• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভয়ংকর হয়ে উঠছেন অবৈধ বিদেশিরা


ইমরান আলী সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০, ০৩:২২ পিএম
ভয়ংকর হয়ে উঠছেন অবৈধ বিদেশিরা

ঢাকা : রাজধানীতে বসে আন্তর্জাতিক প্রতারকচক্র গড়ে তোলেছেন অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশিরা। বিশেষকরে আফ্রিকা মহাদেশের নাইজেরিয়া, উগান্ডা, ঘানার অধিবাসীরা স্বল্পসময়ের ভিসা নিয়ে দেশে এসে বছরের পর বছর অবৈধভাবে বসবাস করে গড়ে তুলছেন অপরাধচক্র। অনেকে আবার খেলার জন্য দেশে আসার পর জড়িয়ে পড়ছেন ওই অপরাধচক্রের সাথে। এ অবস্থায় দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠছেন তারা। অস্ত্র, সোনা ও মাদক চোরাচালান, জাল মুদ্রার কারবার, এটিএম কার্ড জালিয়াতি এমনকি জঙ্গি কর্মকাণ্ডে মদত দেওয়ার অসংখ্য ভয়ংকর অভিযোগ উঠছে তাদের বিরুদ্ধে।

বিশেষ করে এই চক্রেরা সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে উচ্চবিত্তের লোকজনকে টার্গেট করে প্রতারণার ফাঁদ পাতে। আর এই পাতা ফাঁদের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা।

সম্প্রতি র্যাব ও সিআইডির হাতে ধরা পড়েছে এ প্রতারকচক্রের কয়েকজন সদস্য। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। এ প্রতারকচক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে কাজ করছেন তারা।

গত এক বছরে বিভিন্ন অপরাধে শতাধিক বিদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়া বর্তমানে পাঁচ শতাধিক বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশের বিভিন্ন কারাগারে রয়েছে। যাদের মধ্যে আফ্রিকানদের সংখ্যাই সাড়ে চারশরও বেশি বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

গত ৬ আগস্ট রাজধানীর কাফরুল ও পল্লবী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার নাইজেরিয়াসহ সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪। ২১ জুলাই ফেসবুকে প্রতারণার ফাঁদ পেতে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পল্লবীর একটি বাসা থেকে বাংলাদেশি ভুয়া নারী কাস্টমস কর্মকর্তা ও ১২ নাইজেরিয়ান নাগরিককে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। জুনে উপহার পাঠানোর নামে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ১৮ নাইজেরিয়ান ও দুই বাংলাদেশিসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

২৫ আগস্ট মঙ্গলবার রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার কাউলা ও বসুন্ধরা এলাকা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে চার বিদেশি (নাইজেরিয়ান ও ঘানা) নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইমের একটি টিম।

এছাড়াও গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন নারী সেনা কর্মকর্তার ভুয়া ফেসবুক আইডির মাধ্যমে বন্ধুত্ব করে মিলিয়ন ডলারের গিফট দেওয়ার কথা বলে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতকারী একটি আন্তর্জাতিকচক্রের ১৫ নাইজেরিয়ানকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাইজেরিয়ান মরো মহাম্মদ ও মরিসন খেলোয়াড় হিসেবে এসেছিলেন মাত্র ৩০ দিনের ভিসায়। এই সময়ে তারা বাংলাদেশের একটি স্বীকৃত ফুটবল ক্লাবের হয়ে খেলেন। তবে ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও তিনি আর দেশে ফিরে যাননি। গত আট বছর ধরে অবৈধভাবে বাংলাদেশেই অবস্থান করে জড়িয়ে পড়েন এ অপরাধকর্মের সাথে। সম্প্রতি তিনি গ্রেফতার হয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশিরা দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। পৃথিবীর নানা দেশ বিশেষ করে আফ্রিকা থেকে এদেশে এসে অবৈধভাবে বাস করে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে তারা। অস্ত্র, সোনা ও মাদক চোরাচালান, জাল মুদ্রার কারবার, এটিএম কার্ড জালিয়াতি এমনকি জঙ্গি কর্মকাণ্ডে মদদ দেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ আছে ওই সব বিদেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

চলতি বছর বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে র্যাব ও সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে অর্ধশতাধিকের বেশি নাইজেরিয়ান নাগরিক গ্রেপ্তার হয়েছে।

বন্ধু সেজে ফেসবুকে ও লটারির নামে প্রতারণার বেশকিছু ঘটনায় তাদের নাম উঠে আসে। অবৈধ বিদেশিদের এমন কর্মকাণ্ড বেড়ে চললেও প্রতিরোধে তেমন কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি অবৈধ বিদেশিদের ব্যাপারে কোনো তথ্য-উপাত্তও নেই সরকারের কোনো সংস্থার কাছে।

কতজন অবৈধ বিদেশি এখানে বসবাস করছে, তারা কোথায় থাকছে, কত দিন ধরে থাকছে এসব তথ্য কারো জানা নেই। তাদের বিরুদ্ধে কোনো জোরদার ব্যবস্থা নিতেও দেখা যায় না। এই সুযোগে অবৈধ বিদেশিরা রীতিমতো চক্র গড়ে তুলে এখানে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে। এদের মধ্যে আন্তর্জাতিক প্রতারকচক্রের সদস্যও আছে।

