• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা মকবুল শ্রেষ্ঠ পুলিশ অফিসার


রাজশাহী প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০, ০৫:৫০ পিএম
মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা মকবুল শ্রেষ্ঠ পুলিশ অফিসার

রাজশাহী: দেশের একজন সেবক হিসেবে নিজেকে চেয়েছেন তিনি। আর সেবার ব্রত নিয়ে পুলিশে যোগদান করেছিলেন মকবুল হোসেন। এরপর উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় যোগদান করেন তিনি। আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংসতা দমনে সাহসের সঙ্গে দায়িত্বপালন করেছেন মকবুল। 

কিন্তু এর চড়া মূল্য দিতে হয়েছে তাকে। ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ নগরীর রানিবাজার এলাকায় বোমার আঘাতে ডান হাতের কব্জি ও বাম হাতের কয়েকটি আঙুল হারান এসআই মকবুল। ক্ষতবিক্ষত হয় মুখমণ্ডল, দুই বাহু ও উরু। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ওই দিনই তাকে হেলিকপ্টারে নেয়া হয় ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। সেখান থেকে তাকে নেয়া হয় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে।

আর ওই সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তার বাবা আনসার আলী পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার। চিকিৎসা ব্যয় বহনের সামর্থ্য ছিল না পরিবারের। ফলে দেশেই চিকিৎসা নিয়ে তাকে কাজে ফিরতে হয়। পুলিশে যোগদানের এক মাস ১১ দিনের মাথায় বোমা হামলায় সব স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছিল এসআই মকবুলের। 

কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। কৃত্রিম হাত নিয়ে নেমে পড়েন কাজে। অন্যসব কর্মকর্তার মতো নিয়মিত অভিযানেও নামেন তিনি। এরই মধ্যে দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে পুলিশে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন এসআই মকবুল। ২০১৪ সালে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন পিপিএম পদক। নগর পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে দুবার হয়েছেন সেরা পুলিশ অফিসার। 

সর্বশেষ গত জানুয়ারি মাসের সেরা অফিসারের সম্মাননাও পেয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আরএমপি সদর দফতর কনফারেন্স রুমে এক সভায় তাকে এ সম্মাননা দেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আরএমপি কমিশনার হুমায়ুন কবির।

এই সভায় পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে শ্রেষ্ঠ উপ-পুলিশ কমিশনার, সহকারী পুলিশ কমিশনার, শ্রেষ্ঠ অফিসার, শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক অফিসার, শ্রেষ্ঠ উদ্ধারকারী, শ্রেষ্ঠ সিটিএসবি অফিসার, শ্রেষ্ঠ কোর্ট অফিসার এবং বিশেষ পুরস্কার সম্মাননা স্মারক দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) সুজায়েত ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) সালমা বেগমসহ আরএমপির কর্মকর্তারা।

এদিকে, সম্মাননা পাওয়া এসআই মকবুল হোসেন নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায় সেকেন্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত। নগরীর কুখ্যাত কয়েকটি মাদক জোন এ থানা এলাকায়। সেখানকার মাদক কারবারিদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক এসআই মকবুল। সাঁড়াশি অভিযানে ভেঙে দিয়েছেন এলাকার মাদক সিন্ডিকেট। সম্মাননা পাওয়ায় বেশ উজ্জীবিত এসআই মকবুল হোসেন। এজন্য তিনি নগর পুলিশ কমিশনার, থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি আমার। যেকোনো সময় সব ধরনের অভিযানে অংশ নিতে পারি। কেবল সাহস এবং মনোবল আমাকে এতদূর নিয়ে এসেছে। আগামীতেও যেকোনো পরিস্থিতিতে জাতির কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখব।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!