• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর হঠাৎ স্থগিত


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০, ১১:৩৩ এএম
মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর হঠাৎ স্থগিত

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর হঠাৎ স্থগিত

ঢাকা :  ঢাকায় মালয়েশিয়ার হিউম্যান রিসোর্স মিনিস্ট্রি থেকে ১৯-২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকায় ছয় দিনের ওয়ার্কিং ভিজিটে বাংলাদেশে শ্রমবাজার সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের দুদিন আগেই তা স্থগিত করা হয়েছে। তবে এজন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকা এবং কক্সবাজারে হোটেল ভাড়া, বিমান টিকিট করাসহ অন্যান্য সব প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করে ছিল।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলসেগারানের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি নিয়ে ঢাকায় আসার দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা থাকলেও হঠাৎ তা বাতিল করা হয়েছে। 

দুই দিন আগে হঠাৎ প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, অনিবার্য কারণে দেশটির হিউম্যান রিসোর্স মিনিস্টারের সফরটি স্থগিত করা হয়েছে। তবে ঢাকায় দু’দেশের (মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ) মধ্যে শ্রমবাজার সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের নির্ধারিত বৈঠক যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার শিডিউল এখনো চূড়ান্ত হয়ে আছে।

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলসেগারানের সফর স্থগিত হওয়ার কারণ জানতে সোমবার রাতে একাধিকবার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ এর সাথে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি টেলিফোন ধরেননি।

মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়া থেকে দায়িত্বশীল একটি সূত্র গতরাতে মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলসেগারানের ঢাকা আসার সফর বাতিল হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গতরাতে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন, তবে কী কারণে সফর বাতিল হলো সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তারা আশাবাদী- সহসাই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের জটিলতা কেটে যাবে।

জানা গেছে, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ায় কেবিনেট মিটিং অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্যই হয়তো বা তার ঢাকার সফর স্থগিত হয়েছে। তবে ঢাকায় নির্ধারিত দুই দেশের মধ্যেকার ৪র্থ জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা ঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। আর ওই বৈঠকে মালয়েশিয়ার স্থগিত শ্রমবাজার খোলার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর কিভাবে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক যাবে, একজন শ্রমিক কত টাকার মধ্যে যাবে, বেতন ওভারটাইম, মেডিক্যাল ও ট্রেনিং সেন্টারের নামের তালিকা চূড়ান্ত করা ছাড়াও দুই পক্ষই নিজ নিজ দেশের মধ্যে শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন। পরবর্তীতে এ নিয়ে আবারো বৈঠক হবে।

এরপর দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে নতুন করে এমওইউ চুক্তি সইয়ের ঘোষণা আসতে পারে। তবে এবারের এমওইউতে বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সি, প্লাস (বিআরএ+) নাম থাকবে, নাকি রিক্রুটিং এজেন্সির সব সদস্য (ওপেন ফর অল) ব্যবসা করার কথা এমইউএতে লেখা থাকবে সেদিকেই এখন সবাই তাকিয়ে আছেন।

ঢাকা ও মালয়েশিয়ার নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র গতরাতে  জানিয়েছে, মালয়েশিয়ার কেবিনেট মিটিংয়ে বাংলাদেশের শ্রমবাজার নিয়ে নতুন করে কোনো আলোচনা হবে কি না- সেটি সময়ই বলে দেবে। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এখন পর্যন্ত শ্রমবাজারে কোনো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী না নেয়ার ব্যাপারে অটল রয়েছেন এবং অবশ্যই সেটি কম টাকার মধ্যে কর্মী আসতে হবে এমন নিশ্চয়তাও তিনি বাংলাদেশের কাছ থেকে চাইছেন।

তবেই খুলতে পারে শ্রমবাজারের জট। আর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সাথে তাল মিলিয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদও সভা, সেমিনার আর বক্তব্যে বলে আসছেন, অবশ্যই কম টাকার মধ্যে শ্রমিক যাতে মালয়েশিয়াতে যেতে পারে সেটি নিশ্চিত করাই হবে তার প্রধান কাজ।

এ দিকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবার খুলছে এমন আওয়াজ ওঠার পর থেকেই রিক্রুটিং এজেন্সি ও তাদের প্রতিনিধিরা মালয়েশিয়ায় গিয়ে চাহিদাপত্র সংগ্রহে প্রতিনিয়ত বৈঠক করছেন। সব মিলিয়ে শ্রমবাজার খোলার আগেই ঢাকা মালয়েশিয়া এখন চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে বলে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে। তবে তারাও চাচ্ছেন, এবার সরকার নির্ধারিত এক লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে তারা মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাবেন। বেশি টাকা নিয়ে কোনোভাবেই সম্ভবনাময় শ্রমবাজার আর হাতছাড়া করতে রাজি নন তারা।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!