• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত হারছে দেখে ইডেনে আগুন লাগিয়ে লঙ্কাকা- বাঁধালেন দর্শকরা!


রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ মে ১৯, ২০১৯, ০৮:৪২ পিএম
ভারত হারছে দেখে ইডেনে আগুন লাগিয়ে লঙ্কাকা- বাঁধালেন দর্শকরা!

ছবি সংগৃহীত

ঢাকা: ১৯৯৬ বিশ্বকাপে ভারত ছিল অন্যতম ফেভারিট। এমনকি সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়নদের তালিকায়ও নাম ছিল মোহাম্মদ আজহার উদ্দিনের দলের। এর কারণ ঘরের মাঠ আর চেনা কন্ডিশন। ভারতীয়দের স্বপ্ন আরও বড় হলো বেঙ্গালুরুতে কোয়ার্টার ফাইনালে চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারানোর পর। গোটা ভারতবর্ষ ধরেই নিয়েছিল কলকাতার ইডেন গার্ডেনে সেমিফাইনাল জিতে তারা লাহোরে যাচ্ছেন ফাইনাল খেলতে। এমন বাস্তবতায় ইডেন গার্ডেনে সেমিফাইনালের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারত মুখোমুখি হলো শ্রীলংকার। কিন্তু ম্যাচটি হেরে স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনায় পুড়ল ভারতীয়রা।

ইডেন গার্ডেন্সে টস জিতে মরা পিচে সবাইকে অবাক করে দিয়ে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আজহার। এ নিয়ে  তাকে সংবাদমাধ্যম ও সাবেক ক্রিকেটারদের তোপের মুখেও পড়তে হয়। তবে শুরুতেই আজহারের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করেন জাভাগাল শ্রীনাথ। স্কোরবোর্ডে ১ রান উঠতেই তিনি ড্রেসিংরুমের পথ দেখান দুর্ধর্ষ ওপেনিং জুটি সনাথ জয়াসুরিয়া এবং রুমেশ কালুভিতারানাকে। ৩৫ রানে গুরুসিনহাকে ফিরিয়ে আবার আঘাত হানেন শ্রীনাথ। তখন রীতিমতো কাঁপছিল লঙ্কান শিবির। আর ইডেনের গ্যালারি ফুটছিল টগবগ করে।

এরপর পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা অরবিন্দ ডি সিলভা ৪৭ বলে ৬৬ রানের দারুন এক ইনিংস খেলে দিয়ে যান। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে ৫৮ রানের সলিড ইনিংস খেলেন রোশান মহানামা। অধিনায়ক অর্জুুনা রানাতুঙ্গা ৩৫ এবং হাসান তিলকারতেœ ৩২ রান করলে ২৫১/৮ রানের পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা। ৩৪ রানের বিনিময়ে শ্রীনাথ ৩টি এবং শচীন টেন্ডুলকার নিয়েছিলেন ২টি উইকেট।

২৫১ রান তাড়া করতে গিয়ে যেমন শুরুর দরকার ছিল ভারতের ঠিক তেমনই হয়েছিল টেন্ডুলকারের  সৌজন্যে। ৯৭/১।  এখান থেকে টেন্ডুলকার (৮৮ বলে ৬৫) জয়াসুরিয়ার  বলে স্ট্যাম্পড হওয়ার পরপরই মোড়ক লেগে যায় ভারতের ইনিংসে। মাত্র ২৩ রানের মধ্যে তাদের শেষ ৭ উইকেট হারাতে হয়। ৩৪.১ ওভারে ১২০ রানে নেই ভারতের ৮ উইকেট। বিনোদ কাম্বলি তখনও অপরাজিত ১০ রানে।
 

ভারতের কান্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে মাথায় রক্ত উঠে যায় ইডেনে উপস্থিত হাজার হাজার দর্শকের! চোখের সামনে এমন জঘণ্য পরাজয় আসছে জেনে কিছুতেই মেনে  নিতে না পেরে খেলা শেষ না হতেই তারা মাঠে বোতল ছুরতে থাকে। শুধু তা-ই নয় কিছু উচ্ছৃঙ্খল দর্শক গ্যালারির কয়েকটি আসনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ অবস্থায় খেলা বন্ধ করে দেন ম্যাচ রেফারি ক্লাইভ লয়েড। শেষ পর্যন্ত আর খেলাই শুরু হতে পারেনি। বিজয়ী ঘোষণা করা হয় শ্রীলঙ্কাকে।

খেলা বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত এক প্রান্তে ২৯ বলে ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন টেন্ডুলকারের সবচেয়ে কাছের বন্ধু কাম্বলি। দাঁড়িয়ে থেকে তিনি দেখেছেন সতীর্থদের যাওয়া-আসার মিছিল আর একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু। পরে চোখের জলে মাঠ ভিজিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন কাম্বলি। সেদিনের কথা এখনও ভোলেননি তিনি,‘ আমি কেঁদেছিলাম কারণ আমি ভেবেছিলাম দেশের জন্য কিছু করার এটাই সুযোগ। সেদিন দলের প্রায় সবাই কেঁদেছিলেন। বিশ্বকাপ জেতা শুধু টেন্ডুলকার এবং অন্য ক্রিকেটারদেরই স্বপ্ন ছিল না, সেটা আমারও ছিল। আজও আমার সে কথা মনে পড়লে চোখ দিয়ে পানি পড়ে।’

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!