• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি, ইসলাম কী বলে?


ধর্মচিন্তা আগস্ট ১২, ২০১৮, ০৭:১০ পিএম
মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি, ইসলাম কী বলে?

ঢাকা: কোরবানি’ শব্দটি আরবি ‘কোরবান’ শব্দ থেকে আগত। যার অর্থ উৎসর্গ করা। অন্যদিকে কোরবান শব্দটি কুরবু ধাতু থেকে উৎপন্ন, যার অর্থ নব তথা নিকটবর্তী হওয়া।

হজরত যায়েদ বিন আরক্বাম (রা.) বলেন, রাসূল (স.)-এর সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এই কোরবানিটা কী? রাসূল (স.) জবাবে বললেন, তোমাদের পিতা ইব্রাহিম (আ.)-এর সুন্নত বা আদর্শ।

তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, এতে আমাদের জন্য কী ফায়েদা রয়েছে হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, (কোরবানির পশুর) প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি রয়েছে। সাহাবিরা আবার জানতে চইলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ভেড়া-দুম্বার পশমের ব্যাপারে কী কথা? তিনি বললেন, এর প্রতিটি পশমের বিনিময়েও এক একটি নেকি রয়েছে। (ইবনু মাজাহ)।

আর কিছুদিন পরই কোরবানির ঈদ। আর এই কোরবানি নিয়ে আমাদের মাঝে নানা ধরনের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে।

যেমন- অনেকের ধারণা কোরবানি শুধু মৃত ব্যক্তিদের জন্য বা তাদের পক্ষ থেকে করা হবে। এ ধারণা মোটেই ঠিক নয়। মৃত ব্যক্তির তরফ থেকে পৃথক কুরবানি করার কোন দলীল নেই। তবে মৃত ব্যক্তিদের জন্য কুরবানী করা জায়েয ও একটি সওয়াবের কাজ। কোরবানি একটি সাদকা। আর মৃত ব্যক্তির নামে যেমন সদকা করা যায় তেমনি তার নামে কোরবানিও দেয়া যায়। মৃতব্যক্তি এর দ্বারা উপকৃত হবে, ইনশাআল্লাহ। উপরন্তু, মৃতব্যক্তি এ ধরনের পূণ্যকর্মের মুখাপেক্ষীও থাকে। যেমন, মৃত ব্যক্তির জন্য সাদকার বিষয়ে হাদীসে এসেছে

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (রা.) এর কাছে এসে জিজ্ঞের করল, হে রাসূল! আমার মা হাঠাৎ ইন্তেকাল করেছেন। কোন অসিয়ত করে যেতে পারেননি। আমার মনে হয় তিনি কোন কথা বলতে পারলে অসিয়ত করে যেতেন। আমি যদি এখন তার পক্ষ থেকে সদকা করি তাতে কি তার সওয়াব হবে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩৩৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০০৪)।

মৃত ব্যক্তির জন্য এ ধরনের সদকা ও কল্যাণমূলক কাজের যেমন যথেষ্ট প্রয়োজন ও তেমনি তার জন্য উপকারী।

যদি কোন কারণে মৃত ব্যক্তির জন্য কুরবানী ওয়াজিব হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য পূর্ণ একটি কোরবানি করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় ব্যক্তি নিজেকে বাদ দিয়ে মৃত ব্যক্তির জন্য মৃত ব্যক্তির পক্ষে কোরবানি করেন। এটা মোটেই ঠিক নয়। ভাল কাজ নিজেকে দিয়ে শুরু করতে হয় তারপর অন্যান্য জীবিত ও মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে করা যেতে পারে।

যেমন হাদিসে এসেছে- আয়েশা (রা.) ও আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন কোরবানি দিতে ইচ্ছা করলেন তখন দু‘টো দুম্বা ক্রয় করলেন। যা ছিল বড়, হৃষ্টপুষ্ট, শিংওয়ালা, সাদা-কালো বর্ণের এবং খাসি। একটি তিনি তার ঐ সকল উম্মতের জন্য কোরবানী করলেন; যারা আল্লাহর একত্ববাদ ও তার রাসূলের রিসালাতের সাক্ষ্য দিয়েছে, অন্যটি তার নিজের ও পরিবারবর্গের জন্য কোরবানী করেছেন। (ইবনে মাজা, হাদিসটি সহীহ)

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!