• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বেতাগীতে বিকেল থেকে ক্লাস রুমেই চলে কোচিং বাণিজ্য!


বরগুনা প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯, ০৮:৩৫ পিএম
বেতাগীতে বিকেল থেকে ক্লাস রুমেই চলে কোচিং বাণিজ্য!

বরগুনা: কোচিং বাণিজ্যে জড়ানোর সুযোগ নেই শিক্ষকদের। সরকারি ও বেসরকারি সকল স্কুল এবং কলেজের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারের জারি করা নীতিমালাকে বৈধ ঘোষণা করে গত ফেব্রুয়ারি মাসে এ রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। 

অথচ বরগুনার বেতাগীর ৭৫নং ভোড়া কালিকাবাড়ী হাতেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যেসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আর এ শিক্ষকের অনিয়মের নেপথ্যে সহযোগীতা করছেন বেতাগীর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) মো. মিজানুর রহমান খান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়- ডেপুটেশনের শিক্ষক হয়েও অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে স্কুলের রুমে কোচিং বাণিজ্য, বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর প্রদাণসহ নানা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায় ওই সহকারি শিক্ষক মো. জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

অভিযোগের সত্যতা জানতে গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ওই বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গেলে এসব অভিযোগের মধ্যে স্কুলের কোচিং বাণিজ্যের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। 

এসময় দেখা যায়, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং করানো হচ্ছে। আর কোচিং পরিচালনা করছেন অভিযুক্ত শিক্ষক জালাল উদ্দিন। সেই কোচিং ক্লাশের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী ৫০০ টাকা করে বেতন দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও শিক্ষক জালাল উদ্দিন বিষয়টি অস্বিকার করেন। এসময় তাৎক্ষনিক শিক্ষার্থীদের রেখে পালিয়ে যান ওই শিক্ষক। 

নিয়মিত কোচিংয়ের বিষয়টি স্বীকার করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্কুল কমিটির সভাপতি কিবরিয়া জানান, এখানে আমার নাতনীসহ অনেকে পড়তে আসে। 

বেতাগী উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) মিজানুর রহমান খান জানান, শিক্ষক জালাল উদ্দিন কোচিং করান কিনা সেটা আমার জানা নেই। তিনি কিভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন এ প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান এটিইও। 

এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) এমএম মিজানুর রহমান জানান, একজন শিক্ষক কোনো ভাবেই বিদ্যালয়ে বসে টাকার বিনিময়ে কোচিং চালাতে পারবেন না। যদি এ ঘটনা সত্যি হয় তবে সে অন্যায় করেছে। আর অন্য অভিযোগের বিষয়গুলো বেতাগী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জানবো।

জানা গেছে, ২০১২ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে একটি নীতিমালা জারি করে সরকার। ওই নীতিমালার ভূমিকায় বলা হয়, দেশের সরকারি ও বেসরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক শ্রেণির শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কোচিং পরিচালনা করে আসছেন। এটি এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যেখানে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। যা পরিবারের উপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে এবং এ ব্যয় নির্বাহে অভিভাবকগণ হিমশিম খাচ্ছেন। এছাড়া অনেক শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে মনোযোগী না হয়ে কোচিং এ বেশি সময় ব্যয় করছেন। এক্ষেত্রে দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা এবং অভিভাবকগণ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকার এই নীতিমালা প্রণয়ন করে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোন শিক্ষক তার নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে কোচিং করাতে পারবেন না।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!