• ঢাকা
  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা

বিশ্বাস আছে জনগণ নৌকায় ভোট দেবে


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮, ০৯:২২ পিএম
বিশ্বাস আছে জনগণ নৌকায় ভোট দেবে

ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমার বিশ্বাস ও আস্থা আছে আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দেবে। বাংলাদেশের জনগণ কখনও ভুল করে না। সে জন্যই বিজয় দিবসে, বাংলাদেশের জনগণের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। এই অগ্রযাত্রা যেন কেউ কেড়ে নিতে না পারে।’

সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনায় তিনি মন্তব্য করেন।

বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কিন্তু ১৯৭৫ এর পর সেই স্বর্ণালী ইতিহাস মুছে ফেলে নতুন প্রজন্মকে মিথ্যা দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে তৎকালীন অপশক্তি পরিচালিত সরকার। স্বাধীনতার সুফল একে একে নস্যাৎ করতে চেয়েছিল তারা।

বিগত সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দুর্নীতি, অপশাসনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে জনগণের ভোটে তারা ক্ষমতায় আসেনি। তাই তাদের জনগণের কাছে কোন জবাবদিহিতাও ছিলো না। তাই খুন-হত্যা-লুট-সন্ত্রাস করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী করেছিলো বিএনপি-জামায়াত সরকার। আর দেশের মানুষকে অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেজন্যই আজ বিজয় দিবসে, বাংলাদেশের জনগণের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। ভোট এই কারণে যে, বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা যেন কেউ কেড়ে নিতে না পারে। স্বাধীনতাবিরোধী, খুনি, রাজাকার, আলবদও, আল-শামস বাহিনী, বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী, গ্রেনেড হামলাকারী, দুর্নীতিবাজ, অস্ত্র চোরাকারবারি, সাজাপ্রাপ্ত খুনি আসামি; এরা কখনো এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দেবে না।’

‘আমি একটা কথাই বলবো, নৌকা মার্কায় ভোট চাই। দেশের সেবা করে দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন এবং আমার বিশ্বাস আছে বাংলাদেশের জনগণ আমাদের ভোট দেবে’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, ‘২০২০ থেকে ২০২১ এই বর্ষকে আমরা মুজিব বর্ষ হিসাবে ঘোষণা দিয়েছি। আমরা তার বছরব্যাপী শতবার্ষিকী উদযাপন করেই উদযাপন করবো আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এই সুবর্ণজয়ন্তী যখন উদযাপন করবো বাংলাদেশ তখন বাংলাদেশকে আমরা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, ইনশাল্লাহ।’

কোনো মানুষ গৃহহারা থাকবে না, ক্ষুধার্ত থাকবে না। বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না। এটা আমাদের অঙ্গীকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেইভাবেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আজ নব্বই ভাগ মানুষের ঘরে আলো জ্বালাতে পেরেছি। বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত করতে পেরেছি। বাংলাদেশ যে আজ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ আজকে খুশি। গ্রামের মানুষ বিশেষ করে সব থেকে নারীরা বেশি উৎসাহিত। আমাদের মেয়েদের উন্নয়নের ব্যাপক সার্বিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি।’

পাশাপাশি দুঃস্থ মাতা, স্বামী পরিত্যক্ত ও বিধবা, বয়স্ক ভাতা চালুর উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ভাতার ফলে সংসারে তারা একটি স্থান পাচ্ছে। তাকে আর ঘর সংসার ফেলে চলে যেতে হচ্ছে না। তার সমাজে একটা জায়গা হচ্ছে। এই সুযোগটা আমরা তার জন্য করে দিয়েছি। বাংলাদেশের যে ইতিহাস, যে চেতনা নিয়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বিজয় দিবস এমন একটা সময়ে উদযাপন করছি, মানুষ আজ স্বাধীনভাবে মন খুলে এই বিজয়ের উল্লাস করতে পারছে। বিজয় দিবস তারা উদযাপন করতে পারছে। একটা সময় ছিল এটা উদযাপন করাই যেত না। ইতিহাস বলা যেত না। বিকৃত ইতিহাস বলতে হতো। এখন আর সেই অবস্থাটা নাই। সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে এবং এই ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর কেউ বাংলাদেশকে পিছনে ফেলতে পারবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের উপর আমার আস্থা আছে। বিশ্বাস আছে। বাংলাদেশের জনগণ কখনো ভুল করে না। আর তাদের ভোটের অধিকার, তাদের সাংবিধানিক অধিকার আর কখনো কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। সেই সাহসও পাবে না। নৌকা মার্কা জনগণের মার্কা। এই নৌকা মার্কা দিয়ে এদেশের স্বাধীনতা এসেছে। এই নৌকা মার্কা দিয়েই বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছি।

এই নৌকার মার্কার ফলে বাংলাদেশ উন্নয়নের গতিতে এগিয়ে বিশ্বে আজকে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। এই নৌকা মার্কা আছে বলেই আজকে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এই নৌকা মার্কা ছিল বলেই আজকে আমরা মহাকাশ জয় করেছি পাশাপাশি বিশাল সমুদ্র সীমা অর্জন করেছি। আমাদের ল্যান্ড বাউন্ডারি অর্জন করেছি। আজ বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ২১ ভাগে নেমে এসেছে।

ইনশাল্লাহ, আগামী ৫ বছর যদি আবার আমরা নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারি এই দারিদ্র্যের হার অন্তত আরও ৫/৬ ভাগ কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো।’

‘বাংলাদেশে হতদরিদ্র বলে কিছু থাকবে না। প্রত্যেকটি মানুষের খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান যেটুকু বাকি আছে, সেটাও আমরা করতে সক্ষম হবো। সেজন্য আমাদের আরও ৫টি বছর সরকারে থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!