• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজবাড়ীতে অজানা রোগে আক্রান্ত দুই ভাই


আল-মামুন আরজু, রাজবাড়ী আগস্ট ৩০, ২০১৮, ০১:৫৮ পিএম
রাজবাড়ীতে অজানা রোগে আক্রান্ত দুই ভাই

রাজবাড়ী: অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দুই ভাই হৃদয় ও অন্তর। নিঃশ্ব বাবা মা দেখছে আর নিরবে চোখের পানি ফেলছে। এমন ঘটনার সন্ধান মিলেছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের কাজীবাধা গ্রামের ভ্যান চালক মোঃ আবু তাহের ও মোছাঃ বিউটি আক্তারের পরিবারে।

জানা গেছে- আবু তাহের ও বিউটি দম্পতির ঘর আলোকিত করে ২০০১ সালে জন্ম নেয় ১ম সন্তান, আদর করে নাম রেখেছিল হৃদয়। ২০০৭ সালে জন্ম নেয় ২য় সন্তান তার নাম রাখা হয় অন্তর।

হৃদয় আর অন্তরের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ২০০৭ সালে নিজের জমানো টাকা ও আত্মীয় স্বজনের সহযোগিতায় দুবাই শহরে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে গমন করেন আবু তাহের। ভালোই চলছিল তাদের সংসার।

২০১৩ সালে হঠাৎ বড় ছেলে হৃদয় অজানা রোগে আক্রান্ত খবর পেয়ে দেশে  ফিরে আসেন আবু তাহের। সেই থেকে হৃদয়কে সুস্থ্য করতে আবু তাহের নিজের জমানো ১৫ লক্ষ টাকা ডাক্তারদের পিছে ব্যায় করেন।

জীবন যুদ্ধে হেরে গিয়ে আজ মাত্র ৪ শতাংশ জমির উপর ৬ খানা টিনের ছাপরায় অসুস্থ্য অন্তর, হৃদয়, স্ত্রী বিউটিকে নিয়ে বসবাস করছেন তারা।

হৃদয় ও অন্তরের মা মোছাঃ বিউটি আক্তার বলেন, পাঁচ বছর আগে বড় ছেলে হৃদয় সময় অসময় মাথা ব্যথা ও  বমি করতো এক সময় দেখলাম বমি করতে করতে অজ্ঞান হয়ে যেত। মাথায় পানি ঢালতে ঢালতে এক সময় জ্ঞান ফিরে পেত।

বাব বার রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ডাক্তার দেখিয়ে কোন উপকার না হওয়ায় ডাঃ এম এ গফুরকে দেখানো হয় সেখানেও কোন উপকার না হওয়ায় ঢাকায় নিউরোলোজি সার্জিকেল ডাক্তার মোঃ জাহিদ রায়হানের চিকিৎসা নেওয়া হয়, সেখানেও কোন উপকার না পেয়ে ঢাকায় বি সি এস স্বাস্থ্য ডাঃ এম এ মালেক ডাঃ রন্জিৎ সরকার  সহ কয়েকজন ডাক্তারের দেখানো হয়, আর কত প্রকারের যে টেষ্ট করেছি তার কোন হিসাব নাই,  কোন উপকার হয়নি । আজ আমার হৃদয় চোখে দেখেনা, দুই হাত পা অবস,কানে শোনে না, উপরন্ত ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত। আজ মরার উপর খারার ঘা হয়ে দারিয়েছে আমার অন্তরও একই রোগে আক্রান্ত।

অন্তর কাজীবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র। হৃদয় ও অন্তরের বাবা মা এই প্রতিবেদককে আবেগভরা কন্ঠে ছলছল চোখে বলেন- আমরা আজ নিঃশ্ব। আদরের সন্তানদের মৃত্যু প্রহর গোনা ছারা কোন উপায় নেই।

৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র অন্তর বলেন- আমি বাঁচতে চাই, আমি লেখাপড়া করতে চাই।

স্থানীয় মুদি দোকানদার মস্তফা মিয়া বলেন- গ্রামের আর পাঁচটা ছেলে মেয়ের মত এক সময় হৃদয় ও অন্তরও আমার দোকান থেকে পাওরুটি, কলা, চিপস, কিনতে আসতো আজ ওরা মৃত্যু পথযাত্রী ওদের জন্য কষ্ট হয়।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ পিনু বলেন আমারা সিমিত সামর্থের মধ্যে যতটুক পেরেছি সহযোগিতা করেছি তবে আমাদের মত সিমিত সামর্থ্যর মানুষের সহযোগিতায় হৃদয় ও অন্তরের কোন উপকার হবেনা বরং রাষ্ট্র ও সামর্থবান মানুষদের সহযোগিতা পেলেই অন্তত হৃদয় ও অন্তর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারে।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ আলী আহসান তুহিন বলেন, আমি রোগিকে দেখি নাই আর যে সমস্ত ডাক্তারদের ব্যাবস্থাপত্র দেখলাম তাতে বিভিন্ন ঔষুধ লেখা থাকলেও কোন রোগের নাম লেখা নাই বিধায় আমি এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে পারিনা।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!