• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
বাংলাদেশের মানবসম্পদ

ভূমিকা রাখতে হবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২, ২০১৬, ১১:০৯ এএম
ভূমিকা রাখতে হবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়

যেকোনো দেশের বড় সম্পদ দক্ষ জনশক্তি। মানবসম্পদের সঠিক ব্যবহার একটি দেশের চিত্রই বদলে দিতে পারে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপির মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বাংলাদেশের অতুল সম্ভাবনার ইঙ্গিত। বাংলাদেশের মোট জনশক্তির ৬৬ শতাংশ কর্মক্ষম।

আগামী ১৫ বছরের মধ্যে এই সংখ্যা হবে মোট জনশক্তির ৭০ শতাংশ। কর্মক্ষম মানুষের এই সংখ্যা বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে পারে অমিত সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে। তার জন্য এখন থেকেই বাংলাদেশকে প্রস্তুতি নিতে হবে। দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে গড়ে তুলে দেশেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারলে সংকট কাটিয়ে উঠে অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াবে বাংলাদেশ।

২০১২ সাল থেকে জনসংখ্যার বোনাসকালে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। বলা হয়ে থাকে, এ-জাতীয় সুযোগ যেকোনো দেশের জন্য একবারই আসে। কাজেই এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। ইউএনডিপির ‘শেপিং দ্য ফিউচার : হাউ চেঞ্জিং ডেমোগ্রাফিকস ক্যান পাওয়ার হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক মানবসম্পদ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দিকও তুলে ধরে বলা হয়েছে। এ দেশের কর্মরত মানুষের ৮০ শতাংশের দৈনিক উপার্জন চার ডলারের কম। এই উপার্জন কিভাবে বাড়ানো যায়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

দেশের জনশক্তির একটি বড় অংশ বিদেশে চলে যায়। তাতে দেশে রেমিট্যান্স এলেও অদক্ষতার কারণে এই জনশক্তির একটি বড় অংশ স্বল্প মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য হয়। জীবনধারণের জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল মানুষের হার কমে এলেও তা আশাব্যঞ্জক নয়। এই হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হলে পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে হবে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থাই পারে একটি দেশের জনগোষ্ঠীকে কর্মোপযোগী ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে। কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি দেশের বেসরকারি সাহায্য সংস্থাগুলো কাজ করতে পারে। বিশ্বের অনেক দেশেই বেসরকারি সাহায্যকারী সংস্থাগুলো সরকারের সহযোগী হিসেবে পাশাপাশি কাজ করে থাকে। বাংলাদেশের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো সরকারের সহযোগী হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে পারলে দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। একই সঙ্গে প্রয়োজন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। এ জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দেশের অভ্যন্তরে নতুন নতুন উৎপাদনমুখী শিল্প গড়ে তুলতে হবে। তাতে অর্থনীতির চাকা যেমন সচল থাকবে, তেমনি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

জনশক্তির বোনাসকালে যুক্ত হয়ে জনসংখ্যাতাত্ত্বিক সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি এমন দেশের সংখ্যা খুব কম। আমরা আশা করতে পারি, বাংলাদেশও এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবে। সব শ্রেণির জন্য কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে দেশের জনশক্তি কর্মক্ষম ও দক্ষ হয়ে গড়ে উঠবে। এর জন্য যে পরিকল্পনা ও উন্নয়নকৌশল প্রয়োজন, বাংলাদেশ তা প্রণয়ন করে এগিয়ে যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুশাসন নিশ্চিত করার ভেতর দিয়ে এই লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে না বলেই আমরা মনে করি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!