এখন আবার কেন তারা আরেকটি ‘ওয়ান-ইলেভেনের’ আশঙ্কা করছেন, সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন।

জামায়াত ছেড়ে দিতে কোনো চাপ আছে কি না- জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, আমাদের কাছে এমন কোনো চাপ নেই। তাছাড়া জামায়াতের সঙ্গে আমাদের আদর্শগত কোনো জোট হয়নি। তারা আলাদা দল, আমরা আলাদা দল। এটা নির্বাচন ও আন্দোলনের জোট। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগও একসময় জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করেছে। আমাদের জামায়াত ছেড়ে দিতে বলছে, তাহলে সরকার কেন জামায়াত নিষিদ্ধ করছে না।

ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে- এমন বার্তা নিয়েই ১ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে- এটাই এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের মূল বার্তা। দলীয় নেতাকর্মী ছাড়া বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে আমরা বিভাগীয় শহরে সফরে যাওয়ারও চিন্তাভাবনা করছি।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!