• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের নির্মমতায় কৃষ্ণাঙ্গ যুবককের মৃত্যু (ভিডিও)


নিউজ ডেস্ক মে ২৭, ২০২০, ১০:০১ পিএম
যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের নির্মমতায় কৃষ্ণাঙ্গ যুবককের মৃত্যু (ভিডিও)

ঢাকা : নিরস্ত্র এক কৃষ্ণাঙ্গকে যুবককে নির্মমভাবে হত্যার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিসের চারজন পুলিশ সদস্যকে গতকাল মঙ্গলবার বরখাস্ত করা হয়েছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। 

এদিকে, পুলিশ সদস্যদের বরখাস্ত করার খবর প্রচারিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে ঘটনাস্থলে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেন। কিন্তু এক পর্যায়ে তা সহিংসতায় রূপ নেয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ মাটিতে পড়ে আছেন। তার ঘাড়ে একজন পুলিশ সদস্য হাঁটু গেঁড়ে বসে আছেন। নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য ওই কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি ছটফট করছেন। তিনি আর্ত চিৎকার করছেন, ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।’

এই ভিডিও ছড়িয়ে পরার পর চার পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদেরকে বরখাস্তের খবর প্রচারিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে ঘটনাস্থলে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেন। কিন্তু এক পর্যায়ে তা সহিংস হয়ে ওঠে। পুলিশ তাদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ও বিন ব্যাগ ছোড়ে। জবাবে বিক্ষোভকারীরা তাদের দিকে পানির বোতল ও অন্য জিনিসপত্র ছুড়তে থাকে। তাদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক একটি পুলিশ স্টেশনের বাইরে ভাঙচুর করে।

এর আগে মিনিয়াপোলিস পুলিশ প্রধান মেদারিয়া আরাডোনদো সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভিডিওতে দেখা ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে এফবিআই।’

একই সংবাদ সম্মেলনে মেয়র জ্যাকব ফ্রে বলেন, ‘তদন্তে দেখা গেছে, মৃত ওই কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির নাম জর্জ ফ্লোয়েড। একজন কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার জন্য কাউকে যুক্তরাষ্ট্রে মরতে হবে না। ৫ মিনিট ধরে আমরা দেখেছি একজন শেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ফ্লোয়েডের কাঁধে হাঁটু গেঁড়ে বসে আছেন। এ সময় আপনি শুনতে পাবেন কেউ একজন সাহায্যের জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।’ এরপরই তিনি টুইটারে ওই চার পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন।

এই হত্যাকাণ্ড ২০১৪ সালে নিউ ইয়র্ক সিটিতে কৃষ্ণাঙ্গ এরিক গার্নারকে হত্যার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনিও একইরকমভাবে হত্যার শিকার হয়েছিলেন। তিনিও পুলিশকে বলেছিলেন, ‘আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না।’

সোমবারের ঘটনাটি ঘটে পুলিশ যখন একটি জালিয়াতির খবর পায় এবং বর্ণনা অনুযায়ী ফ্লোয়েডের সঙ্গে মিল পায়। পুলিশের বর্ণনা মতে, ফ্লোয়েডের বয়স ৪০ এর কোটায়। তিনি একটি গাড়িতে ছিলেন। তিনি গাড়ি থেকে নামার পর পুলিশের সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু হয়। এক পর্যায়ে ফ্লোয়েডকে হাতকড়া পরানো হয়।

পুলিশ বলেছে, এ সময় ফ্লোয়েড মানসিক অস্থিরতায় ভুগছে বলে মনে হয়েছে। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী কেউ একজন মোবাইল ফোনে ধারণ করেছেন সেই দৃশ্য। তাতে এমন বাদানুবাদের কোনো দৃশ্য নেই। এতে দেখা যায়, একটি গাড়ির পাশেই চাকার কাছে পড়ে আছেন ফ্লোয়েড। আর এক পুলিশ কর্মকর্তা তার কাঁধে সজোরে হাঁটু গেঁড়ে চাপ প্রয়োগ করছেন। এ সময় ফ্লোয়েডকে বার বার আর্তনাদ করতে শোনা যায়। তিনি নিঃশ্বাস নিতে চান। বলেন, ‘প্লিজ আমি দম ছাড়তে পারছি না, প্লিজ।’

তখন আশপাশে যারা উপস্থিত ছিলেন, তারা পুলিশের প্রতি সদয় হওয়ার আহ্বান জানায়। কয়েক মিনিট পড়ে আস্তে আস্তে নিথর হয়ে পড়েন ফ্লোয়েড। একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। অল্প সময়ের মধ্যে সেখানে তিনি মারা যান বলে জানায় পুলিশ। তবে এক্ষেত্রে কোনো অস্ত্রের ব্যবহার হয়নি। এ ঘটনায় কোনো পুলিশ কর্মকর্তা আহতও হননি।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!