• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশে নিতে অনুমতি না দেয়ায় অখুশি খালেদার পরিবার


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০, ০৯:৫৩ এএম
বিদেশে নিতে অনুমতি না দেয়ায় অখুশি খালেদার পরিবার

ঢাকা : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়া হয়েছিল বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সেই অনুমতি না দেওয়ায় অখুশি জিয়া পরিবার।

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এ কথা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের মেজো বোন বেগম সেলিমা ইসলাম।

এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চেয়ারপারসনকে পরিপূর্ণ সুস্থ করতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নেওয়া দরকার। আমাদের প্রত্যাশা সরকার বিষয়টি মানবিকভাবে দেখবে এবং চেয়ারপারসনকে বিদেশে নিতে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করবেন।

খালেদা জিয়ার মেজো বোন বলেন, খালেদা জিয়াকে সুস্থ করতে উন্নত চিকিৎসা দরকার। পরিবারের পক্ষ থেকে দুই দফা যে আবেদন করা হয়েছিল তাতে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার অনুমতি দেয়নি। বারবার সরকারকে অনুরোধ করার পরও তারা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিবেচনা করছে না। সরকার অনুমতি না দিলে তো কিছু করার নেই। জলে বাস করে কুমিরের সঙ্গে তো আর লড়াই করা যায় না।  

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, খালেদা জিয়া আগে ছিলেন কারাবন্দী। এখন রয়েছেন গৃহবন্দী। তাকে মুক্ত করতে হবে। তাকে মুক্ত করে তার নেতৃত্বে বিএনপি জনগণকে সম্পৃক্ত করে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের সাজার কার্যকারিতা আগের দুই শর্তে আরও ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে সরকার। খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পাওয়ার পর সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ওই দিনই এ বিষয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিবার তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছিল। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর আমাদের কাছে সুপারিশ এসেছে। তাতে কিছুক্ষণ আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন।

শর্ত অনুযায়ী, এই সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

তিনি বলেন, করোনার কারণে গত ছয় মাস খালেদা জিয়ার পরিবার তার কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেননি। এই বিবেচনায় তার মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে দাখিলকৃত আবেদন এবং আইন ও বিচার বিভাগের আইনগত মতামতের আলোকে ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’ এর ধারা-৪০১(১) এ দেওয়া ক্ষমতাবলে দুটি শর্তে (বাসায় থেকে চিকিৎসা ও বিদেশ না যাওয়া) তার (খালেদা জিয়ার) দণ্ডাদেশ ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হলো।

গত ২৫ মে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। তার দণ্ডের কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হলে তিনি কারামুক্ত হন। ওই মুক্তির মেয়াদ ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল।

বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবারের পক্ষ থেকে তার ভাই শামীম এস্কেন্দার গত মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করেন। তাতে তার অসুস্থ বোনের কারামুক্তির পদক্ষেপ নিতে সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আগের শর্তেই খালেদা জিয়ার সাজা আরও ছয় মাস স্থগিত রাখার বিষয়ে সম্মতিসূচক মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। আবেদনটি আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

কারামুক্তির পর ৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া গুলশানে তার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ ওঠেন। তিনি আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজায় কারাজীবন শুরু করেন খালেদা জিয়া। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয়। তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী ও দলের যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চেয়ারপারসনের সাজা স্থগিত করে ছয় মাসের মুক্তির জন্য যে নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন তার কপি পাওয়া গেছে।

বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে অনুমতি না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশা করছি চেয়ারপারসনকে বিদেশে নিতে যে নিষেধাজ্ঞা আছে তা প্রত্যাহার করে নেবে সরকার।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!