• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন নিজেই!


নাটোর প্রতিনিধি মার্চ ১৬, ২০১৯, ০৫:২২ পিএম
মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন নিজেই!

ছবি : সোনালীনিউজ

নাটোর : জীবনে অনেক রকমের ঘটনাই শোনা যায়, ঠিক এরকমই আশ্চর্য এক ঘটনা ঘটেছে নাটোরের সিংড়ায়। মানুষের প্রলোভনে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তি। পুলিশের তদন্তে মামলায় উল্লেখিত ঘটনার কোনো মিল না থাকায় আসামিদের আটক করেনি পুলিশ। তবে থেমে নেই সেই জাহাঙ্গীর। মিথ্যা মামলায় আসামিদের আটক করাতে জন্ম দিলেন এক নাটকের। অবশেষে নিজেই গ্রেপ্তার হয়েছে পুলিশের হাতে।

পুলিশ, স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের বেলোয়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর। গ্রামে বিদ্যুতের সংযোগ আসছে। সাইফুল নামের এক ইলেকট্রেশিয়ানের সঙ্গে কিছু টাকার বিনিময়ে কাজ করেন জাহাঙ্গীর। বাড়ি প্রতি কাজের বিনিময়ে টাকা পায় সে। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার সময় নকুল ও সুশীল নামের দুই ব্যক্তির একটি পুকুর বেধে যায়। জাহাঙ্গীর তাদের পুকুরের ওপর দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চায় কিন্তু তারা রাজি নয়। বার বার গ্রামবাসী বসেও কোনো সুরাহা হয় না। একদিন জাহাঙ্গীরের মাথায় কে বা কাহারা আঘাত করে, পরে হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা করালে সে সুস্থ হয়ে ওঠে। কিছুদিন পরে গ্রামের কিছু লোক তাকে বলে যে, নকুল ও সুশীলের সঙ্গে তোর ঝামেলা তাদের বিরুদ্ধে মামলা কর। তাদের কথা মতো গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সে নাটোর কোর্টে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

সিংড়া থানা পুলিশ তার ওপর হামলাকারীদের নামের সঙ্গে ঘটনার সত্যতা পায় না, আসামিরাও গ্রেপ্তার হয় না। এক পর্যায়ে সে একটা নাটকের জন্ম দিলেন। কয়েকজন তাকে উস্কানি দেয় যে, তুই তোর শাশুড়ির বাড়িতে চুরি করে তাদের ফাঁসিয়ে দে। ঘটনার দিন গত বুধবার রাতে (১৩ মার্চ) একটা চুরির ঘটনা ঘটাল। জাহাঙ্গীর থাকে একই গ্রামে শাশুড়ির বাড়িতে। শাশুড়ি লাইলি বেগম (৬৫) তার নাতনী জান্নাতীকে নিয়ে তার বাড়ির একটি ঘরে থাকে এবং পাশের ঘরে থাকে জামাই জাহাঙ্গীর আলম (৪০) ও মেয়ে রেখা বেগম (২৮)।
ঘটনার দিন রাতে খাওয়া শেষে সবাই ঘুমিয়ে যায়। পরে রাত প্রায় সাড়ে ১২টার দিকে কাপড় দিয়ে মুখ বেঁধে দুইজন লোক লাইলি বেগমের ঘরে প্রবেশ করে। তারা লাইলি বেগমের নাতনী জান্নাতীর গলা থেকে সোনার চেইন নেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু তার চিৎকারে তারা চেইন নিতে পারেনি। তবে লাইলি বেগমকে কিলঘুষি মেরে কানের লতি ছিড়ে ৪ আনা ওজনের সোনার রিং নিয়ে যায়। পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তার জামাই জাহাঙ্গীরের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে নকুল ও সুশীলকে ফাঁসানোর জন্য তাদেরসহ কয়েকজনের নাম বলে। পরে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে উপরোক্ত ঘটনার বর্ণনা দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শফিকুর রহমান আসামি জাহাঙ্গীরের বরাত দিয়ে ঘটনাটির বর্ণনা দেয়। এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরের শাশুড়ি লাইলি বেগম সিংড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে, বাঁকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!