• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভবিষ্যতে বাংলাদেশেও গোলাপি টেস্ট হবে বললেন আকরাম খান


রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ নভেম্বর ২০, ২০১৯, ১০:১৭ পিএম
ভবিষ্যতে বাংলাদেশেও গোলাপি টেস্ট হবে বললেন আকরাম খান

ঢাকা: বুধবার সন্ধ্যা বেলায় আকরাম খানকে যখন ফোনে ধরা হলো তখন তাঁর রাজ্যের ব্যস্ততা। কলকাতার ফ্লাইট ধরবেন বলে ব্যাগ-ট্যাগ গোছাচ্ছেন। ফোন পেয়ে বলে দিলেন ১৫ মিনিট বাদে ফোন করতে। গাড়িতে বসে কথা বলবেন। খানিকবাদে ফোন করতেই ওপ্রান্ত থেকে বলে উঠলেন,‘ আমি এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিতরে ঢুকে পড়ব।’ কন্ঠ শুনে মনে হলো তিনিও ইডেনের গোলাপি টেস্টের উত্তেজনায় কাঁপছেন,‘ দেখুন, এ রকম একটা ঐতিহাসিক টেস্টে সৌরভ (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়) আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রথমবার গোলাপি বলে টেস্ট খেলব আমরা। ভারতের জন্যও প্রথম। রোমাঞ্চকরই হবে।”গাড়িতে বসে বসে বলছিলেন আকরাম।

২০০০-র ১০ নভেম্বর যেদিন বাংলাদেশ ঐতিহাসিক টেস্ট খেলতে নামল সেদিনও  দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা ছিলেন আকরাম খান। বাংলাদেশের ক্রিকেটের অনেক প্রথমের সাক্ষি এই বিগম্যান। ১৯৯৭ সালে তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশ বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছিল। সেই টূর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে হল্যাণ্ডের বিপক্ষে আকরামের অপরাজিত ৬৮ রানের ইনিংসটি তাঁকে অমরত্ব দিয়েছে। বৃষ্টির কবলে পড়া সেই ম্যাচে ১৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫ রানের মাঝে ফিরে গিয়েছিলেন টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান-আতাহার আলী খান, নাঈমুর রহমান দূর্জয়, সানোয়ার হোসেন ও আমিনুল ইসলাম বুলবুল। রেডিওতে ধারাভাষ্য শুনে গোটা বাংলাদেশেকেই বিষাদ ছুঁয়েছিল। এবারও বিশ্বকাপ খেলা হবে না ভেবে মুষড়ে পড়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু একজন তখনও বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন আঁকছিলেন। তিনি আকরাম খান। বাংলাদেশকে প্রথমবার নিয়ে গেলেন 

বিশ্বকাপের চৌহদ্দিতে। দেখতে দেখতে চলে এল  ১৯৯৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। নর্দাম্পটনে পাকিস্তানকে মাটি ধরানোর ম্যাচে আকরামের ব্যাট থেকেই এল সর্বোচ্চ ৪২ রান। তারপর ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট খেলে ফেলল বাংলাদেশ। সেই স্মৃতি এখনো জীবন্ত আকরামে কাছে। তিনি বলছিলেন,‘ ওটা ছিল আমাদের জন্য গর্বের। প্রথম ইনিংসে ৪০০ রান করার পর শচীন টেন্ডুলকার এসে বলছিল ‘তোমরা ভালো খেলেছো’।” 

আকরাম খান এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান। সৌরভের সঙ্গে আগে থেকেই বন্ধুত্ব। সদ্যই আবার ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি হয়েছেন কলকাতার ‘মহারাজা’। বন্ধুর আমন্ত্রণে সবার আগেই কলকাতা ছুটে গেলেন আকরাম। যাবার বেলায় তিনি বলে গেলেন,‘ ইডেনে আমাদের অভিষেক টেস্টের গোটা দলকে আমন্ত্রণ জানানোয় সৌরভকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ও আমাদের সম্মান দেখিয়েছে। ইডেনে আমিও খেলেছি। ১৯৯০-এর এশিয়া কাপে আমরা খেলেছিলাম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।’

দিবারাত্রীর টেস্ট ঘিরে গোটা ভারতই রোমাঞ্চিত। যা খবর, টেস্টের প্রথম চারদিনের টিকিট নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা ফেরাতেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বিসিসিআইয়ের  সভাপতি হওয়ার পরই দিনরাতের টেস্ট চালুর পদক্ষেপ নিয়েছেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মাটিতেও কী দেখা যাবে দিনরাতে গোলাপি বলের টেস্ট? আকরাম বললেন,‘ সৌরভই আমাদের ফোন করে বলেছে। তাছাড়া ও আমাদের অনেক হেল্প করেছে। আমরা রাজি হয়ে গিয়েছি। তাছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও যাচ্ছেন টেস্ট দেখতে। সবকিছু মিলিয়ে দারুন হবে গোলাপি বলের টেস্ট। ওখানে গিয়ে দেখি। ভবিষ্যতে দিনরাতের টেস্ট আয়োজনের ব্যাপারে আমরাও চেষ্টা করব। কবে নাগাদ হতে পারে তা এখনই বলতে পারছি না।” 

বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় কর্তারা এর মাঝেই জেনে গেছেন ইডেন টেস্টের প্রথম চারদিনের কোনো টিকিটই আর অবশিষ্ট নেই। সাদা পোশাকের ক্রিকেট নিয়ে যখন ভক্ত-সমর্থকদের অনীহা তখন দিনরাতের ইডেন টেস্ট রোমাঞ্চ নিয়ে হাজির। আর এই রোমাঞ্চের এক অংশে বাংলাদেশও রয়েছে। তাই দিনরাতের টেস্ট আয়োজন যে এখন সময়ের দাবি সেটি বুঝতে ক্রিকেট বোদ্ধা হওয়ার দরকার আছে কী?

সোনালীনিউজ/আরআইবি/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!