• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যেসব কারণে ঠোঁট শুষ্ক হয়


লাইফস্টাইল ডেস্ক জানুয়ারি ২৭, ২০১৯, ০১:৩৬ পিএম
যেসব কারণে ঠোঁট শুষ্ক হয়

 

ঢাকা : দেহের অন্যান্য স্থানের ত্বকের তুলনায় ঠোঁট অবিশ্বাস্যরকম পাতলা এবং ঠোঁটের কোনো তৈলগ্রন্থি না থাকায় সহজেই শুকিয়ে যেতে পারে।

আবহাওয়া, শীতল বায়ু, শুষ্ক বায়ু, ইনডোর হিটিং, লিপস্টিকের রাসায়নিক উপাদান ও কিছু ওষুধের কারণে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায়, যার ফলে ঠোঁট ফেটে যায় ও ঠোঁটে একধরনের ছাল বা আবরণ সৃষ্টি হয়।

শুষ্ক ও ফাটা ঠোঁট শুধু প্রাণবন্ত হাসির অন্তরায় নয়, শুষ্ক ঠোঁট যন্ত্রণাও দিতে পারে— বিশেষ করে ঠোঁট ফেটে গেলে ও রক্তক্ষরণ হলে। সাধারণত শীতকালে ঠোঁট বেশি শুষ্ক হয়, কিন্তু সূর্যরশ্মি থেকেও ঠোঁট শুষ্ক হতে পারে। এখানে ঠোঁট শুষ্ক হওয়ার কিছু কারণ ‘রিডার্স ডাইজেস্ট’ অবলম্বনে তুলে ধরা হয়েছে সোনালীনিউজ-এর পাঠকদের জন্য-

ঠোঁট চাটা : আপনি মনে করতে পারেন রুক্ষ ঠোঁট কিছুক্ষণ পরপর জিভ দিয়ে ভিজালে তা ঠোঁটের জন্য ভালো; কিন্তু সত্য হচ্ছে— নিজের ঠোঁট লেহনে ঠোঁট আরো বেশি মাত্রায় শুকিয়ে যায়। নিউইয়র্ক সিটির স্যাডিক ডার্মাটোলজির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ডা. নিল স্যাডিক বলেন, লালায় এনজাইম থাকে যা ঠোঁটকে শুষ্ক করে এবং ঠোঁটের ত্বককে ইরিটেট করে। তাই এ অভ্যাসটি ত্যাগ করতে হবে। এক্ষেত্রে যখন আপনি ঠোঁট ভিজানোর তাড়না অনুভব করবেন, তখন ময়েশ্চারাইজিং লিপ বাম ব্যবহার করুন।

ভুল টুথপেস্টের ব্যবহার : নিয়মিত দাঁত ব্রাশ ক্যাভিটি প্রতিরোধ করে এবং এটি মুখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়; কিন্তু ভুল টুথপেস্টের ব্যবহারে আপনার ঠোঁট শুকিয়ে যেতে পারে। তাছাড়া আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, আপনার টুথপেস্ট আপনার ঠোঁটকে ইরিটেট করছে না। কখনো কখনো টার্টার (দাঁতের পাথর) নিয়ন্ত্রণ করে এমন টুথপেস্ট ঠোঁটকে ইরিটেট করতে পারে। যদি আপনি ধারণা করেন যে, আপনার টুথপেস্টের কারণে ঠোঁট শুকিয়ে যাচ্ছে, তাহলে যথাসম্ভব ভিন্ন উপাদানের অন্য ব্র্যান্ডের টুথপেস্ট ব্যবহার করুন।

ভুল লিপ বামের ব্যবহার : আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি অনুসারে, আপনার লিপ বামে লিপ প্লাম্পারের বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত নয়। যেমন হুল ফোটানোর অনুভূতি ও ঠোঁটে ফোলা ভাব আনা। এর পরিবর্তে ভালো অনুভূতি দেয় এমন লিপ বাম নির্বাচন করুন। বিশেষ করে শুষ্কতার উপাদান আছে এমন লিপ বাম পরিহার করুন, যেমন কৃত্রিম সুগন্ধি এবং নিশ্চিত হোন যে আপনার লিপ বামে শুষ্কতা কমানোর উপাদান আছে, যেমন কোকোয়া বাটার বা কলোইডাল ওটমিল।

