• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
বি চৌধুরীর চার ধাপের ফর্মুলা

বিএনপিকে ১৫০ আসন দিতে চান বি. চৌধুরী


বিশেষ প্রতিনিধি অক্টোবর ৯, ২০১৮, ০৯:০০ পিএম
বিএনপিকে ১৫০ আসন দিতে চান বি. চৌধুরী

ঢাকা : একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিরোধী জোটের জন্য ৩০০ আসন বণ্টনের রূপরেখা দিয়েছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। এর মধ্যে বিএনপিকে ১৫০ এবং যুক্তফ্রন্ট ও অন্যান্য দলকে ১২০ আসন দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন তিনি। এ ছাড়া সুশীল সমাজকে ১০ আসন এবং জামায়াত ছাড়া বিএনপি জোটের অন্যান্য শরিকদের ২০ আসন দিতে চান সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।

সূত্র মতে, বি চৌধুরীর ফর্মুলায় বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বিএনপির পছন্দ অনুযায়ী হবে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি ও ন্যায়পাল পদে মনোনয়ন হবে যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্যপ্রক্রিয়ার পছন্দ অনুযায়ী।

সম্প্রতি বি. চৌধুরীর এই আসন বণ্টনের লিখিত প্রস্তাব বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘এ ধরনের প্রস্তাব যুক্তিযুক্ত নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি ওই প্রস্তাবে গুরুত্ব দিতে চাইছে না। বরং এ ধরনের প্রস্তাবকে তারা বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করছে। গতকাল রাতে জেএসডির সভাপতি আ স ম রবের বাসায় অবশ্য ওই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ঐক্যে আগ্রহী দলগুলোর দাবিদাওয়া নিয়ে অবশ্যই আলোচনা হবে। তিনি বলেন, আলোচনা চলছে, আলোচনা চলবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘ক্ষমতার ভারসাম্যের বিষয়টি আমরাও চাই। তবে সেটি আলোচনার মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসবে।’

ফর্মুলার প্রথম ধাপ : চার ধাপে বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে ফর্মুলায়। প্রথম ধাপের প্রস্তাবে যুক্তফ্রন্টভুক্ত তিন দল (বিকল্পধারা, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য), গণফোরামের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া এবং বিএনপিসহ ১৮ দলকে জাতীয় ঐক্যে সম্পৃক্ত করার কথা বলা হয়েছে। জোটের নাম হবে জাতীয় যুক্তফ্রন্ট।

কৌশলে বিএনপির প্রধান শরিক জামায়াতকে বাদ দিয়ে বলা হয়েছে, স্বাধীনতাবিরোধীদের বাদ দিয়ে জোট করা হোক। প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে, জোট ঘোষিত হওয়া মাত্র ২০ দলীয় জোটের কর্মকাণ্ড স্থগিত ও নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে এবং জাতীয় যুক্তফ্রন্টের নামে কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে দলগুলো নিজ নিজ উদ্যোগে নিজস্ব কর্মসূচি পালন করতে পারবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।

দ্বিতীয় ধাপ : ‘সংসদে ভারসাম্য=ক্ষমতার ভারসাম্য= স্বেচ্ছাচারমুক্ত বাংলাদেশ’ এভাবে উল্লেখ করে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই নীতিতে জাতীয় যুক্তফ্রন্ট সংসদে একটি ভারসাম্য আনতে চেষ্টা করবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে লড়াই করবে। এই ভাগে বিএনপি ১৫০, ১৮ দল ২০টি আসন, যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্যপ্রক্রিয়া ও অন্যান্য ১২০ আসন এবং সুধীসমাজকে ১০টি আসন ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেন বি চৌধুরী।

তবে সুধীসমাজের জন্য ছেড়ে দেওয়া ১০টি আসনের মধ্যে পাঁচটি বিএনপির পছন্দে এবং পাঁচটি যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্যপ্রক্রিয়া পছন্দ অনুযায়ী মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয় প্রস্তাবে। বি চৌধুরীর প্রস্তাব অনুযায়ী সুধীসমাজের পাঁচজনের মনোনয়নসহ বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটকে ১৭৫ আসনে মনোনয়নের এখতিয়ারের কথা বলা হয়।

তৃতীয় ধাপ : প্রস্তাবে বলা হয়, বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া প্রত্যেকেই নিজ নিজ দল বা জোটের নির্বাচনী ইশতেহার প্রস্তুত করবে পরে। এগুলো সমন্বয় করে একটি ইশতেহার ঘোষণা করতে হবে। আর চূড়ান্ত ইশতেহারের সঙ্গে কয়েকটি আইনের খসড়া প্রস্তাবও সংযুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়। যেমন প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যের জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনী, অ্যার্টনি জেনারেল ও দুর্নীতি দমন কমিশনের গঠন নিয়োগ কিভাবে হবে ইত্যাদি।

চতুর্থ ধাপ : এ ভাগের প্রস্তাবে সরকারের ভারসাম্য আনার জন্য রাষ্ট্রপতি ও ন্যায়পাল—এ দুটি পদে নিয়োগের জন্য নাম যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্যপ্রক্রিয়া প্রস্তাব করবে বলে বি চৌধুরী উল্লেখ করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী বিএনপির প্রস্তাব অনুযায়ী হবে। এ ছাড়া তিনি বিরোধী দলকে ডেপুটি স্পিকার পদ ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেন।

এর আগে গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও তাঁর ছেলে মাহী বি চৌধুরী দেড় শ আসনে মনোনয়ন চেয়ে আলোচিত হন। বিএনপি ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয় বলে জানা যায়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!