• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যুক্তরাজ্যের গভীর পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের নির্বাচন


কূটনৈতিক প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৮, ২০১৮, ১০:৩৬ পিএম
যুক্তরাজ্যের গভীর পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের নির্বাচন

ঢাকা : বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাজ্য। গত শুক্রবার দেশটির মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী লর্ড আহমেদ কমনওয়েলথের ৩০টি রাষ্ট্রের মানবাধিকার পর্যালোচনা করে একটি অর্ন্তবর্তী প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কে এমন মন্তব্য করা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে জনসাধারণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা অংশে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার নতুন একটি আইন (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮) প্রণয়ন করেছে। সুশীল সমাজ বলেছে যে, আইনটি সরকারকে দুর্বৃত্তায়নে সহায়তা করবে।’

বাংলাদেশে এখনো গণমাধ্যমকর্মীরা নির্যাতিত হচ্ছে, প্রতিবেদনে এমন ইঙ্গিত দিয়ে বলা হয়েছে, ‘সাংবাদিক নির্যাতন বাংলাদেশে সাধারণ ঘটনা। গত জুন মাসেও দেশটিতে একজন ব্লগারকে হত্যা করা হয়।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে মুক্তমতের চর্চা এবং গণমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে যুক্তরাজ্য আর্টিকেল ১৯ অনুযায়ী মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ করছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’

এর আগে, গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সে ‘বাংলাদেশ: নভেম্বর ২০১৮ আপডেট’ শীর্ষক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, আগামী ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে সবগুলো রাজনৈতিক দল সমান সুযোগ পাচ্ছে না। বোদ্ধারা মনে করছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সহজেই এই নির্বাচনে জয়লাভ করবে, কিন্তু ভোটের ইতিহহাস বলে, ভোটের মাঠে বড় দুইটি দল সমানে সমান।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সবসময়েই উত্তপ্ত থাকে উল্লেখ করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সামনের নির্বাচনকে ঘিরে এই পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হতে পারে। বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় এখন জেল হেফাজতে রয়েছে। এই দলটির দাবি ছিল যে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হোক। সরকারি দল এই দাবি না মানলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপি ভোটে থাকবে বলে নিশ্চিত করেছে। ২০ দলীয় জোটের প্রধান বিএনপি ধর্ম নিরপেক্ষ ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ঐক্য করে ভোটের মাঠে থাকার কথা জানিয়েছে। যার নেতৃত্বে রয়েছেন অভিজ্ঞ আইনজীবী এবং সাবেক মন্ত্রী ড. কামাল হোসেন।’

‘অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ এবারও ভোটের মাঠে ১৪ দলীয় জোটে থাকছে। ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামী লীগ এবার একাধিক কট্টরপন্থী ইসলামিক দলের সঙ্গে জোট গড়েছে। যার মধ্যে হেফাজতে ইসলাম অন্যতম। এবারের ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগ বিগত সময়ের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরবে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নির্বাচন কমিশন ৩০ ডিসেম্বর ভোটের জন্য সকল প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রথমে ২৩ ডিসেম্বর ভোটের দিন নির্ধারণ করলেও পরবর্তী সময়ে বিএনপি এবং অন্য দলের আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ভোটের দিন পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করে। কিন্তু ভোটের মাঠে সবগুলো দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন।’

‘সামনের নির্বাচন নিয়ে আর্ন্তজাতিক মহলের সংশয় রয়েছে বলেই হয়তো ইউরোপিয় ইউনিয়ন ভোটের মাঠে পুরো পর্যবেক্ষক দল না পাঠিয়ে দুইজন বিশেষজ্ঞ পাঠাচ্ছে। কমনওয়েলথও এখন পর্যন্ত পর্যবেক্ষক পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানায়নি।’

ওই প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ মুশতাক খানের সতর্ক বার্তার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘এক দলের শাসনে অর্জিত আর্থ-সামাজিক খাতের উন্নয়ন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের মূল্য অনেক বেশি।’

যুক্তরাজ্যের এশিয়া বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড বলেন, ‘বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সব দলের সমন্বয়ে অংশগ্রহণমূলক ভোট অনুষ্ঠান চায় যুক্তরাজ্য সরকার। আমি গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও অংশগ্রহনমূলক ভোটের কথা বলেছি। এ ছাড়া গত ১ নভেম্বর প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকেও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছি।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!