• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
দেশজুড়ে মনোনয়ন বঞ্চিতদের বিক্ষোভ অব্যাহত

বিএনপিতে ক্ষোভের আগুন


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১০, ২০১৮, ০২:৩৫ পিএম
বিএনপিতে ক্ষোভের আগুন

ঢাকা : মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ করেছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিকল্পদের বাদ দিয়ে একক প্রার্থী ঘোষণার পরই বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিএনপির বঞ্চিতরা।

ক্ষোভের জেরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পর্যন্ত ঝোলানো হয়েছে তালা। চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনেও হয়েছে বিক্ষোভ। হয়েছে হামলাও। মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে বঞ্চিত প্রার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সুনামগঞ্জ, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড়ে প্রতিবাদ মিছিল, কুশপুত্তলিকা দাহ ও কার্যালয়ে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
একাধিক আসনে বিএনপির প্রার্থীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারা পারলে ঘোষিত প্রার্থীকে পাস করিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীর গাড়িবহরে হামলা, গুলি হয়েছে।

বিএনপি অবশ্য এই প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘ছোটখাটো দুয়েকটি প্রতিক্রিয়া...এটা কি নতুন কিছু? এটা তো নতুন নয়। বরং যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তারা অত্যন্ত জনপ্রিয়।’

২৯৫ আসনে প্রার্থী দিতে বিএনপি এবার মনোনয়ন দিয়েছে আট শতাধিক নেতাকে। তাদের মধ্যে শতাধিক জমাই দেননি মনোনয়নপত্র। জমা করেন মোট ৬৯৬ জন। তাদের মধ্যে আবার ১৪১ জন বাদ পড়ে যান যাচাই-বাছাইয়ে। এদের মধ্যে আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৬০ জনের বেশি।
যাচাই-বাছাইয়ের আগে মোট ৩৮ আসনে বিএনপি একক প্রার্থী দিয়েছিল। বাকি ২৫৭ আসনে দেওয়া হয় একাধিক প্রার্থী। সর্বোচ্চ নয়জনকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয় একটি আসনে। যাচাই-বাছাইয়ের পর ৯১টি আসনে একক প্রার্থী থাকে।

তবে আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় বেশ কিছু আসনে আবার একাধিক বিকল্প প্রার্থী তৈরি হয়। আর এদের মধ্যে বিএনপি গত শুক্রবার বেছে নেয় ২০৬ জনকে। এই নাম ঘোষণার পরপরই বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার পাশাপাশি ঢাকায় শুরু হয় বিক্ষোভ।

পরদিন শনিবারও চলতে থাকে বিক্ষোভ। এর জেরে কয়েক ঘণ্টার জন্য নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে ঝোলানো হয় তালা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমানও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে হতাশ। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি খুব খারাপভাবেই দেখছি। হয়তো কিছু জায়গায় ঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি।’ এখন সমাধান কী?- এমন প্রশ্নে ২০০১ ও ২০০৮ সালে বিএনপির হয়ে ভোটে লড়া সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, ‘এখনো যতটুকু সময় আছে, যোগ্যদের ঠিক জায়গায় এনে সমাধান করা উচিত।’

মনোনয়ন নিয়ে বিএনপিতে এবার মান-অভিমানের কথা জানা যাচ্ছিল মনোনয়নের চিঠি দেওয়ার পরই। প্রত্যাশিত আসনে মনোনয়ন না পেয়ে প্রার্থিতা জমাই করেননি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও হাবিব উন নবী খান সোহেল। অনেকটা অবাক করে দিয়ে ভোট থেকে সরে গেছেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। দলের মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভীও ভোটের লড়াইয়ের বাইরে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমান এবং জমিরউদ্দিন সরকারও ভোটে দাঁড়াননি। এর মধ্যে জমিরউদ্দিন জানিয়েছেন বয়সের কারণে তিনি ভোটে নেই। তার পঞ্চগড়-১ আসনে প্রার্থী হয়েছেন ছেলে নওশাদ জমির।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে চাঁদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এহছানুল হক মিলনের সময় কেটেছে বলতে গেলে বিদেশে। তার বিরুদ্ধে আছে মামলার পাহাড়। জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বাসনা থেকে সম্প্রতি তিনি ফেরেন দেশে। নিজের পাশাপাশি স্ত্রী নাজমুন্নাহার বেবীর জন্য কেনেন মনোনয়ন ফরম।

বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার সময় মিলনের পাশাপাশি তার স্ত্রীর নামও ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর কপালেই জুটবে চ‚ড়ান্ত মনোনয়ন। তিনি না হলে অন্তত স্ত্রীর ভাগ্যে জুটবে মনোনয়ন।

কিন্তু অবাক করে দিয়ে সেখানে চ‚ড়ান্ত মনোনয়ন পান মালয়েশিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন। আর বিষয়টি মানতেই পারছেন না মিলনের সমর্থকরা।

কচুয়া উপজেলার আশরাফপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুদ এলাহী সুভাসের নেতৃত্বে গত শনিবার সকালে বিক্ষোভ দেখাতে ঢাকায় আসেন ওই এলাকার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে এলাকার নেতাকর্মীদের সম্পর্ক নেই। মিলন দীর্ঘদিন বিদেশে থাকলেও তিনি তাদের সব সময় খোঁজখবর রেখেছেন। অসংখ্য মামলার আসামি হওয়ার পরও তিনি দেশে ফিরেছেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে। বিক্ষোভ চলাকালে একপর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিলনের শতাধিক সমর্থক নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা দিয়ে দেন। পরে বেলা দুইটার দিকে ওই তালা খুলে দেন বিক্ষোভকারীরা।

এসময় দলীয় কার্যালয়ে ছিলেন বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভী। বিক্ষোভের মধ্যেও তিনি বের হয়ে আসেননি।

নয়াপল্টন থেকে মিলনের সমর্থকরা যান বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে। সেখানে তারা বাইরে থেকে কার্যালয়ের ভেতরে ঢিল ছুড়তে থাকেন। সেখানে ঢিলের আঘাতে আহত হন বেসরকারি টেলিভিশন ইনডিপেনডেন্টের একজন ক্যামেরা পারসন। তারই ধারাবাহিকতায় মধ্যরাতে বিএনপি মহাসচিবের গাড়িতে হামলা করেছে মনোনয়ন বঞ্চিত সমর্থকরা। এসময় গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায় এবং চালক হেলাল আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শনিবার রাত আড়াইটায় মির্জা ফখরুল গুলশানের চেয়ারপার্সনের কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় তার গাড়ি অবরুদ্ধ করা হয়। দীর্ঘ ৩০ মিনিট চেষ্টা করেও তিনি কার্যালয় থেকে বের হতে পারেননি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় রাত ৩টার দিকে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাকর্মী চেয়ারপার্সনস সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) একটি মানববেষ্টনী তৈরি করে তাকে ঘিরে গুলশান-২ নম্বর চত্বরের দিকে নিয়ে যান। সেসময় মির্জা ফখরুলের ব্যক্তিগত গাড়িটি কার্যালয় থেকে খালি বেরিয়ে মূল সড়ক থেকে ফখরুলকে তুলে নিয়ে যায়।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের পাশের সড়কে দলটির মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীর সমর্থকদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল ১০টা থেকে মনোনয়নবঞ্চিত কুমিল্লা-৪ আসনের ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী, মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের এম আব্দুল্লাহ এবং ঢাকা-১ আসনের আশফাকের পক্ষে এই বিক্ষোভ শুরু হয়।

