• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভক্তদের জন্য গাইবেন মেহরীন


বিনোদন প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৮, ২০২০, ০২:৩৯ পিএম
ভক্তদের জন্য গাইবেন মেহরীন

ঢাকা : এক এক করে ক্যারিয়ারের ২৩টি বছর পার হলো। এই লম্বা সফরে তার সম-সাময়িক বা অনেকেই গান নিয়ে লম্বা রেসের দৌড়ে থমকে গেছেন। কিন্তু সপ্রতিভা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে এখনো সুনাম ও সম্মানের সঙ্গে টিকে আছেন মেহরীন মাহমুদ। মঞ্চ, পরিবার এমনকি মানবতার সেবা— সর্বক্ষেত্রেই তিনি একই রকম। যা করেন ভালোলাগা, ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ থেকে করেন। তাই তো কোনো কিছু থেকে প্রাপ্তি খোঁজেন না। খোঁজার চেষ্টাও করেন না। দেশের অসংখ্য মানুষ তার ভক্ত। এবার মেহরীন শুধু ভক্তদের গান শোনাবেন।

মেহরীন বলেন, ‘ভক্তদের নিয়ে এর আগেও নানা আয়োজন করা হয়েছে। তবে এবারের আয়োজন একেবারেই ভিন্ন। এবার শুধু ১০ জন ভক্তের জন্য গান গাইব। আগামী মাসেই এই অনুষ্ঠানটি হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এরই মধ্যে কনসার্টের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। একেবারে ঘরোয়া একটি আয়োজন। যেখানে শ্রোতা হিসেবে ১০ জন ভক্ত থাকবে। তাদের সামনে গান গাওয়ার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে কথা ও আড্ডা হবে।’

এই ১০ জন ভক্ত কীভাবে চূড়ান্ত করা হবে জানতে চাইলে মেহরীন বলেন, ‘১০ জনকে নির্বাচন করা হবে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে। ফ্যানদের জন্য কিছু কুইজ থাকবে। সঠিক উত্তরদাতার মধ্য থেকে বাছাই করে তাদের চূড়ান্ত করা হবে। কয়েকদিনের মধ্যেই আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হবে আমার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে।’

মেহরীন বর্তমানে ব্যস্ত আছেন স্টেজ শো নিয়ে। পাশাপাশি পপগানের এই শিল্পী নিয়মিত গাইছেন বাংলাদেশ বেতারে।

মেহরীনের আর দশজন কণ্ঠশিল্পীর মতো হুটহাট অ্যালবাম বের করা অথবা হঠাৎ আলোড়ন তুলে আচমকাই নিভে যাওয়ার স্বভাব নেই। তার স্বভাব একটু ভিন্ন মেজাজের। গান গেয়ে বাজারে হইচই ফেলে দিতে হবে, এমনকি টাকা উপার্জন করতে হবে— এমন মনোভাবও কখনো ছিল না তার। তার গানের ভঙ্গি ও গান গাওয়ার ভঙ্গিমাও অনেকটা আলাদা ঘরনার। তাই তো নিজস্ব স্বকীয়তায় অনেকটা বহতা নদীর মতোই এগিয়ে চলছেন তিনি।

পত্রপত্রিকায় বড় বড় খবর আর ছবি প্রকাশের ব্যাপারেও অনাগ্রহ তার। কীভাবে গানের জগতে এলেন এমন প্রশ্নের জবাবে মেহরীন বলেন, ‘আব্বাসউদ্দীন একাডেমির প্রথম ব্যাচের ছাত্রী ছিলাম আমি। তখন থেকে আমার শিক্ষকরা উৎসাহ দিতেন। তারা বলতেন, গানের কোনো নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই। শিল্পী হতে হলে সব ধরনের গান জানতে হবে। আমি ভেবে দেখলাম তাদের কথাই সত্যি। এভাবেই গান গাওয়া শুরু করলাম।’

একজন শিল্পীর গানকে পেশা হিসেবে নেয়া ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখেন মেহরীন। তবে সবক্ষেত্রে বিষয়টি ইতিবাচক নয় বলে মনে করেন তিনি। বলেন, ‘রিয়েলিটি শোয়ের মাধ্যমে যারা উঠে আসছেন তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। কারণ তারা এখন ইউটিউবের প্লাটফর্ম ভালো বোঝেন। নিজেরাই জনপ্রিয় হয়ে আয়ের পথ বের করে নেন। কিন্তু আগের যারা সিনিয়র শিল্পী আছেন, তারা এখনো সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। আজ তারা না পাচ্ছেন অর্থ এমনকি তারা তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু পাচ্ছেন না।’

শিল্পীদের সম্মান, অর্থ-বৈভবসহ নানা প্রসঙ্গ তুললে মেহরীন জানান, ‘আমি বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় কনসার্ট করেছি। সেসব দেশে শিল্পীদের বেশ মর্যাদা দেওয়া হয়। বিশেষ করে এমআইপি (মোস্ট ইমপোর্ট্যান্ট পারসন) সুবিধা দেওয়া হয়। সরকার থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন শিল্পীরা। বাংলাদেশে কয়েক খাতে এরকম প্রথা থাকলেও শিল্পীদের ক্ষেত্রে এরকম কোনো সুবিধা নেই। আমি মনে করি, এরকম ব্যবস্থা করা দরকার। অন্যরা পেলে আমরা কেন পাব না। আমরাও তো মানুষের জন্য, দেশের জন্য গাই।’

গানের পাশাপাশি সামাজিক উদ্যোগের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন তিনি। নেমে পড়েছেন দৃষ্টিহীনদের চোখের দৃষ্টি প্রদীপ জ্বালাতে। নিজেও মরণোত্তর চক্ষুদান করেছেন। ‘সন্ধানী’র সহযোগিতায় দেশের নানা প্রান্তে ছুটে যাচ্ছেন ‘আই ক্যাম্প’ নিয়ে। এছাড়া ‘উইমেনস ফেডারেশন ফর ওয়ার্ল্ড পিসে’র বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মেহরীন। সংগঠনটির প্রতিনিধি হয়ে তিনি দাঁড়াচ্ছেন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে। মেহরীন বলেন, ‘আমার ইচ্ছা সবসময়ই কোনো না কোনোভাবে নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাদের অসুবিধাগুলো দূর করা। এজন্য আমাদের একটি স্কুল কর্মসূচি রয়েছে। এর আওতায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পড়াশোনা করানোসহ নানা ধরনের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হয়।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!