• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে এইচআরডব্লিউ

‘মিয়ানমারকে কাঠগড়ায় তুলুন’


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১০, ২০১৮, ১২:৩১ পিএম
‘মিয়ানমারকে কাঠগড়ায় তুলুন’

ঢাকা : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) তুলে ধরতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

বুধবার (৯ মে) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি।

এদিকে বাংলাদেশের দেওয়া তালিকা থেকে প্রত্যাবাসনের জন্য ১১০০ রোহিঙ্গাকে বাছাই করেছে মিয়ানমার। সম্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর করে। বিষয়টি উল্লেখ করে এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের আগস্টের পর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আসা ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা এবং এর আগে আসা আরো ২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর অবস্থা সরাসরি দেখে গেছেন জাতিসংঘ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। তারা নিউইয়র্কে ফিরে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সহযোগী ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিসের পরিচালক পরমপ্রীত সিং বলেন, ‘রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় দায়ীদের অবশ্যই শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। নির্যাতনের বিষয়ে মিয়ানমারের অব্যাহত ও অকল্পনীয়ভাবে অস্বীকার করে আসা এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতি প্রমাণ করে, এখন কেবল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতই নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কাছে ন্যায়বিচারের একমাত্র ভরসা।’

মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তের বিষয়ে ব্রিটিশ দূত পিয়ের্স সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘অং সান সু চি পরিষদের সদস্যদের আশ্বস্ত করেছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের উপযুক্ত প্রমাণ পেলে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তদন্ত করবে।’ কিন্তু রোহিঙ্গাদের ওপর সর্বোচ্চ মাত্রায় নির্যাতনের বিষয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের পরও তারা নিরপেক্ষ তদন্তের ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।
দেশটির সরকার সেখানে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনকে প্রবেশে অনুমতি দিচ্ছে না। হত্যা, ধর্ষণ এবং ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনও দেশটির সরকার এবং সেনাবাহিনী নাকচ করে দিয়ে আসছে। পরমপ্রীত বলেন, ‘নির্যাতনের বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণের পরও তা নাকচ করে দেওয়া থেকে বোঝা যায়, রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়ানক নির্যাতনের বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের ন্যূনতম মনোযোগ নেই।’
এইচআরডব্লিউ বলছে, নির্যাতনের ঘটনা তদন্তের বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের ফাঁকা আশ্বাসে নির্ভর করা নিরাপত্তা পরিষদের উচিত নয়। রোম স্ট্যাচু অনুসারে কোনো দেশ ভয়াবহ অপরাধের ঘটনায় আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে তদন্ত বা বিচারকাজে অনিচ্ছুক বা অপারগ হলে তখন আন্তর্জাতিক আদালত ব্যবস্থা নিতে পারেন।

সংস্থাটি বলছে, মিয়ানমার যেহেতু আইসিসির সদস্য নয়, সে ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদের উচিত বিষয়টি আদালতে তুলে ধরা। গত এপিলে আইসিসির এক কৌঁসুলি মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে আপিল করেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের মতামতও চেয়েছে আইসিসি।

এদিকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের দেওয়া ৮ হাজারেরও বেশি মানুষের তালিকা থেকে প্রায় ১১০০ জনকে বাছাই করেছে মিয়ানমার। গত সোমবার নেইপিডোতে দেশটির অভিবাসন-বিষয়ক মন্ত্রী উ থেইন সিউ এ কথা জানান বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী। বাকিদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। তবে প্রত্যাবাসন কবে শুরু হবে, এ ব্যাপারে কিছু বলেননি তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!