• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভুলে ভরা স্মার্ট কার্ডের সংশোধনী জরুরি


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ৬, ২০১৬, ০৫:১৯ পিএম
ভুলে ভরা স্মার্ট কার্ডের সংশোধনী জরুরি

দেশের নাগরিকদের পরিচিতি তথ্য সংরক্ষণে জাতীয় পরিচয়পত্র নিঃসন্দেহে একটি কার্যকর বিষয়। যা এখন করা হচ্ছে ডিজিটাল। স্মার্ট কার্ড হিসেবে পরিচিত এই পরিচয়পত্র দিতে গিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতি, অবহেলা আর অযত্নের মত নানা অভিযোগ। যাতে করে সরকারের এই ভালো উদ্যোগ সম্পর্কে দিয়েছে নেতিবাচক ধারণা। এই কার্ড পেতে গিয়ে নাগরিকরা হচ্ছেন নানা ঝামেলার সম্মুখীন। অনেকেরই কার্ডে থাকছে নাম ভুল, কারো জন্ম তারিখ ভুল, আবার কারো কারো বাবা-মার নাম বা ঠিকানায় ভুল। এত ভুলের পরও কার্ড নম্বর নিয়ে থাকছে বড় ধরনের সমস্যা। আগের এনআইডি কার্ডের ১৭ ডিজিটের নম্বরের পরিবর্তে এখন একই ভোটারের স্মার্ট কার্ডে ১০ ডিজিটের নম্বর দেয়া হচ্ছে। কারণ মূল ডাটাবেজে স্মার্ট কার্ডের ১০ ডিজিটের নম্বর আপডেট করা হয়নি। ফলে ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন সেবা পেতে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ছেন কার্ডধারীরা। নাগরিকত্ব পরিচয়ের অনন্য দলিল স্মার্ট কার্ড। কাগজে তৈরি জাতীয় পরিচয়পত্র ছেড়ে মেশিন রিডেবল স্মার্ট কার্ডের সূচনা নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কিন্তু এত ভুলে ভরা এই স্মার্ট কার্ড পদে পদে বিড়ম্বনা ছাড়া ব্যবহারকারীর  আর কোনো কাজেই আসবে না।      

দেশে বর্তমান ভোটার সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি। আট বছর আগে প্রথমবারের মতো আট কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৮ নাগরিক লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন। কিন্তু এ কার্ড নিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি জালিয়াতি চালিয়ে আসছিল।  মেশিন রিডেবল স্মার্ট কার্ডে এ জালিয়াতি সম্ভব নয়। এর নিরাপত্তায় পঁচিশ ধরনের আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজিত রয়েছে। আয়করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর পাওয়া, শেয়ারে আবেদন ও বিও হিসাব খোলা, ড্রাইভিং লাইসেন্স করা ও নবায়ন, ট্রেড লাইন্সেস করা, পাসপোর্ট করা ও নবায়ন, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, চাকরির আবেদন, স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক হিসাব খোলা, নির্বাচনে ভোটার শনাক্তকরণ, ব্যাংক ঋণ, ভাতা উত্তোলন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, আসামি ও অপরাধী শনাক্তকরণ, ফোন ও মোবাইলের সংযোগ ইত্যাকার কাজে ব্যবহƒত হবে  এই কার্ড। নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য একজন নাগরিকের বায়োমেট্রিক ফিচার যথা ১০ আঙুলের ছাপ, হাতের ছাপ, তালুর ছাপ,  চোখের মণির ছবি, ডিএনএ, কণ্ঠস্বর ও স্বাক্ষর সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। এ প্রক্রিয়াটি গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রক্রিয়ায় ১০  কোটি নাগরিককে স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করার কাজটি নিঃসন্দেহে জটিল ও সময়সাপেক্ষ। নতুন স্মার্ট কার্ড ইস্যুর সময় অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে সংশ্লিষ্টরা শিক্ষা নেবেন এমনটাই প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল এবারও আগেরবারের পুনরাবৃত্তিই ঘটছে।

স্মার্ট কার্ড ইস্যু এবং বিতরণের এ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি আরো সুপরিকল্পিত ও সমন্বিত ব্যবস্থাপনায় হওয়া উচিত। নির্ভুল তথ্য সংরক্ষণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। বিতরণ পদ্ধতি সহজ করতে হবে, ভালোমতো প্রচারণা চালাতে হবে।  আর স্মার্ট কার্ড সংশোধন পদ্ধতিও যথাসম্ভব সহজ করা উচিত, যাতে মানুষকে কম ভোগান্তি পোহাতে হয়। আর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো স্মার্ট কার্ডের তথ্য এনআইডি সার্ভারে দ্রুততম সময়ে আপডেট করা। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ  কার্ডধারীদের বিড়ম্বনা থেকে রক্ষার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা     

 

Wordbridge School
Link copied!