• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুক্তরাষ্ট্রে এশিয়ানদের উপার্জনের সুযোগ কমছে


আন্তর্জাতিক ডেস্ক আগস্ট ১, ২০১৮, ০৯:২৩ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে এশিয়ানদের উপার্জনের সুযোগ কমছে

ঢাকা : ১৯৮১ সনে কুইন দিনহ’র বাবা মা ভিয়েতনাম থেকে অভিবাসি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়িজমান। এর ঠিক এক বছর পর ক্যালিফোর্নিয়ায় তার জন্ম হয়। এরপর থেকে সেখানেই তার বেড়ে ওঠা, এক পর্যায়ে দিনহর বাবা মা খাদ্য সরবরাহর ব্যবসা শুরু করেন।

এখানে দিনহর পরিবারের উদাহরণ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য এশিয়ানদের বিচার করা হচ্ছে না। ওই পরিবার অনেকটাই সফল হলেও সব পরিবার কিন্তু এখনো জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। তাদের আয় নেটিভ আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক কম।

বিষয়টি এবার উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক প্রতিবেদনে। ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘অন্যান্য সময়ের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এশিয়ানদের কর্মক্ষেত্র ও আয় কমে আসছে।’ তারা আরো পরিস্কার করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে আদি নাগরিকদের চেয়ে তাদের আয় অনেক কম।

ওই গবেষণায় দুই শ্রেণির মানুষের আয়ের কথা বলা হয়েছে, এক. উচ্চ আয়ের মানুষ দুই. নিম্ন আয়ের মানুষ। সেক্ষেত্রও বলা হয়েছে দুই শ্রেণির মানুষেরই আয় আমেরিকানদের চেয়ে ১০ শাতংশ কম।

এই গবেষণায় ১৯৭০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এশিয়ান ও আমেরিকানদের আয় দেখা হয়েছে। তবে এশিয়ান এবং নিগ্র-আমেরিকানের আয়ের ক্ষেত্রে তফাত কিছু কম।   

গংস্থাটির জ্যেষ্ঠ গবেষক রাকেস কোছার বলেন, ‘এশিয়ানদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা আমেরিকায় অনেক সফল এবং অনেক ধনী। তবে এই সংখ্যা খুবই কম। গরীবই বেশি’

এশিয়া থেকে দুইভাবে আমেরিকায় মানুষ পাড়ি জমিয়েছেন। এক. স্বাভাবিক পন্থায় দুই. যুদ্ধবিগ্রহের মুখে শ^রণার্থী হয়ে। যার কারণে অনেকেই সেখানে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি বলে ধারণা পিউ রিসার্স সেন্টারের।  

আমেরিকান ও এশিয়ানদের মধ্যে উপার্জনের এই তফাত সম্পর্কে রাকেশ কোছার বলেন, ‘এই দশকেই এই তফাত সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে গত পাঁচ বছরে ওই গবেষণা অনুযায়ী, ২০১৬ সালে এশিয়ানদের গড় আয় ছিল সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৫২৯ আমেরিকান ডলার আর সর্বোনিম্ন ছিল ১২ হাজার ৪৭৮। যা অন্যান্য মহাদেশের লোকজনের চেয়ে অনেক কম।

দিনহ এখন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া রিসোর্স অ্যাকশন সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক। তার প্রতিষ্ঠান, আমেরিকায় থাকা কম্বোডিয়ান, লোটিয়ান এবং ভিয়েতনামিসদের সব ধরণের সহযোগিতা দিয়ে থাকে।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আমেরিকায় বেশকিছু আইনের কারণে এশিয়ান ও আমেরিকানদের মধ্যে এই তফাত সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে স্বাস্থ এবং বাসস্থানের ক্ষেত্রে।’

ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা গরীব এশিয়ানদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ভুটান, ভারত এবং বাংলাদেশের নাগরিক বেশি। যার গড় ২৮ থেকে ৩৩ শতাংশের মধ্যে। যা আমেরিকার জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ।

দিনহ বলেন, ‘বহুজাতিক এই দেশে পুরোপুরি এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে অবশ্যই তফাত অনেক কমে আনা সম্ভব।’ তিনি আশা করেন এই প্রতিবেদনের পর যুক্তরাষ্ট্রের কর্তারা বিষয়টি আমলে আনবেন।

তবে যুক্তরাষ্ট্রে আয়ের ক্ষেত্রে এশিয়ানদের ভাষাগত সমস্যাকেও বড় করে দেখছেন এই ভিয়েতনামি। তিনি বলেন, ‘খুব আল্প সংখ্যক এশিয়ানই ইংরেজি ভালোভাবে আয়ত্ব করতে পারেন। যার কারণে তারা স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ কম করতে পারেন।’

আবার শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রেও আমেরিকানদের চেয়ে এশিয়ানরা অনেক পিছিয়ে। যার বাস্তব চিত্র হলো প্রায় অর্ধেক এশিয়ানই স্নাতক শেষ করেছেন। যা আমেকিনদের ৯ শতাংশের সমান।

তবে পিউ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রনীতি, এশিয়ানদের সম্পর্কে ধর্মীয় উগ্রবাদিতার ধারণাসহ নানা করণেই সেসব দেশ থেকে যাওয়া নাগরকিরা যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ কম পাচ্ছে। সূত্র: হাফিংটন পোস্ট

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!