• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমানের জন্মদিন আজ


ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৯, ০৩:২১ পিএম
বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমানের জন্মদিন আজ

বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমান

ঝিনাইদহ : আজ ২ ফ্রেরুয়ারি বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমানের জন্মদিন। ১৯৫৩ সালের এইদিনে তদানীন্তন যশোর জেলার (বর্তমানে ঝিনাইদহ জেলা) মহেশপুর উপজেলার খর্দ্দ খালিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জাতির এই বীর সন্তান। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান। তিনি বীর শ্রেষ্ঠদের মাঝে সর্বকনিষ্ঠ। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। মোহাম্মদ হামিদুর রহমান শৈশবে খালিশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরবর্তীকালে স্থানীয় নাইট স্কুলে সামান্য লেখাপড়া করেন।

১৯৭০ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে সিপাহি পদে যোগ দেন। তার প্রথম ও শেষ ইউনিট ছিল ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট। সেনাবাহিনীতে ভর্তির পরই প্রশিক্ষণের জন্য তাকে চট্টগ্রামের ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেন্টারে পাঠানো হয়। ২৫ মার্চের রাতে চট্টগ্রামের ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ওখানকার আরও কয়েকটি ইউনিটের সমন্বয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। হামিদুর সিলেট জেলার শ্রীমঙ্গল থানার ধলই চা বাগানের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ধলই বর্ডার আউটপোস্টে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।
তিনি ৪নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন। ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে হামিদুর রহমান ১ম ইস্টবেঙ্গলের সি কোম্পানির হয়ে ধলই সীমান্তের ফাঁডি দখল করার অভিযানে অংশ নেন। অক্টোবরের ২৮ তারিখে ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও পাকিস্তান বাহিনীর ৩০-এ ফ্রন্টিয়ার রেজিমেন্টের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সিপাহি হামিদুরসহ ১২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশ নেয়।

মুক্তিবাহিনী পাকিস্তান বাহিনীর মেশিনগান পোস্টে গ্রেনেড হামলার সিদ্ধান্ত নেয় গ্রেনেড ছোড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় হামিদুর রহমানকে। তিনি পাহাড়ি খালের মধ্য দিয়ে ক্রোলিং করে গ্রেনেড নিয়ে আক্রমণ শুরু করেন। দুটি গ্রেনেড সফলভাবে মেশিনগান পোস্টে আঘাত হানে, কিন্তু তার পরপরই হামিদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন। সে অবস্থাতেই তিনি মেশিনগান পোস্টে গিয়ে সেখানকার দুইজন পাকিস্তানি সৈন্যের সঙ্গে হাতাহাতি যুদ্ধ শুরু করেন।

এভাবে আক্রমণের মাধ্যমে হামিদুর রহমান এক সময় পাক হানাদারদের মেশিনগান পোস্টকে অকার্যকর করে দিতে সক্ষম হন। এই সুযোগে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মুক্তিযোদ্ধারা শত্রু পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে সীমানা ফাঁড়িটি দখল করতে সমর্থ হয়। কিন্তু এ হামিদুর রহমান বিজয়ের স্বাদ আস্বাদন করতে পারেননি। তিনি এর আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ফাঁড়ি দখলের পরে মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হামিদুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে। হামিদুর রহমানের মৃতদেহ সীমান্তের অল্প দূরে ভারতীয় ভূখন্ডে ত্রিপুরা রাজ্যের হাতিমের ছড়া গ্রামের স্থানীয় এক পরিবারের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। নিচু স্থানে অবস্থিত কবরটি এক সময় পানির তলায় তলিয়ে যায়।

২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ রাইফেলসের একটি দল ত্রিপুরা সীমান্তে হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ গ্রহণ করে এবং ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানকে ঢাকার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!