• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মূর্তির ওপর উল্কি এঁকেই বিখ্যাত তিনি


নিউজ ডেস্ক অক্টোবর ৪, ২০২০, ০৩:১১ পিএম
মূর্তির ওপর উল্কি এঁকেই বিখ্যাত তিনি

ঢাকা : অনেকেই আছেন ত্বকে নানা রঙের নানা আকারের উল্কি বা ট্যাটু আঁকতে পছন্দ করেন। নায়ক, গায়ক, খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ট্যাটু করে থাকেন। এটা কারো নেশা অন্য কারো পেশা।

আমাদের দেশেও এর বেশ জনপ্রিয়তা। তবে ইতালির এক শিল্পী ত্বক নয়, মার্বেলের মূর্তির ওপর উল্কি এঁকে খ্যাতি অর্জন করেছেন। কম বয়সি ফাবিও ভিয়ালে কঠিন এই প্রক্রিয়া আয়ত্ত করে মার্বেলকে নতুন মাত্রা দিচ্ছেন। ট্যাটু বা উল্কি করা তেমন কষ্টের কাজ নয়। তেমন কোনো ব্যথা ছাড়াই শরীরে এটি করা যায়। তারপরও ফোবিও কেন এই কাজ করেছেন তাও মানুষের মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

ফাবিও ভিয়ালে এই কাজে বিশেষ ধরনের রং, স্প্রে গান, ফাইল ও স্টিল উল ব্যবহার করেন। ইতালির উত্তরে টুরিন শহরে থাকেন। সেখানেই তিনি মার্বেলের ভাস্কর্যের ওপর উল্কি আঁকেন। ফাবিও বলেন, মার্বেলের ওপর উল্কি আঁকার মাধ্যমে আমার কাছে দুটি জগতের মেলবন্ধন ঘটছে। একটি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। অন্যটি নতুন আলোকে প্রাচীন ভাস্কর্যগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরা।

এক্ষেত্রে যতটা সম্ভব ছিদ্রে ভরা মার্বেল বেছে নিতে হয়, যেটি রং ভালো করে ধারণ করতে পারে। কেননা মসৃণ পাথরে রং করলে তা ত্বকে করা উল্কির মতো দেখাবে না। কালির রং শুধু ভাস্কর্যের উপরিভাগেই সীমিত থাকে না। ধারালো ছেনি দিয়ে সেই রঙের কিছু অংশ চেঁচে নিতে হয়। অতিরিক্ত রঞ্জক পদার্থ স্টিল উলের সাহায্যে সরিয়ে নেওয়া হয়।

একটি মূর্তিকে উল্কি আঁকতে তার সময় লাগে প্রায় চার দিন : মার্বেলের মূর্তির ওপর উল্কি বসানোর কাজ শেষ করতে প্রায় চার দিন সময় লাগে ফোবিওর। তিনি তুরিন শহরে ভাস্কর্য নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন। আর ব্যবহারিক কাজ শিখেছেন কারারা অঞ্চলের বিখ্যাত উন্মুক্ত খাদে গিয়ে।

মার্বেল দিয়ে ফাবিও ভিয়ালে চোখ ধাঁধানো সব বস্তু সৃষ্টি করেন। যেমন ‘ধন্যবাদ ও আবার দেখা হবে’ নামের কাগজের ঠোঙা। দেখলে মনে হবে, স্টাইরোফোম দিয়ে তৈরি একটি হাত। প্লাস্টিকের ডাওয়েলও আসলে একটা ভাঁওতা। কালো মার্বেল দিয়ে তৈরি ‘ব্ল্যাক ফিস্ট’ যেন চামড়া দিয়ে তৈরি।

একটি গোটা মার্বেলের খণ্ড দিয়ে তিনি ফলের ঝুড়ি তৈরি করেন। ‘আগালা’ নামের প্রায় ৬০০ কিলো ওজনের একটি নৌকাও তৈরি করেছেন ফাবিও। এমন সব চমকের কারণে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে শহর থেকে শহরের বাইরেও। ফোবিওর মূর্তি প্রদর্শন করা গ্যালারির মালিক পিয়েত্রো গালিয়ার্দি বলেন, মার্বেল নিয়ে কাজ করে তিনি যে আনন্দ পান, তা স্পষ্ট টের পাওয়া যায়। তবে তিনি বিশাল কোনো কীর্তির পথে না গিয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা ছাড়াই খেলাচ্ছলে সৃষ্টির কাজে মেতে ওঠেন।

তারপর সেই পাথরের ওপর উল্কিও আঁকলেন তিনি। কারারা মার্বেল দিয়ে তৈরি হাতের মুঠোর দাম প্রায় ১২ হাজার ইউরো। ফাবিও ভিয়ালে ক্রেতাদের বায়না অনুযায়ী নয়, নিজের পছন্দমতো উল্কি আঁকেন। যেমন মিলোর ভিনাসের ওপর জাপানি চেরি ফুলের মোটিফ। তিনি বলেন, আমি সবসময় ট্যাটু-টেমপ্লেট বেছে নিয়ে ভাস্কর্য ও মোটিফের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটানোর চেষ্টা করি। সেই মোটিফ মার্বেলের ওপর ফুটিয়ে তুলে তার প্রতিটি রেখাকে ভাস্কর্যের আকৃতির সঙ্গে মানানসই করে তোলাই সবচেয়ে কঠিন কাজ।

ফাবিও প্রতিনিয়ত তার উল্কির প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটিয়ে চলেছেন। অবশ্য তার নিজের ত্বকের ওপর একটিও উল্কি নেই। ফোবিও পাথরের সাদাসিদা মূর্তিগুলোতে আধুনিকতার ছোঁয়া দিয়েছেন। তিনি সবসময় চেয়েছেন সাধারণের মাঝে নতুনত্ব আনতে।

মুক্ততরীর প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক জয় দত্ত বলেন, মুক্ততরীর কার্যক্রম শুরু হয় মূলত সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। তাদেরকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য।

আমাদের লক্ষ্য, আজকের সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে, আগামীদিনের সুবিধা প্রদানকারী হিসেবে গড়ে তোলা। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণে শিক্ষার পাশাপাশি দরকার সেই পরিবারের আয়ের স্থায়ী সমাধান। এদিকটি বিবেচনা করে আমাদের প্রজেক্ট প্রত্যাশার আলোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

আমরা বিশ্বাস করি, সবাই একত্র হলে যে কোনো কাজকে সফল করা সম্ভব। হয়তো বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটু কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। আমাদের এখন বিভিন্ন জেলাতে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যারা দেশকে ভালোবেসে দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে চান তারা চাইলেই যোগ দিতে পারেন আমাদের সঙ্গে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!