• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মার্কিন হামলায় নিহত ইরানি জেনারেলের হাত!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জানুয়ারি ৩, ২০২০, ০৫:২৫ পিএম
মার্কিন হামলায় নিহত ইরানি জেনারেলের হাত!

ঢাকা: বাগদাদের একটি বিমানবন্দরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের অন্যতম শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হয়েছেন। নিহত জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ছিলেন ইরানের এলিট কুদস বাহিনীর প্রধান। হামলায় জেনারেল কাসেম ছাড়াও আরো পাঁচজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন ইরাকি মিলিশিয়া কমান্ডার আবু মাহুদি আল-মুহান্দিস।

বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন হামলায় অন্য ছয়জনের সাথে তিনি নিহত হন বলে খবর বলা হয়েছে। মার্কিন হামলার বিষয়টি মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর ‘পেন্টাগন’ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। 

তবে এ ধরনের হামলায় হাই প্রোফাইল নিহতের খবর প্রচার করা হলেও মৃতদেহের ছবি মিডিয়ার সামনে আনা হয় না। ফলে মানুষ নিহতের মৃত্যুর খবরটাই পড়তে পারে বা জানতে পারে। তবে ফেসবুকে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে একটা হাত দেখা যাচ্ছে। আহত কোনো মৃতের হাত বলেই মনে হয়। বলা হচ্ছে, এটাই জেনারেল কাসেমের মৃতদেহের ছবি। হাতের পাশে একটি পাখির মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। ছবিটা দেখে মনে হচ্ছে, হামলার পর জেনারেলের মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার পর ছবি তুলে রেখেছিল কেউ। ওটাই এভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। 

এখন প্রশ্ন হলো, এটা কাসেমের হাত কিভাবে প্রমাণিত হয়? চোখ রাখতে হবে কাসেমের অনামিকায় পরা আংটিতে (লাল বৃত্ত চিহ্নিত)। বামের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি বাম হাতের অনামিকায় আংটি পরে রয়েছেন। ডানের ছবিতেও বাম হাতের অনামিকায় একই আংটি দেখা যাচ্ছে (লাল বৃত্ত চিহ্নিত)। এটা স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে। তাহলে এটাই কি মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ইরানের প্রভাবশালী জেনারেল কাসেমের হাত? এটাই কি জেনারেলের মৃতদেহ? ভাইরাল হওয়া ছবিতে তেমনটাই বলা হচ্ছে।

ইরানের শাসনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি জেনারেল সোলেইমানি। তার কুদস বাহিনী সরাসরি দেশটির প্রধান নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে রিপোর্ট করে। ১৯৯৮ সাল থেকে মেজর জেনারেল কাসেম সোলেইমানি ইরানের কুদস ফোর্সের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ইরান রেভোলিউশনারি গার্ডসের এই অভিজাত বাহিনীটি দেশের বাইরে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে থাকে। বলা হয়, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বাশার আল-আসাদের ইরান সমর্থিত সরকারকে মদদ দেয়া এবং ইরাকে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন জেনারেল সোলেইমানি।

এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর জানায়, ‘প্রেসিডেন্টের নির্দেশক্রমে মার্কিন সামরিক বাহিনী বিদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের রক্ষার উদ্দেশে কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।’

হামলার কারণ হিসেবে পেন্টাগনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হামলাটি চালানো হয়েছে ভবিষ্যতে ইরানকে হামলার পরিকল্পনা থেকে বিরত রাখার উদ্দেশে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের নাগরিকদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে, তারা বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুক না কেন।’

হামলায় ইরাকি মিলিশিয়া কমান্ডার আবু মাহুদি আল-মুহান্দিসও নিহত হয়েছেন বলে ইরাকি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ তথ্য মার্কিন কর্মকর্তারাও নিশ্চিত করেছেন। তাঁদের বহনকারী দুটি গাড়ি মার্কিন রকেট হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে। ইরানি অতিথিকে পাহারা দিয়ে নিয়ে আসছিল পিএমএফের কর্মকর্তারা। 

ইরানের শাসনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ কুদস বাহিনী সরাসরি দেশটির প্রধান নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে রিপোর্ট করে। এই হামলার পরই সারা বিশ্বে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা বেড়ে গেছে। ইরানি জেনারেলকে হত্যার খবরে তাৎক্ষণিকভাব বিশ্বব্যাপী তেলের দাম প্রায় ৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের হাতে বড় সংখ্যক ইরাকি মিলিশিয়া আটক হয়েছে বলেও খবর রটেছে, তবে এ বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করা হয়নি।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!