• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাশরাফির হাত ধরেই বাংলাদেশের বড় সাফল্য


ক্রীড়া প্রতিবেদক ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭, ০৯:৫৪ এএম
মাশরাফির হাত ধরেই বাংলাদেশের বড় সাফল্য

ঢাকা: দেখতে দেখতে আরো একটি বছর কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে। এই এক বছরে না পাওয়ার আফসোস যেমন রয়েছে তেমনি প্রাপ্তিও কম নয়। অঙ্ক কষে জীবনের সাথে সেগুলো অনেকেই মেলানোর চেষ্টা করে। বছর শেষে সেলিব্রেটিদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির খবরগুলো পাঠকহৃদয়ে স্থান পায়, সেখানে সাধারণ একজন মানুষ খুবই নগন্য।

এই যেমন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার কথাই ধরা যাক। এখন যদি কাউকে ক্রীড়া জগৎ থেকে একজন সার্বজনীন ব্যক্তির নাম বাছতে বলা হয় খুব বেশি সমস্যায় পড়তে হবে না। টপ করে আপনি মাশরাফির নাম বলে দিতে পারেন। তিনি শুধু একজন ক্রিকেটার বা অধিনায়কই নন ভাল মানুষও বটে। শুধু ভাল মানুষই নন তার মনটা এলাকার মানুষের জন্যও কাঁদে। সে কারণেই প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন’।

সম্প্রতি এই ফাউন্ডেশনে একটি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়ে মাশরাফিকে কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করেছে রংপুর ফ্রাঞ্চাইজি।

এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বড় সেলিব্রেটিদের ছোট তালিকা করলে ওপরের দিকেই থাকবে মাশরাফির নাম। তাই তাকে নিয়ে যে কোনো খবরই মানুষের মাঝে ব্যাপক আগ্রহের জন্ম দেয়। সেই মাশরাফির ২০১৭ সালটা কেমন গেল সেটিও জানতে চায় তার ভক্তরা। 

সবমিলিয়ে মাশরাফির এ বছরটা খারাপ যায়নি। মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ডাম্বুলায় ৯০ রানের জয় দিয়ে শুরু। একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়। কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস গ্রাউন্ডে (এসএসসি) হারতে হয়েছে ৭০ রানে। ফলে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১-১ এ সমতায় শেষ হয় ওয়ানডে সিরিজ। এরপর দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজও প্রথম ম্যাচ হেরে দ্বিতীয় ম্যাচটি জিতে নেয় বাংলাদেশ। এই ম্যাচের আগে আচমকাই ফেসবুকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন মাশরাফি। তার এই সিদ্ধান্ত সবাইকে হতভম্ব করেছে।

এ বছরই মাশরাফির হাত ধরে সবচেয়ে বড় সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলেছে ওয়ানডের  নতুন পরাক্রমশালী দলটি। এই পথে কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে দুর্দান্ত এক ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসান। অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগেই আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতে নেয় মাশরাফির দল। স্বাগতিকরা ছাড়াও এই সিরিজের অপর দলটি ছিল নিউজিল্যান্ড। 

বছরের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরটা একদম বাজে কেটেছে মাশরাফির। তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। বল হাতে খরুচে ছিলেন মাশরাফি। তিন ম্যাচে যথাক্রমে ৫০, ৮২ ও ৬৯ রান দিয়ে থেকেছেন উইকেটশূন্য। ২০১৭ সালে মাশরাফি মোট ১৩টি ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়েছেন ৪টি ম্যাচে। ওভার প্রতি ৪৯.৫৪ গড়ে রান দিয়ে উইকেট তুলে নিয়েছেন ১৩টি। সেরা সাফল্য শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬৫ রানে ৩ উইকেট।

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ব্যর্থতা মাশরাফি পূরণ করেছেন বিপিএল জিতে। রংপুর রাইডার্সকে প্রথমবার শিরোপা উপহার দিয়েছেন। একই সঙ্গে এই শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছেন চতুর্থবারের মতো। বিপিএলের পাঁচ আসরের মধ্যে মাশরাফি যে শিরোপা জিতলেন চারবার। অবিশ্বাস্যই বটে! অথচ মাঝ পথে খেই হারিয়ে ফেলেছিল রংপুর।

শুধু মাশরাফি তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দলকে প্লে-অফে নিয়ে এসেছিলেন। বাকিটা তো সবার জানা। এই পথে নড়াইল এক্সপ্রেস দু’দুবার দলকে জিতিয়েছেন ব্যাট হাতে। বল হাতেও সমান ভুমিকা রেখেছেন। ১০ জনের তালিকায় ১৫ উইকেট নিয়ে মাশরাফির সাত নম্বরে থাকটা তো সেটাই প্রমাণ করে। বছর শেষে মাশরাফিকে তৃপ্তি দিয়েছে রংপুরের শিরোপা জয়। তাই বলাই যায়, সব ভাল যার শেষ ভাল তার। মাশরাফির বেলায়ও একথাটি বছর শেষে দারুন যায়!  

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আরআইবি/এআই

Wordbridge School
Link copied!