• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি তরুণীদের রমরমা দেহব্যবসা (ভিডিও)


প্রবাসে বাংলা ডেস্ক জুলাই ২০, ২০১৮, ০৪:২১ পিএম
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি তরুণীদের রমরমা দেহব্যবসা (ভিডিও)

ঢাকা : মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি মেয়েদের দিয়ে চলছে রমরমা দেহব্যবসা। আর এই দেহব্যবসার শিকার হচ্ছে উঠতি বয়সের কিশোরী মেয়েরা। গার্মেন্টস, রেষ্টুরেন্ট অথবা ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে উঠতি বয়সের কিশোরী মেয়েদের পাচার করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।

এই পাচারকারী চক্র এতটাই শক্তিশালী যে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। পাচারকারীরা কিশোরী মেয়েদের মালয়েশিয়া নিয়ে বিভিন্ন ক্লাব অথবা মনোরঞ্জন (মোজরায়) বিক্রি করে। অনুসন্ধানে জানা গেছে বাংলাদেশের উঠতি বয়সের মেয়েদের চাহিদা বেশী।

এমনি এক পাচারের শিকার কিশোরীকে দূতাবাসের সহায়তায় দেশে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (১৮) জুলাই রাত সাড়ে ১০টায় মালিন্দ এয়ার লাইন্সের একটি ফ্লাইটে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

এদিকে এ ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে মালয়েশিয়ান দূতাবাস। এ চক্রকে ধরতে সে দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে নেমেছে বলে দূতাবাসের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

কিশোরী মিনার (ছদ্মনাম) গত তিন মাস আগে দালাল জহুরুলের প্ররোচনায় মালয়েশিয়া আসে। মিনা এ প্রতিবেদককে জানায়, কুমিল্লার জহুরুল মালয়েশিয়ায় রেষ্টুরেন্টে কাজ দিবে বলে আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে ঢাকা থেকে অন এরাইভেল ভিসায় ইন্দোনেশিয়া নিয়ে যায় মিনাকে।

ইন্দোনেশিয়া থেকে পানি পথে নিয়ে আসে মালয়েশিয়ার ক্লাং-এ। সেখান থেকে ৩ দিন পর নিয়ে আসে কুয়ালালামপুর শহরে। শহরে এনে রাজবাড়ির নূর ইসলামের কাছে জহুরুল মিনাকে বিক্রি করে দেয়। নূর ইসলাম মিনাকে বুকিতবিনতাং এলাকায় নিয়ে গিয়ে তাকে দিয়ে দেহ ব্যবসা শুরু করে। মিনা প্রতিবাদ করতে গেলে নূর ইসলাম তার উপর শারিরিক নির্যাতন চালায়। প্রতিদিন গড়ে ৫ থেকে ৭ জনের সঙ্গে তাকে বিছানায় যেতে হত।

এ অত্যাচার থেকে বাঁচতে মিনা কৌশলী হয়ে উঠে। একদিন সে নূর ইসলামকে বলল বর্তমানে মালয়েশিয়ার অবস্থা খুব খারাপ। প্রতিদিন ধরপাকড় চলছে। আপাতত একটি ট্রাভেল পাস করে রাখা দরকার। নূর ইসলাম রাজি হয়ে ১৫ জুলাই বাংলাদেশ দূতাবাসে নিয়ে আসে ট্রাভেল পাস নিতে।

ওই দিন দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস না দিয়ে বলা হয় পরের দিন আসতে। মিনা পরেরদিন যথা সময়ে দূতাবাসে আসার পর নূর ইসলাম তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সন্দেহ হয় সংশ্লিষ্টদের। মিনা তখন কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের সব খুলে বললে পাচারকারীরা আঁচ করতে পেরে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

মিনাকে দূতাবাসের হেফাজতে রেখে ওই দিনই দূতাবাসের সহায়তায় স্থানীয় আম্পাং থানায় এ দুই নারী পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মিনাকে দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। স্পেশাল পাস ও টিকেটের ব্যবস্থা করে দেন মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের যুগ্ন আহবায়ক অহিদুর রহমান অহিদ। দূতাবাসের কল্যাণ সহকারী মো. মুকসেদ আলী ১৮ জুলাই দেশে ফেরত পাঠান। বাংলাদেশ শাহজালাল বিমান বন্দর পৌঁছুলে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক মিনার পরিবারের হাতে তুলে দেয়।

এদিকে দুই নারী পাচারকারীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়েরের পর মালয়েশিয়া পুলিশ তাদের খুঁজছে। মিনা ১৯ বছরে মালয়েশিয়ায় কাজ করতে গিয়ে যেভাবে বিকৃত ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এ রোমহর্ষক বর্ণনায় স্তব্ধ প্রবাসীরা। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে পাচারকারীদের আইনের আওতায় এনে তাদের শাস্তি দাবি করেছেন প্রবাসীরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!