• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মঙ্গল শোভাযাত্রার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৩, ২০১৬, ০৯:৫২ এএম
মঙ্গল শোভাযাত্রার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

বাংলা নববর্ষবরণ বাঙালির প্রাণের উৎসব। যে উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে মঙ্গল শোভাযাত্রায়। যে যাত্রায় সব অশুভ আর অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদে রঙিন হয় বাঙালি। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালির দূরাচারবিরুদ্ধ এই অনুষঙ্গ এবার পেল জাতিসংঘের স্বীকৃতি। মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে ইউনেস্কো। গত বুধবার ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় ইউনেস্কোর ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’বিষয়ক আন্তঃসরকার কমিটির ১১তম অধিবেশনে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বাঙালি জীবনের সম্মিলিত এ উৎসব উদযাপন খুবই প্রেরণাদায়ক হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো। বাংলা নববর্ষবরণের অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রার এই স্বীকৃতির  মাধ্যমে বাঙালির অসাম্প্র্রদায়িক চেতনার ঐতিহ্য আন্তর্জাতিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত হলো। এর মাধ্যমে সমাজ থেকে অবক্ষয়সহ সব অশুভ শক্তি দূর হবে, দৃঢ়তর হবে সর্বজনীন বাঙালি চেতনা। 

মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলার আবহমান ঐতিহ্যের প্রতীক। এটি অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায়কে সমর্থন জানানোর নিদর্শন। ধর্ম-বর্ণ ও লিঙ্গ বা বয়সভেদে আপামর জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সহমর্মিতার প্রতীক। তাই তো ইউনেস্কো অশুভ শক্তিকে তাড়িয়ে প্রগতিশীল চেতনাকে বিকাশের সুযোগ দেয়াই এ শোভাযাত্রার লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করেছে। মঙ্গল শোভাযাত্রার এ স্বীকৃতি বাংলাদেশের কূটনৈতিক সফলতার আরো একটি বড় অর্জন। ফলে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো জোরালো হবে বলে আমরা মনে করি। ১৯৮৯ সালে উন্নততর ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে বাংলা নববর্ষবরণের প্রথম দিন মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তাদের সেদিনের সে লক্ষ্য আজ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির মাধ্যমে আরো বিস্তৃত হলো। এর আগে ২০০৮ সালে বাউলসংগীত ও ২০১৩ সালে জামদানির বুননে ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলা ইউনেস্কোর ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ইতিমধ্যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন, প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার ও বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। 

আমরা মনে করি, মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইউনেস্কো যে স্বীকৃতি ও সম্মান দিয়েছে, দেশবাসীকেও তার যথাযথ মর্যাদা দিতে হবে। এসব ঐতিহ্য আমাদেরই অটুট রাখতে হবে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে উদযাপন করাটা এখন সময়ের দাবি। এ ছাড়া দেশে আরো যেসব সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্যমণ্ডিত নিদর্শন রয়েছে, সেগুলোকেও বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই


 

Wordbridge School
Link copied!