• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভুল মানুষকে বিয়ে করতে চাই না


বিনোদন প্রতিবেদক আগস্ট ১২, ২০১৮, ০৯:৫১ পিএম
ভুল মানুষকে বিয়ে করতে চাই না

ঢাকা : জয়া আহসান, বাংলেদেশের একজন অভিনেত্রী। তিনি বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতীয় বাংলা সিনেমায় অভিনয় করে থাকেন। সদ্য মুক্তি পেয়েছে জয়ার অভিনীত ‘ক্রিসক্রস’। নিজের প্রযোজনা সামলে তিনি প্রস্তুত হচ্ছেন ‘বিজয়া’র মুক্তির জন্য।

হাজার ব্যস্ততার ফাঁকে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘এবেলা’কে সাক্ষাতকার দিয়েছেন জয়া। সাক্ষাতকারটি সোনালীনিউজ-এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

প্রশ্ন : ক্রিসক্রস’তে অন্যের নাকচ করা চরিত্র করতে রাজি হলেন কেন?

উত্তর : আমার কাছে যখন চরিত্রটা এসেছিল, তখন সেটার অনেক ঘষা-মাজা হয়ে গিয়েছে। স্ক্রিপ্ট পড়ে মনে হয়েছিল, ছবিটা করা যায়। আর যিনি চরিত্রটা নাকচ করেছেন, তিনি অনেক সিনিয়র অভিনেত্রী। আমার খুব পছন্দেরও। তিনি রাজি নাই হতে পারেন। তবে সেটা আমার কাছে কোনও সমস্যার বিষয় মনে হয়নি।

প্রশ্ন : মিস্‌ সেন’কে তো দর্শকের তেমন পছন্দ হবে না...

উত্তর : সেটাই তো চেয়েছিলাম! চরিত্রটা যেহেতু একটু ধূসর, তাই করার ইচ্ছেটা বেশি ছিল। ছবির কাস্ট যত বড়ই হোক, আমার তাতে কোনোদিনই অসুবিধে হয়নি। তবে চরিত্রে এমন কিছু থাকতে হবে, যেখানে অভিনয়ের একটা জায়গা থাকবে। এই ছবিতে মনে হয়েছিল, সেই জায়গাটা পাব।

প্রশ্ন : বিজয়া’ নিয়ে আশাবাদী?

উত্তর : যখন কোনও ছবিতে অভিনয় করি, সে সময় নিজের সেরাটা দিই। প্রত্যেকটা চরিত্রের সঙ্গে আমার খুব মায়া-মমতা জড়িয়ে থাকে। কিন্তু কাজটা শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেটা নিয়ে আমি আর একদম ভাবি না। কারণ জানি, তখন অনেক কিছু আমার হাতে থাকবে না। সম্পাদনা, সংগীত অনেক রকম ব্যাপার যোগ হয়। মালাটা কীভাবে গাঁথা হচ্ছে, সেটা বেশি জরুরি হয়ে পড়ে। তবে এটুকু বলতে পারি, ‘বিজয়া’য় অভিনয় করার সময় আমি সেভাবে কিছু বুঝতে পারিনি যে, ছবিটা কেমন হতে চলেছে। কিন্তু সম্প্রতি ছবির ডাবিং দেখা পর থেকে আমার বেশ এক্সাইটেড লাগছে। দেখে মনে হল, ছবিটা ‘বিসর্জন’এর চেয়েও অনেক বেশি ঘটনাবহুল। আশা করছি, দর্শকের ভালই লাগবে।

প্রশ্ন : আপনার প্রযোজিত ‘দেবী’র মুক্তি তো এগিয়ে এল?

উত্তর : হ্যাঁ। ‘দেবী’ ছাড়াও আরও কিছু ছবির মুক্তি পাওয়ার কথা।

প্রশ্ন : আপনার ছবিগুলো কলকাতার মানুষ দেখতে পাবেন?

উত্তর : ইচ্ছে তো ছিল দু’দেশেই মুক্তি পাক ছবিগুলো। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সে বিষয়ে খুব একটা কিছু করে উঠতে পারিনি। আসলে দু’দেশের ব্যাপার তো। দুই বাংলা হলে অন্য কথা ছিল। আমার দেশের রাজধানী ঢাকা। এখানে দিল্লি। আর দিল্লির মসনদে যারা বসে আছেন, তারা কেউ বাঙালিদের আবেগ বুঝতে পারবেন না, তাদের বোঝার দায়ও নেই। বুঝলে তো গোটা বিষয়টা অনেক সহজ হয়ে যেত।

প্রশ্ন : প্রযোজক হিসেবে তো আপনার কর্তব্য এখন অনেক বেড়ে গেছে?

উত্তর : তা বলতে পারেন। সব কিছু নিজে হাতে করতে হচ্ছে। আসলে আমাদের দেশে স্ট্রাকচারটা এখানকার চেয়ে অনেকটাই আলাদা। আন্তরিকতাটা থাকলেও এতটা পেশাদার চিন্তাধারা এখনও গড়ে ওঠেনি। আমি কোনোদিন ভাবিনি, স্পনসরদের সঙ্গে আমায় কথাবার্তা বলতে হবে। আমার আবার ব্যবসায়িক বুদ্ধি খুবই খারাপ। একদম মাথা কাজ করে না। আগ্রহই নেই। অনেক সময় ভুলভাল বলে দিই।

প্রশ্ন : ওখানে প্রচারের পিছনে এতটা বাজেট থাকে?

