• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ-সুতা ব্যবহারে ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যাখ্যা


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২২, ২০১৮, ০২:০৮ পিএম
মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ-সুতা ব্যবহারে ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যাখ্যা

ঢাকা: মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট দিয়ে রোগ নির্ণয় এবং মেয়াদ পার হওয়া অস্ত্রোপচারের কাজে ব্যবহৃত সুত রাখার দায়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতাল ২০ লাখ টাকা জরিমানা গণার পর গণমাধ্যমে তার ব্যাখ্যা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (২১ মার্চ) দুপুর থেকে সন্ধ্যা নাগাদ গুলশানের এই হাসপাতালের প্যাথলজী ল্যাবরেটরী ও ফার্মাসীতে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বিষয়টি বিভিন্ন দৈনিক, টেলিভিশন ও অনলাইন গণমাধ্যমে আসে, এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একটি ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মিডিয়া এবং পাবলিক রিলেশন কর্মকর্তা সাজেদুর রহমান শুভ সংবাদমাধ্যমে পাঠিয়েছেন।

ইউনাইটেড হাসপাতলের ব্যাখ্যা- বুধবার (২১ মার্চ) র‌্যাবের এই অভিযান চলাকালে তারা পলিফার্মা নামক একটি ঔষধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের দলিল দেখায়, যেটিতে ২০১৪ সালের তারিখ আছে এবং যেটিতে দেখা যায় যে তারা অন্যান্য হাসপাতালের পাশাপাশি ইউনাইটেড হাসপাতালেও ঐ সময় কিছু ঔষধ সরবরাহ করেছে। এই প্রসঙ্গে ইউনাইটেড হাসপাতালের বক্তব্য হলো, ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ের পরে এই ঔষধ সরবরাহকারীর কাছ থেকে আর কোন প্রকারের ঔষধ কেনা হয়নি, কেননা, তার আগে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক ঐ সকল জীবন রক্ষাকারী ঔষধ যা বাংলাদেশে তৈরী হয় না, সেগুলো কেনার কোন বিকল্প প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা হাসপাতালগুলোকে দেয়া হয়নি। 

তবে ঐ সময়ের পর থেকে অদ্যবধি সকল জীবনরক্ষাকারী ঔষধ যা বাংলাদেশে তৈরী হয় না, তা বর্তমানে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর মনোনীত কেবলমাত্র “জাজ করপোরেশন” থেকে কেনা হচ্ছে। অতএব, ২০১৪ সালের পুরোনো একটি দলিল, যা বর্তমানে কার্যকর নহে, সেটিকে ঢালাও ভাবে তুলে ধরে ইউনাইটেড হসপিটালে ভুয়া আমদানীকারকের ঔষধ ব্যবহার করা হচ্ছে এই মর্মে হাসপাতালের সুনিয়ন্ত্রিত গুণগত মানের ঔষধ সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা খুবই দুঃখজনক কেননা অভিযান চলাকালে ফার্মাসীতে এই ধরনের কোন ঔষধের আলামতও পাওয়া যায়নি।

অভিযানের সময় কিছু সংখ্যক ল্যাবরেটরী রিএজেন্ট এর মেয়াদ ৬ দিন থেকে ২০ দিন পূর্ব হতে উত্তীর্ন পাওয়া যায়। এছাড়াও হাসপাতালের ল্যাবে প্রাপ্ত মেয়াদোত্তীর্ন সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড, পটাশিয়াম হ্ইাড্রোক্সোইড ও সোডিয়াম ক্লোরাইডের জারগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং এই জারগুলোর প্রত্যেকটি প্রায়ই সম্পূর্ন ভরা ছিল যা প্রমান করে, ল্যাবের পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজে দীর্ঘদিন এই রিএজেন্ট গুলো ব্যবহৃত হয়নি কেননা  আধুনিক পদ্ধতিতে মাইক্রোবায়োলজী ল্যাবে বিভিন্ন রিএজেন্ট “Ready to use” হিসাবে ক্রয় এবং ব্যবহার করা হয় এজন্য উপরে উল্লেখিত ক্যমিক্যালস্গুলো বর্তমানে ব্যবহার করার সুযোগ নাই, ফলে মেয়াদ উত্তীর্ন হবার পরে এগুলো বাতিল করা অবস্থায় ল্যাবে একটি কোনায় রাখা ছিলো। তবে হাসপাতাল মনে করে এগুলো সম্পূর্ন ভাবে ল্যাব থেকে সময়মত সরিয়ে না ফেলাটি ছিল একটি ভুল।

যে সকল রিএজেন্ট বা সুচার ম্যাটেরিয়ালকে বলা হচ্ছে যে, মেয়াদোত্তীর্ন সময়ের কাছাকাছি পাওয়া গেছে, সেগুলো যেহেতু এখনো মেয়াদের ভিতরেই আছে, কাজেই সেগুলোকে কেন জব্দ করা হলো, তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বোধগম্য নয়।

এছাড়াও কোন কোন মিডিয়া কর্মী এই ধরনের ঢালাও রিপোর্টও করেছেন যে, ইউনাইটেড হসপিটালকে এর আগেও এই ধরনের জরিমানা করা হয়েছে। ইউনাইটেড হসপিটাল এই ঢালাও মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কেননা অতীতে এ ধরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি।

তারা আরো উল্লেখ করে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সবসময়ই আইন মেনে চলতে বিশ্বাস করে। র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট ও তার সহকর্মীরা হাসপাতাল পরিদর্শনকালে হাসপাতালের সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা পেয়েছে। যে কোন প্রকার ত্রুটি বিচ্যুতি সংশোধনে ও নিয়ম পালনে ইউনাইটেড হাসপাতাল বরাবরই সচেতন ভূমিকা রেখেছে। 

র‌্যাব কর্তৃক এই অভিযানকে ইউনাইটেড হসপিটাল কর্তৃপক্ষ সাধুবাদ জানায় তবে এই ব্যাপারে অভিযান চলাকালীন প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্ত সঠিকভাবে সঠিক ব্যাখ্যায় অবিকৃত রূপে প্রকাশ করা উচিত বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মনে করে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!