• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
রমজানের বাজারদর

ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করুন


দ্বীন ইসলাম আরিয়ান ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০, ১২:১১ পিএম
ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করুন

ঢাকা : এ বছরের এপ্রিলের শেষ নাগাদ শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। আর এ মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সিয়াম সাধনার মাধ্যমে, জিগির-আজগরের মাধ্যমে আল্লাহর দিদার লাভে সচেষ্ট থাকেন। কিন্তু প্রতি বছরই এই মাসে সাধারণ মানুষকে প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য অধিক দামে কিনতে হয়। সেদিকটি বিবেচনায় নিয়ে সরকার এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তারপরও জনমন থেকে শঙ্কা কাটছে না। শঙ্কা দূরীভূত না হওয়ার বড় কারণ হচ্ছে রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে তেল, চিনি, ছোলা, ডাল, খেজুর ও পেঁয়াজের দাম ইতোমধ্যে বাড়তি আবস্থায় রয়েছে। আগামীতে আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমাদের বাজার ব্যবস্থায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি, মজুদদারিসহ ব্যবসায়ীরা অধিক মূল্যে পণ্য কেনার অজুহাতের পাশাপাশি জোগান না থাকাসহ তুলে ধরেন অন্যান্য নানা সংকট। অথচ অতীতের মতো এবারো প্রায় দুই মাস আগে থেকে রমজানে দাম না বাড়ার ক্ষেত্রে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও তা আশ্বস্ত করতে পারছে না জনসাধরণকে।

সাম্প্রতিক সময়ের বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়ে গেছে। সঙ্গে বেড়েছে রসুন ও আদার দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা। আর এ বাড়ার কারণ হিসেবে চীনের করোনা ভাইরাসকে দায়ী করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ আদা এবং ৮০ শতাংশ রসুন আসে চীন থেকে। অন্যদিকে ভারত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করলে আমদারি করা পেঁয়াজের বড় অংশ আসে চীন থেকে। অথচ ভোক্তারা এতদিন খোলা বাজারে চীনা পেঁয়াজের তুলনায় মিসর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজেই ভরসা করেছিল বেশি। যার দাম কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত ছিল। আর এখন এটির কেজি ১০০ টাকা ছুঁয়েছে। আর গত বছরের শেষদিক থেকে বাজারে বেড়েই চলেছে তেল ও চিনির দাম। দেশি কোম্পানিগুলোও এরই মধ্যে বোতলজাত সয়াবিন লিটারে ৮ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনি কেজিপ্রতি ৭ টাকা বাড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, খোলা তেল ও চিনির দামেও বিস্তর ফারাক রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বাজেটে কর বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধি ও ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে তেল ও চিনির দাম বাড়িয়ে সমন্বয় করা হচ্ছে। আর এখন পর্যন্ত অবস্থার উন্নতি হয়নি। ফলে রমজানের বাজার দরও মূলত এসব বিষয়ের ওপরই নির্ভর করবে। সুতরাং ব্যবসায়ীদের কথার মধ্যেই শুভংকরের ফাঁকি রয়ে গেছে। আর তাই সরকারের শত প্রচেষ্টা কতটুকু জনগণের পক্ষে যাবে তা বলা মুশকিল। মাগফেরাত, রহমত ও নাজাতের এই মাসে সব মুসলমানই ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকেন। সিয়াম সাধনার এই মাস আমাদের কাছে আত্মশুদ্ধির বার্তা নিয়ে আসে। অথচ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পবিত্র এই মাসকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত মুনাফা লোটার ফন্দি আঁটে। রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পায়, এটা স্বাভাবিক। তাই বলে একে পুঁজি করে সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া কিছুতেই সমর্থনযোগ্য নয়। যদিও কোনো কোনো পাইকারি বাজারে বাজারের মূল্যতালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়; কিন্তু খুচরা বাজারগুলোতে এটি পরিলক্ষিত হয় না। মূলত সাধারণ ভোক্তারা খুচরা বাজার থেকেই কেনাকাটা করে থাকেন। তাই তারা প্রতারিতও হয়ে থাকেন অধিকাংশ সময়। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি খুচরা বাজারে মূল্য তালিকা টাঙানোর উদ্যোগ নিতে।

পবিত্র রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্থানীয় উৎপাদন, আমদানি, মজুদ অবস্থা ও মূল্য পরিস্থিতি সরকার সার্বক্ষণিক পর্যালোচনা করবেন, এমনটাই প্রত্যাশা। চাঁদাবাজি কিংবা কৃত্রিম উপায়ে পণ্যের সংকট সৃষ্টি করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সুতরাং এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করা প্রয়োজন। তবেই রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকবে। জনগণের প্রতি দায়বোধ থেকেই নিত্যপণ্যের দামের অন্যায্য বৃদ্ধি রোধে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অহ্বান জানাচ্ছি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!