• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটের গরমেও শীতল থাকবে প্রকৃতি


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৩, ২০১৮, ০৩:৩৩ পিএম
ভোটের গরমেও শীতল থাকবে প্রকৃতি

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দামামা বেজে গেছে। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে মনোনয়নপত্র জমা দান ও বাছাই প্রক্রিয়া।

৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে অবসান হবে নির্বাচনের প্রাক আনুষ্ঠানিকতা। তবে ওইদিনের পর থেকেই মূলত উত্তাপ ছড়াতে শুরু করবে ভোটের মাঠ। ২৮ ডিসেম্বর প্রচারের শেষ দিন হলেও সেই উত্তাপ ছাইচাপা আগুনের মতো ভেতরে ভেতের ছড়াতে থাকবে ভোটগ্রহণের দিন ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ভোটের পারদ চড়তে থাকলেও প্রকৃতির তাপমাত্রার পারদ নামতে থাকবে প্রায় ব্যাস্তানুপাতে। চলতি মাসের শেষার্ধে একাধিক শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে দেশ। তাতে দেশের কোনো কোনো এলাকার তাপমাত্রা নামতে পারে ০৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের ডিসেম্বর মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে দেওয়া হয়েছে এমন আভাস। গতকাল রোববার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসটি প্রকাশ করে আবহাওয়া অধিদফতর। দফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত ওই পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ডিসেম্বর মাসের প্রথমার্ধে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে, কিন্তু শেষার্ধে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের অপেক্ষা কম থাকতে পারে।

মাসজুড়ে শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদনদী অববাহিকায় ঘন ও মাঝারি কুয়াশা এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে মাঝারি ও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। দিনের বেলায় সূর্যকিরণ থাকতে পারে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা।

এছাড়া মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এক থেকে দুইটি মৃদু (০৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অথবা মাঝারি (০৬-০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদি এই পূর্বাভাসে বঙ্গোপসাগরে এটি নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা অনুমোদিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে করা নভেম্বর মাসের পূর্বাভাসের সঙ্গে দেশের বৃষ্টিপাত, নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড়, কৃষি আবহাওয়া এবং নদনদীর বাস্তব অবস্থার অনেকটাই সঙ্গতিপূর্ণ ছিল।

এদিকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের আবহাওয়ার চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ওই বছর ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে প্রায় সারা দেশে ছিল হাড়কাঁপানো শীত। ডিসেম্বরের শুরু থেকে শীত পড়তে শুরু করলেও তীব্রতা বাড়তে শুরু করে মাসের শেষার্ধে গিয়ে। শেষ সপ্তাহে শুরু হয় শৈত্যপ্রবাহ। সে বছর ২৭ ডিসেম্বর মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইতে শুরু করে উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে। সেদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরের দিনগুলোয় শীত আরো জেঁকে বসতে থাকে। ২৯ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন

তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা আরো নেমে হয় ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদদের মতে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি হলো দেশের শীতলতম মাস। প্রতিবছর এই দুই মাসে শীতের তীব্রতা থাকাটাই স্বাভাবিক। এ সময় সূর্য আলো দেয় দিনে গড়ে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। এর সঙ্গে ঘন কুয়াশা বাড়ায় শীতের অনুভূতি।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এ বছরও ডিসেম্বর শেষে শীতের তীব্রতা কেবল বাড়বেই না, তা গেল বছরের রেকর্ডও ছাড়িয়ে যেতে পারে। কারণ এ বছর নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গিয়েছিল। গত ২৮ নভেম্বর শ্রীমঙ্গলে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামে। ওইদিন বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ছিল ১৪ অগ্রহায়ণ। অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝিতে তাপমাত্রা এতটা নিচে নামার নজিরও কম। তাই ভোটের দিন ৩০ ডিসেম্বর বা ১৬ পৌষ তাপমাত্রা অনেকটাই কম থাকবে সেটাই স্বাভাবিক।

ভোটের দিন দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের তাপমাত্রা ভোটারদের কিছুটা কষ্ট দিলেও সারা দেশে এর খুব বেশি প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ। তবে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ায় ব্যাহত না করলেও ওইদিন তাপমাত্রা ভোটারদের হাড় কাঁপাতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!