• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে খাদ্য সঙ্কটে বিলুপ্তির পথে বানর


মাদারীপুর প্রতিনিধি অক্টোবর ২৭, ২০১৬, ০৭:৪৯ পিএম
মাদারীপুরে খাদ্য সঙ্কটে বিলুপ্তির পথে বানর

মাদারীপুর : মাদারীপুরের চরমুগরিয়া, কুলপদ্বি, পুরানবাজারসহ আশপাশের এলাকায় প্রচুর বানর থাকলেও খাদ্য সঙ্কটে দিন দিন তা বিলুপ্তের পথে।বর্তমানে যেসব বানর রয়েছে তাদের প্রয়োজনীয় উপকরণ খাদ্য সঙ্কট থাকায় এসব এলকার জনসাধারণকে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। তারা এখন বানরের অত্যাচারে অতিষ্ট। তাই এলাকাবাসীর দাবি বানরদের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করে বানরের সংরক্ষণ অতি জরুরী।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আড়িয়াল খাঁ নদবেষ্টিত মাদারীপুর অঞ্চল এক সময় ঘন বন-জঙ্গলে পূর্ণ ছিল। মাদারীপুরে প্রচুর বনজঙ্গল থাকায় এক সময় বানর বসবাসের সহায়ক পরিবেশ ছিল। এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বানরকে দেবতা মনে করে কলা, মোয়া, মুড়ি, চিঁড়া, বাদাম, বিস্কুট খেতে দিত। এরপর আস্তে আস্তে বানরগুলো পৌরসভার চরমুগরিয়া বন্দরে থাকতে শুরু করে। এই বানরগুলোর বসবাসের জন্য জেটিসি’র মাঠে একটি অভয়ারণ্য স্থান গড়ে তোলা হয়। কিন্তু সেটিও এখন দখলদারদের কবলে চলে গেছে। বর্তমানে বানরগুলো জেটিসি ও আদমজীর এলাকার পরিত্যক্ত পাট গুদাম, চরমুগরিয়া মহাবিদ্যালয়, আবুবকর সিদ্দিক বিদ্যালয়সহ ইত্যাদি এখানকার প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাদেই এরা রাতে মূলত বসবাস করে থাকে। 

সামাজিক বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে এসব বানরের জন্য খাবার সরবরাহ কর্মসূচি চালু থাকলেও বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। খাবার সরবরাহ বন্ধ থাকায় বানর লোকালয়ের প্রবেশ করে জনগনের খাবার ছিনিয়ে খেয়ে থাকে। এতে এলাকাবাসীর পোহাতে হয় চরম বিড়ম্বনা। এছাড়াও বানরগুলো বর্তমানে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে হানা দেয়ায় অতিষ্ঠ করে তুলছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এমনকি দোকানপাট ও পথচারীর কাছ থেকে খাবার ছিনিয়ে নিচ্ছে বানরগুলো।

স্থানীয় ভোলানাথ কুন্ডু বলেন, বানরের কারণে এখানকার বাচ্চা ছেলে-মেয়েদের স্কুলে আসা যাওয়াসহ খেলাধুলা করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। বানরের ধাওয়াতে বাচ্চারা পড়ে যেয়ে আহত হয়। এছাড়াও বাসা বাড়িতে জামা কাপড় শুকাতে দিলে সেগুলে টেনে নিয়ে চলে যায়। এমনকি খাবার সঙ্কট থাকায় বানরের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছি। 

কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ অধ্যাপক ড. বশির আহম্মদ বলেন, চরমুগরিয়া এক সময় অনেক বানর ছিলো। কিন্তু বর্তমানে তা কমছে। প্রাকৃতিক জীব বৈচিত্র রক্ষার জন্য এ বানরগুলোকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে বন-জঙ্গল উজার হয়ে যাওয়াতে এ বন্য প্রানীগুলো বিভিন্ন সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। এখনে সবচেয়ে বড় সমস্য খাদ্যের অভাব। মাদারীপুরের এই প্রানী কুলকে রক্ষা করার জন্য সরকার, পরিবেশবাদী সংগঠন, সামাজিক সংগঠনগুলোকে এখনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে চরমুগরিয়ার এ ঐতিহ্যবাহী বানর এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

তবে, ভোগান্তির কথা স্বীকার করে জেলার বন কর্মকর্তা দীপক রঞ্জন সাহা জানালেন, বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে, পেলেই সমস্যার সমাধাণ হবে। তবে প্রতি বছরি আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় বানরের জন্য খাদ্য সরবারহ করে থাকি। এ বছরো আমরা তাই করবো। আশা করছি খাবার দিলেই বানরের অত্যাচার কমে যাবে। 

উল্লেখ্য, গত ২০০৬-০৭ অর্থ বছরে এই বানরের জন্য খাবারের বরাদ্দ ছিল ১২ লাখ টাকা। সেটি এখন কমতে কমতে গত অর্থ বছরে এসে ঠেকেছে ৩ লাখ টাকায়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!