বিক্ষোভ চলাকালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে হঠাৎ করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তারা খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের ফটক ভাঙার চেষ্টা চালায়। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ না করার অনুরোধ জানিয়ে মাইকে বলা হয়, ‘আজ অফিস বন্ধ’। এতে আরও ক্ষুব্ধ হন বিক্ষোভকারীরা। কুমিল্লা-৪ আসনের মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীর সমর্থকরা হুঁশিয়ারি দেন, যদি মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীকে মনোনয়ন না দেয়া হয় তাহলে তারা ১৫ দিনের অনশনে যাবেন, আবার কেউ বা বলেন, গণহারে পদত্যাগ করা হবে।

বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা আরও বলেন, জেএসডির মালেক রতনের সঙ্গে এলাকার মানুষের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি ভোটকেন্দ্রে কোনো এজেন্ট দিতে পারবেন না। আমরা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম। তারা বলেন, ‘মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী বিএনপির রাজনীতি করেন বলেই তার বিরুদ্ধে ২৯টি মামলা। যতক্ষণ পর্যন্ত মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীকে মনোনয়ন না দেয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।’

খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের ফটক ভাঙার চেষ্টাকারীরা বহিরাগত দাবি করে মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীর সমর্থকরা বলেন, ‘যারা আমাদের এখান থেকে সরে যেতে বলেছে আমরা তাদেরকে চিনি না। তারা আমাদের সরে বললে আমরাও তাদেরকে সরে যেতে বলেছি। তারপরও তারা ফটক ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছি।’

মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের মনোনয়নবঞ্চিত এম আব্দুল্লাহর সমর্থকরাও জানিয়েছেন, কাক্সিক্ষত ব্যক্তির মনোনয়ন না নিয়ে তারা ফিরবেন না।

দুপুর ১টার দিকে ঢাকা-১ আসনের খন্দকার আবু আশফাকের সমর্থকদের গুলশান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।

মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের মনোনয়নও মানতে চাইছে না স্থানীয় বিএনপির একটি বড় অংশ। তারা বিএনপির প্রার্থীর বিরুদ্ধে ঝাড়– হাতে মিছিলের পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয় তার গাড়ি। বিক্ষুব্ধরা শাহ মোয়াজ্জেমকে পাল্টে শেখ আব্দুল্লাহকে মনোনয়ন দেওয়ারও দাবি জানান। সকালে আবদুল্লাহর সমর্থকরা ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে এক ঘণ্টার মতো যান চলাচলেও ব্যাঘাত ঘটান। বিক্ষুব্ধরা বলছেন, শাহ মোয়াজ্জেম ২০০৮ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। ঠিকমতো হাঁটতেও পারেন না। অথচ তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

বিকেল চারটার দিকে শ্রীনগর থেকে সিরাজদিখানের পাথরঘাটায় যাওয়ার পথে ঢাকা-মাওয়া সড়কের কুচিয়ামোড়া এলাকায় শাহ মোয়াজ্জেমের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ছয়টি গাড়ি, পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। শাহ মোয়াজ্জেমের গাড়িচালকসহ সাতজন আহত হন। তাদের কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুরের প্রাইভেট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস ধীরণ জানান, হামলার সময় গুলিও করা হয়েছে। শাহ মোয়াজ্জেম হালকা আঘাত পেয়েছেন। কারা এই হামলা করেছে- বিষয়টি জানতে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকারি দলও এ হামলা করতে পারে। আবার দুপুরে বিএনপির একটি পক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে, তারাও হতে পারে, আমরা কাউকে চিনতে পারিনি।’

সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’

এ ব্যাপারে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী শেখ আব্দুল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সুনামগঞ্জ-৫ আসনে (ছাতক-দোয়ারাবাজার) বিএনপি প্রার্থী করেছে মিজান চৌধুরীকে। কিন্তু স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে কলিম উদ্দিন মিলনকে প্রার্থী করার দাবি জানান।

