• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটের প্রস্তুতি শুরু ঐক্যফ্রন্টে


বিশেষ প্রতিনিধি নভেম্বর ১৫, ২০১৮, ১১:৫১ এএম
ভোটের প্রস্তুতি শুরু ঐক্যফ্রন্টে

ঢাকা : নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণার পরপরই নির্বাচনী পস্তুতি শুরু করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। দলীয়ভাবে প্রার্থী বাছাই কার্যক্রম শুরু করলেও এখনও চূড়ান্ত হয়নি জোটের আসন ভাগাভাগি ও প্রতীক নির্ধারণের বিষয়টি।

নেতারা বলছেন, নিবন্ধিত দলগুলো নিজেদের প্রতীকেই প্রস্তুতি রাখলেও পরবর্তীকালে জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাড় দেয়া হবে কিছু কিছু আসনে। তবে এখনো নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়নি দাবি করে আবারও আলোচনা হতে পারে বলে মনে করছেন নেতারা।

নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা আসার পর থেকেই ঐক্যফ্রন্টভুক্ত দলগুলোতে বিরাজ করছে ভোট উৎসবের আমেজ।

গত সোমবার সকাল থেকে দলীয় মনোনয়পত্র বিতরণ শুরু করেছে বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি, কৃষকশ্রমিক জনতালীগ। তবে নেতাদের দাবি এখনো তৈরি হয়নি নির্বাচনের পরিবেশ।

নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী দলগুলো জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করার কথা জানালেও, এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি নির্বাচন ও পরবর্তীতে সরকার গঠনের রূপরেখা।

নিজেদের ৭ দফা দাবি ও নির্বাচন পেছানোর দাবিতে এখনো অনঢ় ঐক্যফ্রন্ট। নেতারা বলছেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না হলে যে কোন সময় পরিবর্তন হতে পারে সিদ্ধান্ত।

এদিকে, বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে বুধবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। জোটের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বুধবার দুপুর ১২টায় নির্বাচন কমিশন ভবনে যান।

এছাড়া শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় জাতীয় পত্রিকার সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। এরপর ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। সেই তারিখ এখনো ঠিক হয়নি।

মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জরুরি বৈঠক শেষে জোটের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তথ্য জানিয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনায় ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধিদল বুধবার দুপুর ১২টায় নির্বাচন কমিশন ভবনে গিয়ে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে এক মাস নির্বাচন পেছানোর অনুরোধ করেছিলাম। কমিশন নির্বাচন এক সপ্তাহ পেছানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আমরা হতাশ, দেশবাসীও হতাশ।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এ মুখপাত্র বলেন, নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ দেখে মনে হচ্ছে, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আগ্রহী নয়। অথচ একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ইসির ইতিবাচক পদক্ষেপ জরুরি।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ৩০ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ নির্ধারণ করেছে। এ দিনটিতে বড় দিনের ছুটি থাকে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য দিনটি বিশেষ। এ দিন তাদের জন্য উৎসবের।

এ ছাড়া ইংরেজি নববর্ষের আগের দিন ৩০ ডিসেম্বর। এই দিনে ভোট হলে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসতে পারবেন না। তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন না।

তাই আমরা নির্বাচন এক মাস পেছানোর দাবি করছি।  এর আগে বৈঠক থেকে বের হওয়ার পর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব যা বলার বলবেন। আলাদা করে বলতে চাই না। তবু আপনারা যেহেতু জানতে চেয়েছেন, এতটুকু বলি, দেশ সম্পূর্ণ অনিয়মে চলছে। আমরা সেটা নিয়মে আনতে চাই।’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ঠিকভাবে চলছে না। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন সাত দিন পিছিয়েছে, সেটা অন্যায়। এটা তো সরকারের আহ্বান, বদরুদ্দোজা চৌধুরীর আহ্বান ছিল। আমরা তো এক মাস চেয়েছি। দেশের মানুষ এক মাস পেছানোর কথা বলেছে।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, ‘প্রত্যেকটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া হয়। কিন্তু এই নির্বাচন কমিশন সেটা করেনি। সে জন্য আমার সন্দেহ হয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভালোভাবে নির্বাচন করতে পারবেন কি না। এই সন্দেহ এখনো মানুষের মধ্যে আছে। অনেকের ধারণা, সরকার ভোট নিয়ে যাবে। আমার ধারণা, সরকার ভোটে টিকতেই পারবে না।’

চলমান রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল দুপুর ১২টায় ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে বৈঠক শুরু হয়। চলে দেড়টা পর্যন্ত। ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন ও গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!