নানা প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতার সুযোগে দেশে অপরাধের আস্তানা গেড়ে বসেছে বিদেশি অপরাধীচক্র। যথাযথ তদারকির অভাবে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দেশে ফিরে যাচ্ছে না অনেক বিদেশি।

এরপর তারা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সামপ্রতিক ঘটনার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশে অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নাইজেরিয়ান।

এছাড়াও বেশকিছু অন্য দেশের নাগরিক আছে। অপরাধে জড়িতদের প্রায় সবাই অবৈধভাবে এ দেশে বসবাস করছে। সমপ্রতি নতুন ধরনের প্রতারণায় জড়িয়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছে নাইজেরিয়ার নাগরিকরা।

২২ জুলাই রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে ১২ নাইজেরিয়ান ও এক বাংলাদেশির একটি সংঘবদ্ধ চক্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা একটা অফিস নিয়ে সেখানে ফেসবুকে বিভিন্ন জনের সঙ্গে চ্যাট করত। এভাবে, ফেসবুকে প্রতারণার জাল বিছিয়ে বন্ধু তৈরি করে অভিনব পদ্ধতিতে দুই মাসে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। এই চক্রের সদস্যরা নিজেদের আমেরিকান অথবা ব্রিটেনের নাগরিক পরিচয় দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরি করেন। বিদেশ থেকে দামি উপহারের লোভ দেখানোর কৌশল ব্যবহার করেন তারা।

‘ক্যাথরিন কুলেন সোফিয়া’ নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে প্রথমে ফেসবুকে বন্ধুত্ব করা হয়। এক মাস ধরে তাদের মধ্যে ফেসবুকে কথাবার্তা হওয়ার পর, বন্ধুত্বের চিহ্ন হিসেবে ভুক্তভোগীকে সোফিয়া ‘দামি উপহার’ পাঠাবে বলে জানায়। উপহারের মূল্যমান ১০ লাখ ডলারের হবে উল্লেখ করে, সেটি চট্টগ্রাম বিমান বন্দরের কাস্টমস অফিস থেকে সংগ্রহ করতে বলে।

কিছুদিন পর, রাহাত আরা খানম ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিন (চক্রের বাংলাদেশি হোতা) নিজেকে কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাকে জানায়, বিদেশ থেকে আসা উপহার নেওয়ার জন্য চার লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। এজন্য, ভুক্তভোগীকে কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নম্বরও দেওয়া হয়।

অন্যথায়, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানায় ফারজানা। আস্থা অর্জনের জন্য তারা কোনো নগদ টাকা লেনদেন করে না এবং টাকা দেওয়ার জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে।

ওই ভুক্তভোগী ফারজানার দেওয়া অ্যাকাউন্টে তিন লাখ ৭৩ হাজার টাকা জমা দেন এবং তারপর থেকেই চক্রের সদস্যরা তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর, ভুক্তভোগী বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছেন এবং তখন তিনি থানায় অভিযোগ জানান।

রাজধানীর উত্তরা, গুলশান, বনানী, বারিধারা, রামপুরা, বনশ্রী, ধানমণ্ডিসহ কয়েকটি এলাকায় বসবাস করছে কয়েক হাজার অবৈধ বিদেশি নাগরিক (যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে)। তারা খেলোয়াড়, ব্যবসায়ী বা পর্যটক পরিচয়ে দিনের পর দিন এ দেশে অবস্থান করছে এবং ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে নানা অপরাধে জড়িত কিছু অবৈধ বিদেশিকে ধরা হলেও চক্রগুলোর অপতৎপরতা বন্ধ করা যাচ্ছে না।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য মতে, দেশে কতজন অবৈধ বিদেশি নাগরিক আছে, এমনকি কে কত দিন ধরে এ দেশে অবস্থান করছে এই পরিসংখ্যান নেই কারো কাছে। তবে এক হাজারেরও বেশি অবৈধ অভিবাসী অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে তথ্য মিলেছে। ফুটবলার, গার্মেন্ট ব্যবসায়ী, ছাত্র ও পর্যটক হিসেবে তারা দেশে আসে। ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও তারা নিজ দেশে ফিরে যায়নি।

সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার বলেন, ‘বিদেশিরা নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করেছে দূতাবাসগুলো। দুই তিন বছর আগে তারা বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে এদেশে এসেছিল। দূতাবাসগুলো এখন অনেক কঠোর। বিশেষ করে আফ্রিকান নাগরিকদের ক্ষেত্রে। তবে খেলোয়াড় এবং শিক্ষার্থী পরিচয়ের বাইরে এরা পর্যটক পরিচয়ে এদেশে আসে এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও এরা একটি কৌশল অবলম্বন করে।’

‘বিশেষ করে যারা প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত তারা তাদের পাসপোর্টগুলো ফেলে দেয় এবং বলে যে তাদের পাসপোর্ট নেই। এক্ষেত্রে তারা আদালতেও এক ধরনের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। তারা আদালতকে বলে যে আমার পাসপোর্ট নেই এবং তারা বিদেশি নাগরিক হিসেবে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে।’

