• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বড় ধরনের রদবদল বিএনপির কেন্দ্রীয় কাঠামোতে


বিশেষ প্রতিনিধি আগস্ট ১৩, ২০১৯, ০৮:১০ পিএম
বড় ধরনের রদবদল বিএনপির কেন্দ্রীয় কাঠামোতে

ঢাকা : জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। দলীয় চেয়ারপারসনকে কারাগারে রেখে সম্মেলন করার বিষয়ে দলের একটি বড় অংশের আপত্তি থাকলেও এ বছরের শেষ দিকে হতে পারে এ কাউন্সিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘অবিশ্বাস্য পরাজয়ের’ পর ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ের অংশ হিসেবে এই কাউন্সিলকে গুরুত্ব দিচ্ছে রাজপথের এ বিরোধী দল।

এবারের কাউন্সিলে বিএনপি কেন্দ্রীয় কাঠামোতে বড় রদবদলের আভাস পাওয়া গেছে। শীর্ষ পদগুলোতে আগের নেতৃত্ব ঠিক থাকলেও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে আসবে বড় ধরণের পরিবর্তন। যুক্ত করা হবে অন্তত ৫ জন নতুন মুখ। বাদ দেয়া হতে পারে দুই থেকে তিনজন নেতাকে।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সম্পাদকীয় পদগুলোতে অনেকগুলো নতুন মুখ আনা হবে। এসব পদে প্রাধান্য দেয়া হবে যোগ্য, পোড়খাওয়া, রাজপথের সাহসী নেতৃত্ব, তরুণ ও মেধাবীদেরকে। আন্দোলন সংগ্রামে ব্যর্থ এবং নিস্ক্রিয় নেতাদের কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে। নানা হিসেব নিকেশ শেষে যাদেরকে বাদ দেয়া যাবে না তাদের কম গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হবে। বিএনপির একাধিক সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এবারের কাউন্সিলে শীর্ষ পদগুলোতে চমক থাকছে না। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শীর্ষ পদে পরিবর্তন হচ্ছে না।

গত কাউন্সিলে বিএনপির শীর্ষ দুই পদে রাখা হয় দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের দুই উত্তরসূরি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। এবারের কাউন্সিলেও দলটির চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানই থাকছেন এটি নিশ্চিত। খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকায় গঠনতন্ত্র সংশোধন করে তাকে (তারেক রহমান) আরও ক্ষমতা দেয়া হতে পারে।

দলের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ মহাসচিব পদে পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই কম। সবকিছু ঠিক থাকলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই থাকছেন এ পদে।

দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে আসবে পরিবর্তন। এ ক্ষেত্রে কমপক্ষে পাঁচজন নতুন মুখ আসতে পারে। বর্তমান কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্য থেকে কাউকে কাউকে পদোন্নতি দিয়ে এ পদে আনা হতে পারে।

আগামী কাউন্সিলের আগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন বলে মনে করছেন নীতিনির্ধারকরা। এমনটি ধরে নিয়ে ডিসেম্বরে দলের ৭ম জাতীয় কাউন্সিল করার চিন্তা করছে বিএনপি। সে জন্য দ্রুত সাংগঠনিক জেলা শাখা পুনর্গঠনের কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

৮২টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ইতিমধ্যে ৩৩ জেলার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কাজ করে যাচ্ছেন। যেসব জেলায় কোন্দল রয়েছে, সেগুলো নিরসনেও চেষ্টা চলছে। মূল দলের পাশাপাশি কাউন্সিলের আগে ছাত্রদলসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনও পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বহু বছর পর কাউন্সিলের মাধ্যমে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কাউন্সিলের দিনক্ষণও ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরই যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কাউন্সিলের উদ্যোগ নেয়া হবে। ছাত্রদলের সাবেক নেতাদেরকে যুব ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃত্বে আনা হবে। কাউকে কাউকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে দেয়া হবে।

দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় নির্বাহী কমিটির তিন বছরের মেয়াদ ১৯ মার্চ শেষ হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে এবার কাউন্সিল করার পরিকল্পনা থাকলেও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ায় সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। পরে তৃণমূলের মতামতের ওপর ভিত্তি করে কাউন্সিল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা দলের জাতীয় কাউন্সিলের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ লক্ষ্যে আমাদের সাংগঠনিক পুনর্গঠনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে কাউন্সিলের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

তিনি বলেন, নেতৃত্ব নির্বাচন হবে তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে। তারা যাকে নেতৃত্বে চাইবেন এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে যারা যোগ্য এবং বিগত সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে অবদান রয়েছে, তারাই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসবেন বলে আশা করি।

