ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ১৩ দিন বাকি। সারাদেশ এখন নির্বাচনী প্রচারণায় সরগরম। এরই মধ্যে নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশস্থ ভারতীয় দূতাবাস।
সমঝোতার মূল উদ্দেশ্য হলো- একটি রাজনৈতিক দল বিজয়ী হলে, তারা যেন অন্যদলের উপর প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা না নেয়। রাজনৈতিক সমঝোতা এবং সৌহার্দ্যের এক পরিবেশ যেন সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, বিএনপিকে অনুরোধ করা হয়েছে তারা যেন নির্বাচন থেকে সরে না যায়। নির্বাচনে থাকলে পরাজিত হলেও বিএনপি অনেক কিছু পাবে বলে আশ্বস্ত করা হচ্ছে। বিএনপি যদি নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল হিসেবেও আবির্ভূত হয় তবুও তারা যা পাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে।
সেগুলো হচ্ছে- নির্বাচনের পরপরই বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত জামিনের ব্যবস্থা করা হবে, নতুন মামলাগুলো ধীরগতিতে চলবে বা বন্ধ রাখা হবে, বিএনপির নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর ব্যাপারে সরকার পুনঃমূল্যায়ন করবে, বেশকিছু মামলা সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যাহার করা হবে, নাশকতা ও সন্ত্রাসের অভিযোগে গ্রেপ্তার বিএনপি নেতাদের দ্রুতত মুক্তির ব্যবস্থা করা হবে, বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর কোন ধরনের বিধি নিষেধ থাকলে তা তুলে নেওয়া হবে ইত্যাদি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এছাড়াও আরো কিছু বিষয় নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হলেও কি কি করা উচিত তা নিয়েও আলোচনা চলছে।
বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট যদি নির্বাচনে জয়ী হয় সেক্ষেত্রে তাদের যা করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে- প্রতিপক্ষের উপর সহিংসতা বা কোন রকমের প্রতিহিংসা করা যাবে না; যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতা বিরোধী দল বা ব্যক্তির কাউকে মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না; জিয়া পরিবারের বিতর্কিত ব্যক্তিদের সরকারে আনা যাবে না; আইনী প্রক্রিয়ার বাইরে বেগম জিয়া বা তারেক জিয়ার মামলা নিষ্পত্তি করা যাবে না ইত্যাদি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ভারত বাংলাদেশে কোনো ‘পাতানো’ বা ‘নির্ধারিত’ নির্বাচন চায় না। তবে নির্বাচনের পর যেন রাজনৈতিক পরিস্থিতি অসহিষ্ণু না হয়ে ওঠে সেজন্য এখন থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলছে ভারত। তারা চায় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে সম্পর্কের সূচনা হয়েছে সেটা অব্যাহত থাকুক। আর এটা অব্যাহত রাখার জন্য প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা থাকা জরুরি।
নির্বাচনে যারাই বিজয়ী হোক, গণতন্ত্র আইনের শাসন এবং মানবাধিকার যেন অক্ষুণ্ন থাকে সেটা নিশ্চিত করাই জরুরি। ভারতীয় দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘নির্বাচন পরবর্তী অস্থিরতা গণতন্ত্রের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ দরকার।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :