• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জীবনরহস্য উন্মোচন


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৫, ২০১৮, ১১:৪৫ এএম
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জীবনরহস্য উন্মোচন

ঢাকা : পৃথিবীর অন্যতম সেরা জাতের ছাগল ‘ব্ল্যাক বেঙ্গলের’ জীবনরহস্য উন্মোচন (জিনোম সিকোয়েন্সিং) করেছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু পালন বিভাগের অধ্যাপক বজলুর রহমান মোল্লার নেতৃত্বে এসেছে এই সাফল্য ।

গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জৈবপ্রযুক্তিবিষয়ক সংস্থা এনসিবিআই থেকে তা নিবন্ধন পেয়েছে। বাংলাদেশের এই স্থানীয় জাতের ছাগলের জীবনরহস্য উন্মোচনের তথ্য গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস বিশ্বজুড়ে কুষ্টিয়া গ্রেড নামে পরিচিত, যা বিশ্বের অন্যতম সেরা ছাগলের মাংস হিসেবে সমাদৃত। জীবনরহস্য উন্মোচনের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই উদ্ভাবন এই ছাগলের জাতের উন্নয়নে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে। বিশেষ করে ওই ছাগলের ওজন ও মাংসের পরিমাণ বাড়ানো এবং মৃত্যুহার কমানোর ক্ষেত্রে ভ‚মিকা রাখবে। এ ব্যাপারে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের দলটি পরবর্তী ধাপে গবেষণা করবে বলে জানিয়েছেন।

এর আগে ২০১৬ সালে জাতিসংঘের কৃষিবিষয়ক সংস্থা (এফএও) ও আন্তর্জাতিক আণবিক গবেষণা সংস্থা বিশ্বের ১০০টি ছাগলের বৈশিষ্ট্য নিয়ে একটি গবেষণা করে। তাতে বাংলাদেশের স্থানীয় জাতের ছাগল ব্ল্যাক বেঙ্গলকে বিশ্বের অন্যতম সেরা জাত হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাগলের জীবনরহস্য উন্মোচনকারী গবেষক দলের প্রধান বজলুর রহমান মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের গ্রামের মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে। অল্প জায়গায় পালন করা যায়, দ্রুত বড় হয় বলে একে গরিবের গাভি বলা হয়। কিন্তু এই ছাগলের আকৃতি একটু ছোট ও মাংস কম হয়। জীবনরহস্য উন্মোচনের ফলে এখন এর কোন কোন জিন তার আকৃতি ও শরীরে মাংসের পরিমাণ নির্ধারণ করে, তা জানা যাবে। ফলে আরও উন্নত জাত উদ্ভাবন করা সহজ হবে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে ক্লেমেন্টে ছাগল ও চীন ইউনান ছাগলের জীবনরহস্য উন্মোচন করা হয়। তারা ওই দুই জাতের ছাগলের আরও উন্নত জাত উদ্ভাবন করে সে দেশের কৃষকদের কাছে তা সরবরাহ করছে।

বাংলাদেশে মোট ছাগলের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৭৬ লাখ, যার ৯০ শতাংশই ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের। এ জাতের ছাগল প্রতিবারে একাধিক বাচ্চা দেয়। দ্রুত প্রজননশীল, চামড়া উন্নত মানের এবং উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ার উপযোগী। এ ছাড়া ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস স্বাদে, গন্ধে ও রসালতায় অনন্য হিসেবে পরিচিত।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে বছরে প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন ছাগলের মাংস উৎপাদিত হয়, যা মোট উৎপাদিত গবাদিপশুর মাংসের প্রায় ২৫ ভাগ। এ জাতের অধিকাংশ ছাগলের গায়ের রং কালো। তবে বাদামি, সাদা রঙেরও দেখা যায়।

২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে পুরো গবেষণাটি হয়েছে। বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাগলের এই জাতের নমুনা সরবরাহ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কম্পিউটারে ডেটা বিশ্লেষণ করা হয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!