• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে কতোটা প্রভাব ফেলবে ‘ফণী’


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২, ২০১৯, ১০:৩৪ পিএম
রাজধানীতে কতোটা প্রভাব ফেলবে ‘ফণী’

ঢাকা: ভয়ংকর আকার ধারণ করা ঘূর্ণিঝড় ফণী বর্তমানে মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ফণী নিয়ে আলোচনায় পুরো দেশ। ফণীর প্রভাবে রাজধানীর অবস্থা কেমন থাকবে এমন প্রশ্নে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামছুদ্দীন আহমদ জানান, শুক্রবার (৩ মে) রাতে ফণী বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এ সময় ঘূর্ণিঝড় ফণীর বাতাসের গতিবেগ ৯০-১০০ কিলোমিটার থাকতে পারে। আর রাজধানী ঢাকায় আকাশ থাকবে মেঘলা। বৃষ্টিও হতে পারে। তবে ঢাকা শহরের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। দেশের উত্তরাঞ্চলে রংপুর বিভাগে একটু ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।

শামছুদ্দীন আহমদ জানান, ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি,বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এদিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৩ মে (শুক্রবার) সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হতে পারে বলেও জানানো হয়।

এছাড়াও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাত নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ। ইতোমধ্যেই উত্তর বঙ্গোপসাগরে ও সাগরে অবস্থারত সকল অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।

তবে ইতোমধ্যেই প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে ভারতের দিকে অগ্রসর হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেল থেকেই ভারতে ফণীর তাণ্ডব শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশায় শুরু হয়েছে ভারী বর্ষণ। অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে এলাকায় তীব্র বৃষ্টিসহ বাতাসের গতিবেগ ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে সৃষ্ট তীব্র হাওয়া এবং বৃষ্টিপাতে অন্ধ্রপ্রদেশের রাস্তার পাশে থাকা বৈদ্যুতিক পোল ও গাছ-পালা উপড়ে গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনসহ স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছে। প্রাণ বাঁচাতে এলাকা ত্যাগ করছে স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্ধ্রপ্রদেশের কাকদ্বীপের উপকূলীয় থানায় উচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

এদিকে দেশটির আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালেও ফণী ওড়িশার পুরী উপকূল থেকে মাত্র ৪০০ কিলোমিটার দূরে ছিল। ওড়িশা সরকার ইতোমধ্যে উপকূল এলাকা থেকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। তবে সরকার মোট সাড়ে ১১ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করেছে। চালু করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৫২টি ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র। বাতিল হয়েছে ১০৩টি ট্রেন।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অস্বাভাবিক আকার ধারণ করে বঙ্গোপসাগরের গভীরে প্রবল শক্তি সঞ্চয় করছে মহাপরাক্রমশালী এই ঘূর্ণিঝড়। ১৯৭৬ সালের পর এতো শক্তিশালী ঝড়ের মুখোমুখি হয়নি এই ভারতীয় উপমহাদেশ। ফলে ৪৩ বছরের মধ্যে এটিই সবচাইতে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। যার তাণ্ডবে ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই অঞ্চল।

ভীতি সঞ্চার করা ফণী শুক্রবার (৩ মে) পুরো শক্তি নিয়ে ভারতের ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার ঘণ্টায় গতিবেগ হবে প্রায় ২০৫ কিলোমিটার। ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাতের পর কিছুটা দুর্বল হয়ে ৪ মে (শনিবার) বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে ফণী।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!