উত্তর : আমি অন্তত চেষ্টা করছি। যেমন ‘দেবী’ থিমের উপর ওখানকার একটা নামকরা স্টোরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একটা কস্টিউম লাইন লঞ্চ করা হবে। সেগুলো দেখছি, অনেকেরই পছন্দ হচ্ছে। কালেকশনটা খুব সুন্দর হয়েছে।

প্রশ্ন : অভিনেত্রী না প্রযোজক, কোন ভূমিকাটা বেশি ভালো লাগছে?

উত্তর : আমি তো ‘দেবী’তে অভিনয়ও করেছি। অভিনয়ের সময়ে সকলকে বলে দিয়েছিলাম, কোনও রকম সমস্যা নিয়ে আমার কাছে যেন একেবারে না আসে। তখন শুধু মাথা ঠান্ডা রেখে অভিনয়টা করার চেষ্টা করেছি। একবারের জন্যও ভাবিনি, আমি প্রযোজক। আসলে কী বলুন তো, দু’টো কাজ একসঙ্গে হয় না।

প্রশ্ন : সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘শাহজাহান রিজেন্সি’ ছেড়ে দিলেন?

উত্তর : চরিত্রটা তৈরি হওয়ার পর দেখলাম, একটু বেশিই এক্সপোজার রয়েছে। সেটা আমার পক্ষে এই মুহূর্তে না করাই ভাল।

প্রশ্ন : তার মানে লোকে কী বলবে, সেটাই বেশি প্রাধান্য পেল? চাপের মুখে সরে গেলেন?

উত্তর : সেটা নয়। আমি সবকিছুতে আসলে স্বচ্ছন্দ নই। এক রকমভাবে বড় হয়েছি তো। তাছাড়া বাংলাদেশের দর্শকের কথাও মাথায় রাখতেই হবে। আই নো মাই লিমিট্‌স। আমি তো জানি, আমি কতটা পারব। কাজটা করব, আবার পরিচালককেও জ্বালাব বলব এটা করব না, ওটা করব না, সেটা তো ঠিক নয়। তার চেয়ে এমন কেউ করুক, যে চরিত্রটা জাস্টিফাই করতে পারবে।

প্রশ্ন : শোনা যাচ্ছে, পরিচালকও নাকি আপনাকে খুব জ্বালাচ্ছিলেন। সেই কারণেই চরিত্রটা ছেড়ে দিলেন?

উত্তর : একদম নয়। এগুলো সব বাজে কথা। সৃজিত আমায় কেন জ্বালাবে। আমরা দু’জনে বসে, পুরো বিষয়টা আলোচনা করে সিদ্ধান্তটা নিয়েছি। আমার সমস্যাটা বলার পর সৃজিত বুঝেছিল।

প্রশ্ন : আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তো দু’দেশেই দারুণ কৌতূহল?

উত্তর : কী করি বলুন! ইট কাম্‌স উইথ দ্য প্যাকেজ।

প্রশ্ন : কিছু জিনিস আপনি পরিষ্কার করে বলে দিলে, তো এই গুজবগুলো কমে যাবে...।

উত্তর : কী কথা বলুন তো?

প্রশ্ন : যেমন, খুব তাড়াতাড়ি নাকি আপনার বিয়ে?

উত্তর : সেটাও তো শোনা কথা (হাসি)। গুজব তো গুজবই। এগুলো নিয়ে কী বলব বলুন তো। তবে যখন বিয়ে করব, তখন সেটা নিশ্চয়ই সবাই জানতে পারবেন।

প্রশ্ন : টালিউড থেকে নাকি বিয়ের প্রস্তাবের কমতি হচ্ছে না?

উত্তর : সেটাই স্বাভাবিক নয় কি? বিয়ের তো বয়স হচ্ছে, বলুন। বিয়ের প্রস্তাব পাওয়াটা তো ভাল কথা।

প্রশ্ন : পাত্র কি পছন্দ হল না?

উত্তর : আসলে বিয়ের কথা সেভাবে এখনও ভাবিনি। একটা ভয় কাজ করে। অনেকদিন ধরে তো স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করছি। তাই ভয়টা আরও বেশি। একবার বিয়ে করে যদি, দু’জনের মিল না হয়, তখন কী হবে। আমি চাই, যখন বিয়েটা করব, তখন সেটা ভেবেচিন্তেই করব। বিয়েটা দীর্ঘস্থায়ী হোক, সেটাই আমার সবচেয়ে বড় চেষ্টা থাকবে। তাই ভুল মানুষকে বিয়ে করতে চাই না।

প্রশ্ন : দু’দেশে চুটিয়ে কাজ করছেন। এতে ব্যক্তিগত জীবনে ক্ষতি হয় না?

উত্তর : মা’কে সময় দিতে পারি না বলে একটা অপরাধবোধ কাজ করে। তার চেয়েও খারাপ ব্যাপার হল, নিজেকে সময় দিতে পারি না। তবে আশা করি, সব সামলে নিতে পারব ভবিষ্যতে। এত ব্যস্ততার মাঝেও কিন্তু আমি বেড়িয়ে নিচ্ছি। ওটা না হলে চলবে না।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!