• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুক্ত হচ্ছেন খালেদা জিয়া!


বিশেষ প্রতিনিধি মে ৩, ২০১৯, ০৭:১৪ পিএম
মুক্ত হচ্ছেন খালেদা জিয়া!

ঢাকা : ময়দানে শীতল হাওয়া। দেশের রাজনীতি ইতিবাচক পথে। চলমান প্রেক্ষাপটে সরকার ও বিরোধী  পক্ষ অনেকটাই নমনীয়। ইতোমধ্যে ঘটেছে অনেক ঘটনা। সব মহলে গুঞ্জন উঠেছে মুক্তির পথ খুলেছে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার। চিকিৎসার জন্য ভর্তি হবেন তার পছন্দের হাসপাতাল ইউনাইটেডে।

এদিকে গুঞ্জনকে বাস্তব রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী একটি মুসলিম দেশ। তবে তারাও এই দুতিয়ালি করছে বিশ্বপরাক্রমশালী একটি রাষ্ট্রের হয়ে। উভয়পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে একাধিক বৈঠকও হয়েছে ইতোমধ্যে।

কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশের রাজনীতির অঙ্গনে আরো নতুন চমক সৃষ্টিকারী ঘটনা ঘটবে। শীর্ষ দুটি রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ ত্রিপক্ষীয় একাধিক সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে শপথ নিয়ে একের পর নাটকীয় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সতর্কতা অবলম্বন করছেন বিএনপির উচ্চপর্যায়ের নেতারা।

নির্বাচনের পর থেকে বিএনপির রাজনীতিতে নানা রকম নাটকীয়তা শেষে এখন দলের একমাত্র আলোচনা হচ্ছে কবে মুক্তি মিলছে খালেদা জিয়ার। দ্রুত সময়ের মধ্যে মুক্ত খালেদা জিয়াকে দেখতে চান নেতাকর্মীরা। শীর্ষ নেতাদেরও এখন একমাত্র চিন্তা দলীয় প্রধানের মুক্তির বিষয়টি। তবে কবে নাগাদ খালেদা জিয়া মুক্তি পেতে পারেন, এ বিষয়ে তারা কিছু না জানাচ্ছেন না। ঈদের আগেই মুক্তির সম্ভাবনার কথা বলে নিম্ন ও মধ্য সারির নেতাদের শান্ত রাখা হচ্ছে।

দলের ওই দুই সারির নেতাদের প্রশ্ন— আইনি লড়াই জোরদার করা হয়েছে, সাদামাটা হলেও আন্দোলন আছে রাজপথে, সরকারের সঙ্গে দেন-দরবার এবং শপথ নিয়ে বৈধতা দেওয়া হয়েছে প্রত্যাখ্যান করা ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচকে।

এছাড়া প্রভাবশালী বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করে কূটনৈতিক পর্যায় থেকে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করাসহ সব ধরনের চেষ্টার পরও খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলছে না কেন? দলের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের কাছে এ প্রশ্নের জবাব চান নেতাকর্মীরা। এতদিন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। এখন বলছেন, তাদের একমাত্র চিন্তায় আছে দলীয় প্রধানের মুক্তি। এখন কেউ কেউ ঈদের আগে আবার কেউ রমজানের আগেই খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে বলে আর মধ্য ও নিম্ন মধ্য সারির নেতাকর্মীদের শান্ত করছেন। তবে কী প্রক্রিয়ায় নেত্রীর মুক্তি মিলবে, তা বলতে চাননা কেউই।

বিএনপির সূত্রমতে, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তার শুভাকাঙ্ক্ষী কেউই বসে নেই। যে যার মতো করে কাজ করছেন। পরিবারের সদস্যরা নিজেদের অবস্থান থেকে কাজ করছেন। দলীয় নেতারা দেন-দরবার করছেন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। কোনো কোনো নেতা ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন পর্যায় থেকে চেষ্টারত দুই-একজন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক আশ্বাসও পেয়েছেন। এখনই মুক্ত না হলেও খালেদা জিয়ার দাবি অনুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থার আশ্বাস পেয়েছেন তারা। এজন্য দুই-এক দিনের মধ্যে আবারো ইউনাইটেডে চিকিৎসার জন্য আবেদন জমা পড়তে পারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে কাছে।

বিএনপির সংসদ সদস্যরা শপথ নেওয়ার পরে রাজনৈতিক মহলে সমঝোতা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বলেন, দলের নেতাদের সঙ্গে দলীয়ভাবে কোনো সমঝোতার তথ্য তার কাছে নেই। খালেদা জিয়ার অজান্তে পারিবারিকভাবে কেউ সমঝোতার চেষ্টা করে থাকলে তা ভিন্ন বিষয়। তবে এখনো খালেদা জিয়ার একমাত্র সিদ্ধান্ত তিনি প্যারোলে মুক্তি নেবেন না।

একই বিষয়ে মধ্য সারির প্রভাবশালী এক নেতা বলেন, নেত্রীর পরিবরের সদস্যরাই তার মুক্তির জন্য সবচেয়ে বেশি তৎপর। সেই চেষ্টার ইতিবাচক ফল পেতে প্রভাবশালী দুটি রাষ্ট্রের মাধ্যমেও সরকারকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সব মিলিয়ে মুক্তির ব্যাপারে ক্ষমতাসীনরা আগের চেয়ে নমনীয়— তারা এমনটাই আঁচ করছেন।

দলীয় প্রধানের মুক্তির বিষয়ে সর্বশেষ তৎপরতা প্রসঙ্গে সূত্রগুলো বলছে, নেতাদের পাশাপাশি আইনজীবীরা পর্যন্ত এখন আর খালেদা জিয়ার মামলার পরিসংখ্যান নিয়ে ভাবেন না। কোন মামলায় জামিন বাকি আছে এবং কী করে জামিন সম্ভব, সেসব বিষয়ে তারা এখন আর চিন্তা করেন না। কারণ তারা এখন একটি বিষয়ে পরিষ্কার যে, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে না। সেজন্য নতুন কৌশল নিয়ে কাজ করার কথাই ভাবছেন তারা।

সূত্রমতে, শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পরে পরে বিএনপিতে এবার প্যারোল নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। শপথ নিয়ে প্রত্যাখ্যান করা নির্বাচকে বৈধতা দেওয়া যদি দলের রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে তাহলে দলকে ঘুরে দাঁড় করানো এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন বেগবান করতে প্যারোলে মুক্তি কেন রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে না— এই প্রশ্নের জবাব কর্মীরা নেতাদের কাছে জানতে চাচ্ছেন। তাই জামিন সম্ভব না হলেও প্যারোলে হলেও দলীয় প্রধানকে মুক্ত করারও দাবি উঠেছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!