বিক্ষোভের সময় ছাতক উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিফজুর বারী শিমুল বলেন, ‘বৃদ্ধা মাকে জেলে রেখে কুলাঙ্গার সন্তান মনোনয়ন-বাণিজ্য করে। আমরা জেল খাটি, আমার ভাইয়েরা-সহকর্মীরা জেল খাটে। এই মনোনয়ন মানি না, মানব না। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রিয় ছাতকবাসীকে সাথে নিয়ে রাজনীতি করেছি। নিজের পরিবার-পরিজনকে সময় দিতে পারি নাই। এই জায়গায় এসে টাকা দিয়ে মনোনয়ন-বাণিজ্য করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’

বিএনপির প্রার্থীকে ছাতকে ঢুকতে না দেওয়ার ঘোষণাও আসে এই সমাবেশ থেকে। শিমুল বলেন, ‘কোনো স্বর্ণ চোরাকারবারি, কোনো দুষ্কৃতকারী বিএনপির নাম ধরে ছাতকে আসতে পারবে না। যেসব নেতা মনোনয়ন-বাণিজ্য করেছে, তাদের আমি উন্মুক্ত চ্যালেঞ্জ জানাই, আপনারা আসুন, আপনাদের মিজানকে বিজয়ী করুন।’

কুষ্টিয়া-৩ আসনের একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন মনোনয়ন না পেয়ে ভীষণ হতাশ। তার আসনে বিএনপি বেছে নিয়েছে জাকির হোসেন সরকারকে। শুক্রবার রাতেই গুলশান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান সোহরাবের সমর্থকরা।

বিএনপির সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এটা আমার কাছে সবচেয়ে বড় দুঃখের ব্যাপার। আমি ক্ষমতায় থাকাকালে কোনো সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি বা কোনো অবৈধ ইনকামও করিনি। সব সময় দলের পেছনে শ্রম দিয়েছি। রাজনীতি আমার পেশা ও নেশা। কেন আমি মনোনয়ন পাইনি তার অনেক কিছুই মিডিয়ায় আসছে। কিন্তু আমার কাছে প্রমাণ নেই বলে আমি কিছু বলতে পারছি না।’

বিক্ষোভ করেছেন পিরোজপুর-২ আসনের আহম্মদ সোহেল মনজুর, নরসিংদী-৩ আসনের সানাউল্লাহ মিয়ার সমর্থকরাও।

মনোনয়ন না পেয়ে কান্নাকাটিও করেছেন সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ারের ছেলে আখতার হামিদ ডাবলু। বোনকে নিয়ে দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে যাওয়া নিয়ে হাতাহাতিও হয়েছে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের কর্মীদের সঙ্গে।

গোপালগঞ্জ-১ আসনে এফ ই শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর ও গোপালগঞ্জ-২ আসনে সিরাজুল ইসলাম সিরাজকে প্রার্থী ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া হয়েছে জেলা বিএনপিতেও। শুক্রবার ঘোষণার পর থেকেই বিক্ষোভে নামে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের সমর্থকরা। দ্বিতীয় দিন শনিবারও অব্যাহত থাকে তাদের প্রতিক্রিয়া।
বিক্ষুব্ধরা গোপালগঞ্জ-১ আসনে সেলিমুজ্জামান সেলিম ও গোপালগঞ্জ-২ আসনে কে এম বাবরকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। তারা বিক্ষোভ মিছিলের পাশাপাশি শরফুজ্জামান ও সিরাজুলের কুশপুতুল বানিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

রংপুর সদর আসনে নিজের প্রার্থী না দিয়ে বিএনপি ধানের শীষ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোটের শরিক রিটা রহমানকে। মির্জা ফখরুল তার নাম ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রংপুরে সংবাদ সম্মেলন করে রিটাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন বিএনপির নেতারা।

রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘একজন পাকিস্তানের দালালের নাতনিকে আমরা ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারি না। তাকে রংপুরের কেউ চেনে না। তার পক্ষে রংপুর জেলা ও নগর বিএনপি এবং অঙ্গ দলের কোনো নেতাকর্মী কাজ করবে না।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!