• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিয়োগ ও ব্যবসা প্রসারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ছাড়


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৮, ২০১৯, ১২:২২ এএম
বিনিয়োগ ও ব্যবসা প্রসারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ছাড়

ঢাকা : দেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা প্রসারে ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন ব্যবসায়ীরা দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়েই ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারবেন। পুনঃতফসিল হওয়া ঋণ পরিশোধ করতে তারা টানা ১০ বছর সময় পাবেন। এক্ষেত্রে প্রথম এক বছর কোনো কিস্তি দিতে হবে না।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে ওই নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই নির্দেশনার ফলে যেসব ব্যবসায়ী বিভিন্ন কারণে লোকসানে পড়েছেন তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। এতে বেসরকারি খাতে গতি আসবে ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রাণ ফিরবে। সরকারের উচ্চ প্রবৃদ্ধির অর্জনের  যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা সহজ হবে।

দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো ওই নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যাংকের ঋণ অনেক ক্ষেত্রেই নিয়মিতভাবে পরিশোধ হচ্ছে না। যে কারণে ওই সব ঋণ বিরূপভাবে খেলাপি হয়ে পড়ায় ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশায় বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ৩১ ডিসেম্বর সময়ে মন্দ বা ক্ষতিকর মানে শ্রেণিকৃত রয়েছে এমন ঋণগ্রহীতার অনুকূলে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পুনঃতফসিল বা এক্সিট সুবিধা দেওয়া যাবে।

সুবিধা পাবে যেসব খাত : ট্রেডিং খাত (গম, খাদ্যদ্রব্য, ভোজ্যতেল ও রিফাইনারি), জাহাজ শিল্প (শিপ ব্রেকিং ও শিপ বিল্ডিং), লৌহ ও ইস্পাত শিল্প। অন্যান্য খাতের ব্যাংক কর্তৃক বিশেষ নিরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত প্রকৃত ব্যবসায়ী যাদের ঋণ নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে মন্দ মানে শ্রেণিকৃত হয়েছে। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের অকৃষি খাতের আমদানি-রফতানিতে সম্পৃক্ত শিল্পঋণ।

পুনঃতফসিলে শর্ত : সার্কুলার জারির ৯০ দিনের মধ্যে ঋণগ্রহীতাকে আবেদন করতে হবে। এ সময় পার হলে আবেদনের সুযোগ থাকবে না।

ঋণস্থিতির ন্যূনতম ২ শতাংশ হারে ডাউন পেমেন্ট নগদে গ্রহণ করতে হবে। এর আগের আদায় করা কিস্তির অর্থ ডাউন পেমেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না।

কেস টু কেস বিবেচনায় ঋণ পরিশোধের সময় এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১০ বছর। সুদহার ৯ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। ঋণ পরিশোধের জন্য ৯টি মাসিক কিস্তি অথবা ৩টি ত্রৈমাসিক কিস্তির মধ্যে ২টি ত্রৈমাসিক কিস্তি অনাদায়ী হলে এ সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে।

পুনঃতফসিল পরবর্তী ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ব্যাংক থেকে গ্রাহক নতুন ঋণ নিতে পারবে। তবে নতুন নেওয়া ঋণ যথানিয়মে পরিশোধে ব্যর্থ হলে এই সার্কুলারের আওতায় দেওয়া সব সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণ এককালীন এক্সিট করতে হলে এই সার্কুলারের আওতায় ঋণগ্রহীতার আবেদন পাওয়ার তারিখ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেবে। তবে যেসব ক্ষেত্রে বিশেষ নিরীক্ষার প্রয়োজন হবে, সেব ক্ষেত্রে নিরীক্ষা প্রতিবেদন পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এর আগের ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে- এমন আভাস দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গত ২৫ মার্চ শেরেবাংলা নগরে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, যারা ঋণ শোধ করতে না পারার ‘যৌক্তিক’ কারণ ব্যাখ্যা করতে পারবেন, তাদের মোট ঋণের ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৭ শতাংশ সুদে ওই টাকা পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৫ সালে বিশেষ বিবেচনায় ডাউন পেমেন্ট ও মেয়াদের শর্ত শিথিল করে ৫০০ কোটি টাকার ওপরে ঋণ নেওয়া ১১টি ব্যবসায়ী গ্রুপকে দেওয়া হয় বিশেষ সুবিধা। ওই সময় তারা ১৫ হাজার ২১৮ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠন করে। পরবর্তী সময়ে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠিত ঋণের টাকা ফেরত না দেওয়ায় সুদে-আসলে ব্যাংকগুলোর পাওনার পরিমাণ ১৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৯৭ হাজার কোটি টাকার ঋণ পুনঃতফসিল হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!