মুখে শ্বাসকার্যের অভ্যাস : হাইড্রেশনের অভাবে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে থাকে; কিন্তু নাকের পরিবর্তে মুখ দিয়ে শ্বাসকার্য চালালেও আপনার ঠোঁট শুষ্ক হতে পারে। আপনার নাসিকাপথ পরিষ্কার রাখতে ন্যাজাল স্যালাইন স্প্রে অথবা নেটি পট ব্যবহার করুন এবং বায়ুর শুষ্কতা হ্রাসের জন্য হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করে ঘুমান। নাসিকাপথ দিয়ে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল করতে না পারলে নাকের শ্বাসকার্য ব্যাহত হয়। অবস্থা খুব বেশি খারাপ হলে সার্জারি প্রয়োজন হতে পারে।

লিপস্টিকের ব্যবহার : লিপস্টিকের ব্যবহারে আপনার ঠোঁট শুষ্ক হতে পারে। দুশ্চিন্তা করবেন না- আপনি এখনো লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারবেন; কিন্তু এর জন্য আপনাকে লিপস্টিক প্রয়োগের আগে ময়েশ্চারাইজিং লিপ বাম ব্যবহার করতে হবে।

ঘন ঘন আকাশপথে ভ্রমণ : বিমানের বায়ু মারাত্মক ডিহাইড্রেটিং হিসেবে পরিচিত। নিম্ন আর্দ্রতা ও উচ্চ উচ্চতার মধ্যে ঠোঁটের ত্বক থেকে ময়েশ্চার কমে যায় বলে ঠোঁট শুষ্ক হয় ও ফেটে যায়। আকাশপথে ভ্রমণের সময় আপনার সঙ্গে লিপ বাম রাখুন ও ঠোঁট হাইড্রেটেড রাখতে পুরো ফ্লাইটজুড়ে পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

সান প্রোটেকশন ব্যবহার না করা : অন্যতম বড় ভুল হচ্ছে আপনার ঠোঁটকে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা না করা। ঠোঁটের ত্বককে সুস্থ রাখতে ইনডোর ও আউটডোরে থাকাকালীন ইমোলিয়েন্ট ব্যবহার করুন এবং দিনে এসপিএফ ৩০ প্রয়োগ করুন। এছাড়া যেসব লোকের অসুরক্ষিত ঠোঁট সূর্যরশ্মির সংস্পর্শে বেশি আসে, তাদের স্কিন ক্যানসার (ব্যাসাল সেল কার্সিনোমা এবং স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা) হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। মনে রাখবেন, ঠোঁটে প্রি-স্কিন ক্যানসার কমন। ঠোঁটের যে কোনো স্পট অথবা ছাল বা আঁশ ডার্মাটোলজিস্টের দ্বারা মূল্যায়ন করা উচিত।

উষ্ণ ও আরামদায়ক বেডরুম : শীতকালে ঠোঁট ফাটার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ইনডোর হিটিং, কারণ আর্দ্রতা হ্রাস পায়- বিশেষ করে ওয়ার্ম-রেগুলেটেড টেম্পারেচারে রাতে ঘুমানোর সময়। নিশ্চিত হোন রাতের রুটিন হিসেবে আপনার ঠোঁটে লিপ বাম ব্যবহার করেছেন।

হট শাওয়ারের আসক্তি : হট শাওয়ার ত্বকের প্রতিরক্ষামূলক তেল দূর করে এটিকে শুষ্ক, টাইট ও চুলকানিযুক্ত করে। এর পরিবর্তে ত্বকের শুষ্কতা এড়াতে কুসুম কুসুম গরম পানিতে গোসল করতে পারেন।

ওষুধ সেবনে অসতর্কতা : যে ওষুধ মুখ শুষ্ক করতে পারে, সে ওষুধ ঠোঁটকেও শুষ্ক করতে পারে এবং ঠোঁট ফেটে যেতে পারে। ঠোঁট শুষ্ক করতে পারে এমন ওষুধের তালিকা লম্বা, যার মধ্যে অনেক ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ ও প্রেসক্রিপশন ওষুধ রয়েছে, যেমন অ্যান্টি-ডিপ্রেস্যান্ট, অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টি-অ্যানজাইটি, মাসল রিলাক্স্যান্ট ও ব্যথার ওষুধ, মায়ো ক্লিনিক অনুসারে। কোন ওষুধ ঠোঁট শুষ্ক করে তা আপনার চিকিৎসক থেকে জেনে নিন। প্রয়োজনে তিনি আপনাকে ময়েশ্চারাইজিং লিপ বাম ব্যবহার করতে পরামর্শ দিতে পারেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!