• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
গাপটিলের সেঞ্চুরি

বড় হারে নিউজিল্যান্ড সফর শুরু বাংলাদেশের


ক্রীড়া প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯, ০২:৩৭ পিএম
বড় হারে নিউজিল্যান্ড সফর শুরু বাংলাদেশের

ফাইল ছবি

ঢাকা: ২০০১ সাল থেকে নিউজিল্যান্ড সফর করছে বাংলাদেশ। প্রতিবারই ফিরতে হয়েছে রিক্ত হাতে। এবারও বড় হার দিয়েই নিউজিল্যান্ড সফর শুরু করল মাশরাফিরা। তিন ম্যাচ সিরিজের সফরকারীদের দেয়া ২৩৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৩৩ বল হাতে রেখে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। ৮ উইকেটের এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ব্ল্যাক ক্যাপসরা।  

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পেয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশে বোলারদের বিপক্ষে সর্তকই ছিলেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও হেনরি নিকোলস। প্রথম পাওয়ার প্লে’তে বিনা উইকেটে ৪২ রান যোগ করেন তারা। তবে দলের স্কোর শতরানে পৌছে দিতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি তাদের। ২১তম ওভারেই গাপটিল-নিকোলসের ব্যাটিং দৃঢ়তায় শতরানে পৌঁছে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ।

অবশ্য দলীয় ৮৫ রানেই বিচ্ছিন্ন হতে পারতেন গাপটিল-নিকোলস। ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে বাংলাদেশের স্পিনার মিরাজের বলে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান নিকোলস। জীবন পেয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। হাফ-সেঞ্চুরির পরও ঐ মিরাজের ডেলিভারিতেই বোল্ড হন নিকোলস। ৫টি চারে ৮০ বলে ৫৩ রান করেন তিনি। উদ্বোধনী জুটিতে গাপটিলের সাথে ১৩৫ বলে ১০৩ রান যোগ করেন নিকোলস।

এরপর উইকেটে গিয়ে বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। বাংলাদেশের অকেশনাল স্পিনার মাহমুদউল্লাহ’র শিকার হবার আগে ১১ রান করেন তিনি। রিভিউ নিয়ে কিউই অধিনায়ককে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশ।

দলীয় ১৩৭ রানে উইলিয়ামসনকে তুলে নিয়ে ম্যাচ ফেরার স্বপ্ন দেখছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু সেটি হতে দেননি গাপটিল ও রস টেইলর। তৃতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৯৬ রানের জুটি গড়ে নিউজিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন তারা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৫তম সেঞ্চুরির তুলে ১১৭ রানে অপরাজিত থাকেন গাপটিল। তার ইনিংসে ৮টি চার ও ৪টি ছক্কা ছিলো। অপরপ্রান্তে ৬টি বাউন্ডারিতে ৪৯ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন টেইলর। বাংলাদেশের মিরাজ-মাহমুদউল্লাহ ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের গাপটিল।

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নেপিয়ারে প্রথম ওয়ানডেতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। কিন্তু তাঁর এই সিদ্ধান্তকে অকার্যকর বানিয়ে ফেলেন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। টেন্ট্র বোল্ট আর ম্যাট হেনরিকে সামলাতেই তাদের গলদঘর্ম হতে হয়েছে। বাংলাদেশের টপ-মিডল অর্ডারের চার উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন এই দুজন।

দলীয় মাত্র ৫ রানের মাথায় বোল্টের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তামিম ইকবাল। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ১০০ রান ওঠার আগেই চলে যায় ৬ উইকেট।

ব্যক্তিগত ১ রানে হেনরির বলে বোল্ড হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরেন আরেক ওপেনার লিটন দাস, দলের রান তখন ১৯। বোল্টের দ্বিতীয় শিকার দলের আরেক ব্যাটিং স্তম্ভ-মুশফিকুর রহিম। দলীয় ৪২ রানের মাথায় মাত্র ৫ রান করে চলে যান তিনি। শুরুর ধাক্কা খানিকটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সৌম্য সরকার। ২২ বলে ৩০ রানের ছোটখাটো একটা ঝোড়ো ইনিংস খেলে ৪২ রানের মধ্যে তিনিও চলে যান, হেনরির বলে তাঁর হাতেই ক্যাচ দিয়ে।

এরপর শুরু হয় মোহাম্মদ মিঠুনের লড়াই। কখনো যে লড়াইয়ে তাঁকে সঙ্গ দিয়ে গেছেন মাহমুদউল্লাহ, কখনো সাব্বির রহমান, কখনো মেহেদি হাসান মিরাজ। মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির দুজনেই ‘অপয়া’ ১৩ রানে ফিরেছেন। মিঠুনকে সঙ্গ দিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। বিপিএলের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সটা তিনি টেনে নিয়ে গেছেন নিউজিল্যান্ডেও। মিচেল সান্টনারকে অহেতুক মারতে না গেলে ২৭ রানের ইনিংসটা আরো লম্বা করতে পারতেন মিরাজ। ২৬ বলে তিন চার আর এক ছক্কায় তিনি এই রান করেন। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে মিরাজ যখন আউট হন তখন বাংলাদেশের স্কোর ১৩১। এরপর সাইফউদ্দিনকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন মিঠুন। এই দুজন মিলে গড়েন ৮৬ রানের জুটি। যেখানে সাইফউদ্দিনের অবদান ৫৮ বলে ৪১।

তবে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নিতে ভুল করলেন না মিঠুন। কঠিন পরিস্থিতিতে চোয়ালবদ্ধ লড়াই করলেন তিনি। ফার্গুসনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে মিঠুনের ব্যাট থেকে এসেছে ৯০ বলে ৬২। চার মেরেছেন পাঁচটি। মোস্তাফিজের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে ৪৮.৫ ওভারে ২৩২ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।  মাশরাফি অপরাজিত ছিলেন ৯ রানে।  সান্টনার ও বোল্ট নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন ম্যাট হেনরি ও ফার্গুসন।

আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!