• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মসজিদে হামলাকারী সেই জঙ্গির নাম উচ্চারণ করবেন না প্রধানমন্ত্রী


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মার্চ ১৯, ২০১৯, ০৩:১৭ পিএম
মসজিদে হামলাকারী সেই জঙ্গির নাম উচ্চারণ করবেন না প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা : ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলাকারী শ্বেতাঙ্গ জঙ্গির নাম কখনও মুখেও উচ্চারণ করবেন না বলে প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডান। পার্লামেন্টের এক বিষণ্ন অধিবেশনে তিনি মুসলমানদের উদ্দেশ্যে সালাম দিয়ে বলেন, আসসালামু আলাইকুম।

শোকাহত নিউজিল্যান্ডের নাগরিকদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, হত্যাকারী দেশের সর্বোচ্চ আইনের মুখোমুখি হবেন।-খবর এএফপির

শুক্রবারের ওই হামলায় ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদের অর্ধশত মুসল্লি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পাঁচ বাংলাদেশিও রয়েছেন।

কিউ প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামলকারী এ হত্যাকাণ্ড থেকে অনেক কিছু পেতে চেয়েছেন। কিন্তু পেয়েছেন কেবল নৃশংসতা। যে কারণে আমার মুখ থেকে কখনও তার নাম শুনতে পাবেন না। তিনি একজন সন্ত্রাসী। তিনি একজন অপরাধী। তার ব্যাপারে বলতে হলে, কখনই তার নাম মুখে নেব না।

সবাইকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যদি নাম বলতেই হয়, তবে নিহতদের নাম বলবেন। যে ব্যক্তি তাদের প্রাণ হরণ করেছেন, সে নাম মুখে না নিতে অনুরোধ করেন তিনি।

এদিকে ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে অর্ধশত মুসল্লিকে হত্যাকারী অস্ট্রেলিয়ার শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসীকে নজিরবিহীন সাজা দেয়া হবে, যাতে তিনি কখনও কারাগার থেকে বের হওয়ার আবেদন করতে না পারেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো সন্ত্রাসের অভিযোগ আনা হয়নি।

আইন বিশ্লেষকদের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন তথ্য দিয়েছে। ২৮ বছর বয়সী ওই অস্ট্রেলীয় সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, যাতে তার যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে।

নিউজিল্যান্ডে কেউ হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে সম্ভাব্য প্যারোলের আগে তাকে ন্যূনতম ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়ার আইন আছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেরেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ খুবই মারাত্মক। তাকে কঠোর সাজা দিতে পারেন বিচারক। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটিতে ১৯৬১ সালে মৃত্যুদণ্ড আইন বাতিল করা হয়েছে।

ফৌজদারি আইনজীবী সিমন কুলেন বলেন, কোনো প্যারোল ছাড়াই তাকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হতে পারে। এমন সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। আর এমন সাজা দেয়া হলে তা হবে নজিরবিহীন।

তিনি বলেন, এটি এমন একটি পরিস্থিতি, যাতে কঠোর সাজা দেয়াই হবে স্বাভাবিক।

নিউজিল্যান্ডে হত্যাকাণ্ডের দায়ে এ পর্যন্ত সবচেয়ে দীর্ঘ সাজা দেয়া হয়েছে ২০০১ সালে। তিনটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উইলিয়াম বেল নামে এক অপরাধীকে ন্যূনতম ৩০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।

অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ বিল হজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডান এ ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করলেও এ জঙ্গির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা থেকে বিরত থাকতে পারেন কৌঁসুলিরা।

যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ হামলার পর দেশটিতে সন্ত্রাসীবাদী আইন প্রণয়ন করা হলেও আদালতে যা অপরীক্ষিতই রয়ে গেছে। বিল হজ বলেন, এর আগে আমরা কখনও সন্ত্রাসবাদের আইন ব্যবহার করিনি। যারা কোনো গোষ্ঠী, আর্থিক কিংবা প্রকাশনার মতো কোনো কিছুতে জড়িত, তাদের নিবৃত্ত কিংবা শাস্তি দিতেই এ আইনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

‘এর আগে হত্যা, হত্যাচেষ্টা ও নরহত্যার মতো কোনো অপরাধে সন্ত্রাসবাদ আইন ব্যবহার দেখা যায়নি। কাজেই এখানে সেটির ব্যবহারের কোনো কারণ আমি দেখছি না।’

তবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযোগে মামলা করা হলে তিনি আপিল করার সুযোগ পাবেন বলেও মন্তব্য করেন এ আইন বিশেষজ্ঞ।

তার মতে, আপিল কার্যক্রমের ভেতরেই এ আইন অপরীক্ষিত। কাজেই কোথায় সমস্যা সেটি খুঁজে বের করবেন আপিল আদালত।

কুলেন বলেন, পুলিশ যখন তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে, তখন প্রথম অভিযোগ দিয়েই কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা নিউজিল্যান্ডে অস্বাভাবিক কিছু নয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!