• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিয়ে বাড়ির খাবার ফেলে দিলেন ইউএনও!


নাহিদ আল মালেক, বগুড়া জুন ৩০, ২০১৮, ১০:৩১ এএম
বিয়ে বাড়ির খাবার ফেলে দিলেন ইউএনও!

বগুড়া: বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে বিয়ে বাড়িতে ৪শ’ জনের খাবার মাটিতে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে। ওই সময় বিক্ষুদ্ধ জনগনের তোপের মুখে পড়েন ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শুক্রবার (২৯ জুন) বিকেলে বগুড়া শহরের নারুলী খন্দকার পাড়ায় এঘটনা ঘটে।

এঘটনায় ভ্রাম্যমান আদালত তিনজনকে আটক করেলেও অসুস্থ হয়ে পড়ায় একজনকে ঘটনাস্থলেই ছেড়ে দেয়। পরে আটক অপর দুইজনকে ভ্রাম্যমান আদালতে সাজা দেয়া হয়।

জানা গেছে, নারুলী খন্দকার পাড়ার দরিদ্র অটোটেম্পু চালক বাবু মিয়া তার দশম শ্রেণিতে পড়–য়া মেয়ে রজনী খাতুনের বিয়ে ঠিক করেন সোনাতলা উপজেলার হলিদাবগা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে রকির সাথে।

শুক্রবার বিয়ের দিন নির্ধারন করে প্রতিবেশী আব্দুর রশিদ মাস্টারের বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিয়ের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে দুপুরের পর থেকে সেখানে লোকজন খাওয়া দাওয়া শুরু করা হয়। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়। ভ্রাম্যমান আদালতের উপস্থিতিটের পেয়ে বাবু মিয়া ও তার স্ত্রী ফাইমা মেয়েকে নিয়ে সটকে পড়ে।

এসময় ভ্রাম্যমান আদালত বাল্য বিয়ের আয়োজন করার অভিযোগে বাবু মিয়ার মামা সেকেন্দার আলী (৬৫), খালা সুইটি বেগম এবং বাবু মিয়ার ভাই রকিকে আটক করে।

এছাড়াও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় ইউএনও নিজ হাতে রান্না করা ৪শ’ জনের খাবার মাটিতে ফেলে দেয়ার অভিযোগ করেছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। ওই সময় তিনি চেয়ার টেবিল উল্টে ফেলে দেয়। এদিকে ভ্রাম্যমান আদালতের হাতে আটক অবস্থায় সেকেন্দার আলী অসুস্থ হয়ে পড়লে লোকজন বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। একপর্যায় ভ্রাম্যমান আদালত বিক্ষুদ্ধ জনগনের তোপের মুখে পড়েন এবং সেকেন্দার আলীকে ছেড়ে দেয়। পড়ে তাকে শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হৃদ রোগ বিভাগে ভর্তি করা হয়।

একসাথে ৪শ জনের খাবার নষ্ট করার দৃশ্য দেখে লোকজন উত্তেজিত হয়ে উঠে এবং ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারকের কাছে খাবার নষ্ট করার কারণ জানতে চায়। এনিয়ে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে আনলে ভ্রাম্যমান আদালত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আটক দুইজনকে নিয়ে যাওয়া হয় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে।
সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের কাজে বাধা প্রদানের দায়ে আটক সুইটি বেগমকে একমাস এবং রকিকে দুইমাস কারাদন্ড দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

বগুড়া সদর থানার এসআই জিলালুর রহমান জানান, ভ্রাম্যমান আদালত দেখে মেয়ের আত্মীয়-স্বজন উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং বিচারকের সঙ্গে খারাপ আচরন করে। একারনেই আদালতের বিচারক নিজ হাতে খাবার গুলো ফেলে দিয়েছেন।

তবে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন বিয়ে বাড়িতে খাবার কে নষ্ট করেছে তা তিনি দেখেন নি। বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে গেলে আদালতের কাজে বাধা দিলে দুই জনকে আটক করে সাজা দেয়া হয়েছে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!