• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী


ক্রীড়া ডেস্ক অক্টোবর ১৪, ২০১৯, ১০:৩০ এএম
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী

ঢাকা: শতকোটি জনপদের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ কর্তা হচ্ছেন প্রিন্স অব কলকাতা। দশ মাসের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতেও বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলীকে নিয়ে আলোচনা চলে। তখন স্বয়ং কলকাতার মহারাজাই জানালেন, এখনই বোর্ডের দায়িত্ব নেওয়ার যোগ্যতা হয়নি, বেশি দিন হয়নি বাংলা ক্রিকেটের দায়িত্বে আছেন তিনি। আবার দুই মাস আগে ভারতীয় দলের কোচের পদ নিয়েও গুঞ্জন উঠে। তবে সৌরভ তাতে রাজি হননি। আসলে আরও বড় কিছুর অপেক্ষায় ছিলেন মহারাজা। আর সেটাই হলো।

রবিবার (১৩ অক্টোবর) মুম্বাইয়ে বেসরকারি সভাতে নাটকীয় উত্তেজনা কম হয়নি। এ যেন সৌরভ গাঙ্গুলীর ক্রিকেট জীবনের মতো। ক্রিকেটের ময়দানে সবসময়ই হার না মানা মানসিকতায় ছিলেন সৌরভ।  বোর্ড প্রেসিডেন্ট নিয়ে নাটকীয়তা শুরু হলেও দমে যাননি তিনি। কে জানত অবসরের এতকাল পরে ভারতীয় বোর্ডের প্রশাসক হিসেবে ফিরিয়ে আনা হবে দেশের প্রিয় অধিনায়ককেই।!

মুম্বাইয়ে বোর্ডের বেসরকারি সভায় নতুন প্রেসিডেন্ট হওয়ার ব্যাপারে প্রথমে গাঙ্গুলী ছিলেন আলোচনায়। পরে হঠাৎই সম্ভাবনা মিলিয়ে যেতে থাকে। ভারতের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে দশটায় খবর আসে সৌরভের কোনো আশা নেই। তিনি প্রেসিডেন্ট বা সচিব কিছুই হচ্ছেন না। নতুন বোর্ড প্রেসিডেন্ট হবেন শ্রীনিবাসন সমর্থিত ব্রিজেশ প্যাটেল। তিনিও সাবেক ক্রিকেটার এবং কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থার প্রধান ছিলেন দীর্ঘদিন। আর ক্রিকেট বোর্ডের নতুন সচিব হচ্ছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের ছেলে জয় শাহ। তিনিও গুজরাট ক্রিকেট সংস্থায় অনেক দিন ধরেই গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন।

অথচ একদিন আগেও নয়াদিল্লিতে সৌরভ যখন অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করে বেরিয়ে আসেন, তখন ঠিক ছিল সৌরভই প্রেসিডেন্ট হবেন, অমিত-পুত্র জয় হবেন সচিব। আর ব্রিজেশ বড় জোর হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। প্রায় হেরে যাওয়া লড়াই হঠাৎ সৌরভই বাঁচিয়ে তোলেন এগারোটার সময়। মুম্বাই থেকে হঠাৎই জানা যায় বোর্ডের প্রভাবশালী মহল পুনরায় চিন্তাভাবনা শুরু করেছে প্রেসিডেন্ট পদ নিয়ে। কারণ বোর্ড সদস্যদের মতে ব্রিজেশের চেয়ে গাঙ্গুলী অনেক যোগ্য প্রার্থী। ক্রিকেটার হিসেবে তো তুলনাই চলে না। আর প্রশাসক হিসেবে পাঁচ বছর দায়িত্ব কম নয়। এ যেন ফলোঅনে পড়ে দলকে জেতানোর মতো, যে নজির সৌরভ ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইডেন গার্ডেন্সে করেছিল।

জগমোহন ডালমিয়ার পরে সৌরভই বাংলা থেকে ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান কর্তা হতে যাচ্ছেন। দশ মাসের জন্য যে তিনি বোর্ড প্রেসিডেন্ট হবেন এবং তার পরে তিন বছরের বাধ্যতামূলক ‘কুলিং অফে’ চলে যেতে হবে, তা মেনে নিতেও আপত্তি নেই।

সৌরভকে নিয়ে যে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল মাঝে তা হচ্ছে এখনই রাজনৈতিক কোনো চুক্তিতে রাজি হননি সৌরভ। তাই ক্ষমতার বিনিময়ে দশ মাস পরে কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে অঙ্গীকার করতে রাজি হননি তিনি। এতে শ্রীনিবাসনের প্রার্থী এগিয়ে যেতে থাকে। তবে এসব গুঞ্জনকে পাশ কাটিয়ে ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে পরাক্রমশালী বোর্ডের প্রধান হচ্ছেন ভারতের সবশেষ বাঙালি অধিনায়ক। নতুন সচিব হবেন অমিত শাহর ছেলে জয় আর ব্রিজেশ হচ্ছেন আইপিএলের নতুন চেয়ারম্যান।

আজহার উদ্দিনের পর অধিনায়ক হিসেবে সৌরভের হাত ধরে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কালো অধ্যায় থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট। এবার শ্রীনিবাসনদের অপশাসনে চূর্ণ-বিচূর্ণ হতে বসেছিল বোর্ড, সাধারণ মানুষের আস্থাই চলে গিয়েছিল প্রশাসকদের উপর থেকে। অবশেষে নিস্তার পেল ভারতীয় ক্রিকেট তাদের সাবেক অধিনায়ককে পেয়ে। সৌরভ যে হারতে হারতেও জিতলেন আর শ্রীনিবাসন-সমর্থিত ব্রিজেশ জিততে জিততেও হারলেন, আসলে জয় হলো ক্রিকেটের। গাঙ্গুলী বিসিসিআইয়ের প্রধান হওয়া মানেই বাংলার দায়িত্ব আসবে নতুন কারো হাতে। সম্ভাব্য প্রাথী হিসেবে উঠে এষেছে অভিষেক ডালমিয়া, বাবলু কোলে ও সৌরভের বড় ভাই স্নেহাশিষ গাঙ্গুলীর নাম।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/এএস

Wordbridge School
Link copied!