সূত্র জানায়, সপ্তম কাউন্সিলে শীর্ষ পদে পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। নিয়মমাফিক আনুষ্ঠানিকতা বাদ দিলে খালেদা জিয়াই ফের দলের চেয়ারপারসন হচ্ছেন এটি নিশ্চিত। সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। লন্ডনে অবস্থানরত বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই আসছেন এ পদে।

দলের তৃতীয় শীর্ষ পদেও নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা নেই। মহাসচিব হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পুনরায় এ পদে আসছেন এখন পর্যন্ত হাইকমান্ডের ভাবনা এমনই।

তবে দলের একটি অংশ তার মহাসচিব পদ আটকাতে এখন থেকেই মাঠে সক্রিয়। দল পরিচালনায় ব্যর্থসহ তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। হাইকমান্ডের কান ভারী করার চেষ্টা চলছে।

তবে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর হাইকমান্ডের নির্দেশে শপথ না নেয়াসহ সাম্প্রতিক সময়ে দলের চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনায় হাইকমান্ড তার ওপর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে তারেক রহমানেরও খুব আস্থাভাজন মির্জা ফখরুল।

দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তারেক রহমান সব সময় মহাসচিবের পরামর্শ নিচ্ছেন।

তাই সবকিছু ঠিক থাকলে মহাসচিব পদে ফখরুলই আসছেন বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

মহাসচিবের পর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদটি বিএনপি নেতাদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। বর্তমান সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে পদোন্নতি দিয়ে স্থায়ী কমিটিতে নেয়া হতে পারে। তাই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদের বিষয়ে অনেকেরই আগ্রহ কাজ করছে। বর্তমান কমিটির যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্য থেকে কেউ কেউ ভেতরে ভেতরে এই পদে আসার জন্য আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন হাইকমান্ডের কাছে।

যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা কাউন্সিলে অন্তর্ভূক্ত করা হতে পারে। এ পদে কয়েকজন নতুন মুখ আসবে। বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সম্পাদকদের মধ্য থেকে দুই তিন জনকে পদোন্নতি দিয়ে যুগ্ম মহাসচিব করা হবে। আর যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্য থেকে দুই তিনজনকে একই পদে রাখা হতে পারে।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আসবে বড় পরিসরে পরিবর্তন। অপেক্ষাকৃত তরুণ, মেধাবীদের এই পদে জায়গা দেয়া হবে। বর্তমান কমিটির সম্পাদকীয় পদে সফল কয়েকজনকে পদোন্নতি দিয়ে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হবে। এছাড়া অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ পদে যারা আছেন তাদের কাউকে কাউকে এ পদে আনা হবে।

বড় পরিবর্তন আসছে জাতীয় স্থায়ী কমিটির পর দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ ভাইস চেয়ারম্যান পদেও। যুগ্ম মহাসচিব ও উপদেষ্টা কাউন্সিল থেকে কয়েকজনকে ভাইস চেয়ারম্যান করা হবে।

সূত্র জানায়, ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটিতে পাঁচটি পদে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। গতবার কাউন্সিলের পর দলের স্থায়ী কমিটি করা হয় তাতে দুটি পদ খালি রাখা হয়। এর মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, ব্রি. জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহ ও এমকে আনোয়ার মারা গেছেন। ফলে পাঁচটি পদ শূন্য হয়।

সম্প্রতি স্থায়ী কমিটিতে সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আরও তিনটি পদ ফাঁকা রয়েছে। এদিকে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার জন্য স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান দলীয় কর্মকাণ্ডে অনুপস্থিত।

প্রবীণ নেতা ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারও শারীরিকভাবে ততটা ফিট নন। অসুস্থতার কারণে তাদের বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনটি পদ ফাঁকা ও আরও কমপক্ষে দুজনের বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মোট পাঁচ পদে নতুন মুখ আসবে।

এসব পদে তরুণদের মধ্যে কেউ কেউ জায়গা পেতে পারেন। স্থায়ী কমিটিতে জায়গা পেতে সিনিয়র নেতারা যার যার মতো করে সক্রিয় হয়েছেন।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল করেছিল বিএনপি। দলটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় নির্বাহী কমিটি তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হবে এবং পরবর্তী জাতীয় নির্বাহী কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত এ কমিটিই দায়িত্ব পালন করবে।

কমিটি ঘোষণার সময়ই ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটির দুটি পদ ফাঁকা ছিল। বাকি ১৭ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন- দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান) তারেক রহমান, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, এমকে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ। এর মধ্যে তরিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার মারা যাওয়ায় আরও তিনটি পদ শূন্য হয়।