বর্তমানে আফ্রিকান যেসব নাগরিক দেশে অবস্থান করছে তাদের বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন প্রশ্নে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার দায়ে চলতি বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত প্রায় ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশে এসে অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া বিদেশি নাগরিকদের বিরাট একটি অংশ নাইজেরিয়ান। ঢাকাকে বেছে নিয়ে যারাই অপরাধ করুক না কেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘ঢাকাকে তারা বেছে নেই, সেটা আমরা ওভাবে বলব না। বাংলাদেশের অনেকগুলো ফুটবল ক্লাব বিদেশিদের ফ্রাঞ্চাইজি করে খেলতে। সস্তা পারিশ্রমিকে আফ্রিকান খেলোয়াড় সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়।

অতএব, আফ্রিকান খেলোয়াড়রা এসব কাজে বেশি আসে। পাশাপাশি প্রযুক্তিগতকাজে বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজন আসে। একপর্যায়ে বাংলাদেশের সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক অবস্থা তার দেশের তুলনায় ভালো-এজন্য তাদের পাসপোর্টের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলেও তারা এদেশে থেকে যাওয়ার চেষ্টা করে।

যেহেতু তারা বাংলাদেশের নাগরিক না, বাংলাদেশের তাদের বৈধভাবে ব্যবসা করার সুযোগ নেই। তাই তারা অবৈধভাবে ব্যবসা করার পন্থা অবলম্বন করে। আর এই অবৈধপন্থা অবলম্বন করতে গিয়েই বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়।’

আশিক বিল্লাহ বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি সাধারণত সেইসব দেশি বিদেশিরা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন, যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। অর্থাৎ, কেউ প্রতারণার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসে এমনটা না। এটা একটি বড় চক্র। তাদের যোগসাজশ আছে। খেলাধুলা এবং গার্মেন্টস সেক্টর ছাড়াও বেশকিছু সেক্টর আছে, যেখানে আমরা বিদেশিদের পদচারণা লক্ষ করেছি।

অনেক দূরদেশ থেকে এসে বাংলাদেশে অপরাধ কর্মকাণ্ড করছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা তাদের সহযোগিতা করছে কি-না এমন কোনো তথ্য প্রমাণ পেয়েছেন জানতে চাইলে র্যাব মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশিরা সহযোগিতা করছে কি-না বিষয়টা আমরা এভাবে দেখবো না। আমরা দেখবো, অপরাধ করার ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণের একটা সম্পৃক্ততার প্রয়োজন হয়।

আপনি যদি আমেরিকা গিয়ে অপরাধ করেন তাহলে সেখানেও স্থানীয়দের সহযোগিতা ছাড়া কোনো অপরাধ করতে পারবেন না। অন্যদেশে অপরাধ করার ক্ষেত্রে আপনার ভাষা এবং ভূ-রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিকসহ নানান ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এই সমস্যাগুলো অতিক্রম করতে গেলে স্থানীয় একটা সহযোগিতার প্রয়োজন হয়।

সুতরাং বিদেশিদেরকে বাংলাদেশিরা অপরাধের ক্ষেত্রে সাহায্য-সহযোগিতা করছে এমন নয়, বরং অপরাধের ধরনই এমন। যে দেশেই অপরাধ হোক না কেনো স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া এ ধরনের অপরাধ সংঘটন খুবই দুরুহ।

তাদের অপরাধের ধরনগুলো কেমন জানতে চাইলে আশিক বিল্লাহ বলেন, সামপ্রতিক সময়ে আমার দেখছি-স্থানীয় সাধারণ মানুষের বিশ্বাস, আস্থাকে পুঁজি করে তারা প্রতারণার কাজ করে থাকে। এছাড়া ইতোপূর্বে আমরা তাদেরকে মাদকসংক্রান্ত অপরাধে ধরেছি। অর্থাৎ মোটাদাগে বলত গেলে খুব অল্পসময়ের মধ্যে মুনাফা অর্জন করা যায় সে ধরনের বিষয়ে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

তাদের বাংলাদেশে প্রবেশ বন্ধ করতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি-না। এ ক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন কীভাবে করা যায়-এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, একটা বিষয় স্পষ্ট, তারা কিন্তু বাংলাদেশে বৈধভাবে প্রবেশ করে। এদেশে থাকতে থাকতে অবৈধ হয়ে যায়?

সুতরাং এখানে অন্য এজেন্সির কোনো দুর্বলতা আছে বলে র্যাব মনে করে না। তারা বাংলাদেশে থাকার পরিপ্রেক্ষিতে অভ্যস্ত। তার কারণেই তারা চলে যেতে চায় না। সংক্ষেপে দ্রুত মুনাফা অর্জন করা যায়। বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে তারা কোনো প্রতারণার আশ্রয় নেয় না।

সাধারণ মানুষকে আমরা সব সময়ে বলে থাকি, বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক থাকার জন্য। যেকোনো লোককে আপনারা বন্ধু হিসেবে নিবেন না। প্রতারণার দায়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি নাগরিককে এই মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!