• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযুদ্ধে বিমানবাহিনীর অবদান


নিউজ ডেস্ক নভেম্বর ২১, ২০১৯, ০৬:৫০ পিএম
মুক্তিযুদ্ধে বিমানবাহিনীর অবদান

ঢাকা : পাকিস্তান বিমানবাহিনী ত্যাগ করে আসা বাঙালি অফিসার, ক্যাডেট ও বিমানসেনারা সেপ্টেম্বর ১৯৭১ নাগাদ স্থলযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মোট প্রায় ৩৫ জন অফিসার ও ক্যাডেট এবং প্রায় ৫০০ বিমানসেনা পাকিস্তান পক্ষ ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন।

বিমান বাহিনীর এসব সদস্য যদিও স্থলযুদ্ধে খুবই বীরোচিত ভূমিকা রাখছিলেন, তবু তাদের মধ্যে একটি স্বাধীন বিমানবাহিনী গঠনের চেতনা খুব প্রবলভাবে কাজ করছিল।

এই চেতনা নিয়েই কিছুসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা পাইলট ভারতীয় বিমানবাহিনী, ভারতীয় সরকার এবং বাংলাদেশ ফোর্সেস (বিডিএফ)-এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

১৯৭১-এর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি ভারত সরকার অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারকে একটি স্বাধীন বিমানবাহিনী গঠনের জন্য আমেরিকায় তৈরি ১টি পুরনো ডিসি-৩ বিমান, কানাডার তৈরি ১টি অটার বিমান এবং ফ্রান্সের তৈরি ১টি অ্যালুয়েট-৩ হেলিকপ্টার দেয়।

এর সঙ্গে ভারতের নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরিত্যক্ত একটি রানওয়ে ব্যবহারের অনুমতি দেয়। এই সীমিত সম্পদ নিয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যাত্রা শুরু। বিমানবাহিনী প্রধান হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের উপ-প্রধান গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

সশস্ত্র বিমানবাহিনী গঠনে গোপনীয়তা রক্ষার্থে এর গুপ্ত নাম হয় ‘কিলো ফ্লাইট’। কিলো ফ্লাইটের অস্তিত্ব বিডিএফ এবং কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছাড়া আর কেউ জানতেন না। কিলো ফ্লাইটে বিমানবাহিনীর পাইলটদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন পিআইএ এবং পান্ট প্রটেকশনে পাইলট এসে যোগ দেন। বিভিন্ন সেক্টর থেকে যুদ্ধরত মোট ৫৮ জন বিমানসেনাকে এই ফ্লাইটে নিয়ে আসা হয়।

এই ফ্লাইটের নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদকে। এসব অত্যুৎসাহী বিমানবাহিনী সদস্যদের সমন্বয়ে ১৯৭১-এর ২৮ সেপ্টেম্বর সশস্ত্র বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর উদ্বোধন হয়। শুরু হয় কঠোর প্রশিক্ষণ।

এই ফ্লাইট ঢাকা, চট্টগ্রাম, লালমনিরহাট এলাকায় মোট ৫০টি অভিযান সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনা করে। এদের মধ্যে মোগলহাটে ১৫ অক্টোবর, লালমনিরহাট ও ঠাকুরগাঁয়ে ১৬ অক্টোবর, চৌগাছায় ২১ নভেম্বর, গোদনাইল ও পতেঙ্গায় ৩ ডিসেম্বর, সিলেটে ৪ ডিসেম্বর, জামালপুরে ৫ ডিসেম্বর, মেঘনা নদীতে ৬ ডিসেম্বর, সিলেটে ৭ ডিসেম্বর এবং নরসিংদীতে ১১ ডিসেম্বর বিমান হামলা বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বোচ্চ খেতাব বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এছাড়া ৬ জনকে বীরউত্তম, ১ জনকে বীরবিক্রম এবং ১৫ জনকে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!