সম্প্রতি নতুন দুজনকে অন্তর্ভুক্ত করায় কমিটির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬-তে। ফাঁকা রয়েছে আরও তিনটি পদ। পুরনোদের মধ্যে লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া অসুস্থতার কারণে নিয়মিত সময় দিতে পারছেন না। তারা স্থায়ী কমিটির নিয়মিত বৈঠকে কদাচিৎ অংশ নিচ্ছেন। স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ কমিটি ঘোষণার আগে থেকেই ভারতের শিলংয়ে আছেন। তিনি কমিটির একটি বৈঠকেও যোগ দিতে পারেননি।

একটি সূত্র বলছে, স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য শারীরিক অসুস্থতার কারণে পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ভাবছেন। এ নিয়ে ওই দুই নেতা তাদের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথাও বলেছেন।

সব মিলিয়ে স্থায়ী কমিটিতে ৫ পদ ফাঁকা হচ্ছে। এসব পদে নতুন মুখ আসবে ৭ম কাউন্সিলে।

স্থায়ী কমিটির একটি পদে জিয়া পরিবারের সদস্য ও তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবায়দা রহমানের অন্তর্ভুক্তির দাবি রয়েছে দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হওয়ায় ক্লিন ইমেজের ডা. জোবায়দা দলকে গোছাতে পারবেন বলে ধারণা অনেকের। যদিও এ বিষয়ে জিয়া পরিবার কিংবা বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কোনো নেতা কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তাই অনেকে ধরেই নিয়েছেন জোবায়দা রহমানের এ মুহূর্তে স্থায়ী কমিটিতে আসার তেমন সম্ভাবনা নেই।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আবদুল্লাহ আল নোমান ও আবদুল আউয়াল মিন্টু জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ। তারা বিভিন্ন সময়ে দলের আস্থার মূল্য দিয়েছেন।

গতবার কাউন্সিলের আগেই স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আলোচনায় ছিলেন প্রবীণ নেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম। এ দুজনকে এবারের কাউন্সিলে স্থায়ী কমিটিতে আনা হতে পারে।

বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন স্থায়ী কমিটিতে আসুক এমনটি চাওয়া অনেকের। খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম এ সদস্য ইতিমধ্যে আস্থা অর্জন করেছেন বিএনপি নেতাদের কাছে। বিগত দিনে তিনি সর্বোচ্চ আদালতে বিএনপির হয়ে জোরালো ভূমিকা রেখেছেন।

এ ছাড়া অপর আইনজীবী নেতা সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সহসভাপতি ও দলের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনও গত কাউন্সিলে স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে জোরালো আলোচনায় ছিলেন। এখন তার নামটিও আলোচনায় রয়েছে।

গত কাউন্সিলে আলোচনায় ছিলেন ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ও ড. ওসমান ফারুক। এ দুজনই এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তাই শূন্যপদে তাদের কারোরই অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা নেই।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান জিয়া পরিবারের বিশ্বস্ত। দলের দুর্দিনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন তিনি। তাকে দেখা যেতে পারে স্থায়ী কমিটিতে।

কেউ কেউ বলছেন, কেএম ওবায়দুর রহমান ও অ্যাডভোকেট মাহবুব হোসেনের মৃত্যুর পর বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চল থেকে কাউকে দেখা যায়নি স্থায়ী কমিটিতে। এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে স্থায়ী কমিটিতে ঠাঁই পাওয়ার সম্ভাবনায় রয়েছেন চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ।

বিএনপির গত দুটি কাউন্সিলে দেখা গেছে তরুণ নেতাদের মধ্য থেকে যাদের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও দলের জন্য ত্যাগ আছে তাদের মধ্যে দু’একজনকে স্থায়ী কমিটিতে জায়গা দেয়া হয়। যেমন-ষষ্ঠ কাউন্সিলে তৎকালীন যুগ্ম মহাসচিব মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে সরাসরি পদোন্নতি দিয়ে স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়ে। পরের কাউন্সিলে যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে সরাসরি পদোন্নতি দিয়ে স্থায়ী কমিটিতে জায়গা দেয়া হয়। তাই ধারণা করা হচ্ছে এবারও যুগ্ম মহাসচিব পর্যায়ের দু’ একজনকে স্থায়ী কমিটিতে স্থান দেয়া হবে। এক্ষেত্রে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের স্থায়ী কমিটিতে পদোন্নতি পাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। এ দুজনই দলের জন্য নিবেদিত। তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও কমিটমেন্ট দলের সব পর্যায়ে প্রশংসিত।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে সরকার পরিবর্তন সম্ভব নয়। এ অবস্থায় একমাত্র রাস্তা গণআন্দোলন। সেই গণআন্দোলন করতে হলে দরকার শক্তিশালী সংগঠন।

এজন্য দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। কাউন্সিলের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে সব পর্যায়ে যোগ্য নেতৃত্ব তুলে আনা হবে। সেই প্রস্তুতি আমরা শুরু করেছি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!